উল্লাস শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের ছবি: টুইটার
গলে দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালীন দেখা গেল, মাথায় হেলমেট পরে গ্যালারিতে ঢুকছেন দু’জন। মাঠের বাইরেও দাঁড় করানো রয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। খেলা দেখতে যাওয়ার আনন্দ, উত্তেজনা হয়তো ভুলিয়ে দিয়েছে আকাশছোঁয়া বাজারের কথা। প্রতি লিটার পেট্রলের দাম শ্রীলঙ্কার টাকায় ৪৫০-এ পৌঁছেছে, ভুলে গিয়েছেন সিংহলীরা। ক্রিকেটে মেতেছেন তাঁরা। দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ২৪৬ রানে শ্রীলঙ্কা হারাতে উন্মাদনা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
হাজারো সমস্যার মধ্যেও দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, দীনেশ চন্ডীমলরা। ক্রিকেটের হাত ধরে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছেন দ্বীপরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। চন্ডীমলরা সিরিজে সমতা ফেরাতেই দেখা গিয়েছে, কেউ আনন্দে নাচছেন, কোথাও বাজছে ড্রাম। সঙ্কট ভুলে উল্লাস করছেন তাঁরা।
শ্রীলঙ্কার সামনে প্রথম টেস্টে জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু পারেননি। দ্বিতীয় টেস্টে কোনও ভুল করেননি তাঁরা। ব্যাটে-বলে বাবর আজমদের মাটি ধরিয়ে দিয়েছেন। সহজে ম্যাচ জিতেছেন। ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মতো বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটও। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় সেই ক্রিকেটকেও বেশ খানিকটা অক্সিজেন দিল।
গলে পঞ্চম দিনে ম্যাচ জিততে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৪১৯ রান। হাতে ছিল ৯ উইকেট। ঘূর্ণি উইকেটে এই রান করা প্রায় অসম্ভব ছিল। কিন্তু ড্রয়ের সুযোগ ছিল। একটা সময় বাবর ও রিজওয়ানের খেলায় সেই সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা সত্যি হতে দেননি শ্রীলঙ্কার বোলাররা। পাকিস্তানের হয়ে বাবর সর্বোচ্চ ৮১ রান করেন। ২৬১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রভাত জয়সূর্য ৫ ও রমেশ মেন্ডিস ৪ উইকেট নেন।
এই সিরিজে নতুন এক বোলারের জন্ম হল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে। প্রভাত জয়সূর্য। মাত্র দ্বিতীয় সিরিজ খেলছেন। সেখানেই সিরিজের সেরার পুরস্কার জিতলেন। মুথাইয়া মুরলীধরণ, রঙ্গনা হেরাথদের পরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে ফের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এক তরুণ স্পিনার। তাঁর বাঁ হাতের ভেল্কি মাটি ধরিয়েছে বাবরদের। ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুখ করুণারত্নের মুখেও তাই শোনা গিয়েছে প্রভাতের প্রশংসা। বলেছেন, ‘‘আমি ওর সঙ্গে আগে খেলেছি। জানি ওর ক্ষমতা কতটা। সেটা ও মাঠে করে দেখিয়েছে।’’