শতরানের পরে উল্লাস ডিন এলগারের। ছবি: রয়টার্স
ভারতীয় ইনিংসে লোকেশ রাহুল যে কাজটা করেছিলেন ঠিক সেই কাজটাই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে করলেন ডিন এলগার। এক দিকে ধরে থাকলেন তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন। বিদায়ী সিরিজ়ে আরও এক বার নিজের জাত চেনালেন এলগার। চা বিরতির আগেই শতরান করলেন তিনি। তাঁর ব্যাটে ভাল জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দিনই ভারতের থেকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা। মহম্মদ শামির অভাব টের পাচ্ছে ভারত। যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজ ভাল বল করলেও বাকিরা সেটা করতে পারলেন না।
৮ উইকেটে ২০৮ রান থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারত। সেই সময় ৭০ রানে ব্যাট করছিলেন রাহুল। সঙ্গে ছিলেন সিরাজ। মেঘলা আবহাওয়ায় দ্রুত রান তোলা সহজ ছিল না। কাগিসো রাবাডা প্রথম দিনের ছন্দেই বল করছিলেন। তাই বাকি বোলারদের বিরুদ্ধে রান করার পরিকল্পনা করেন রাহুল। সেই মতো খেলছিলেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন সিরাজ।
৮৯ রান থেকে ছক্কা মেরে ৯৫ রানে পৌঁছন রাহুল। দেখে মনে হচ্ছিল পরের ওভারেই তাঁর শতরান হয়ে যাবে। কিন্তু সেই ওভারেই আউট হয়ে যান সিরাজ। বাকি ছিলেন একমাত্র প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। কোনও রকমে নিজের প্রান্ত ধরে রাখেন তিনি। সেই ওভারের শেষ বলে ছক্কা মেরে শতরান করেন রাহুল। টেস্টে এটি তাঁর অষ্টম শতরান। আগের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও এই মাঠেই শতরান করেছিলেন রাহুল। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন তিনি। ১০০ রানের মধ্যে ৮০ রানই এসেছে বাউন্ডারিতে। ১৪টি চার ও চারটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। পরের ওভারে আবার বড় শট মারতে গিয়ে আউট রাহুল। ১০১ রানে ফেরেন তিনি। সেই সঙ্গে ২৪৫ রানে ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায়।
ভারতের ইনিংস দেখে মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের পক্ষেও এই পিচে রান করা সহজ হবে না। বুমরা ও সিরাজ শুরুটাও করেছিলেন সে ভাবে। দুই ওপেনারই খেলতে সমস্যায় পড়ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ধাক্কা দেন এডেন মার্করাম। ৫ রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন সিরাজ। কিন্তু তার পরেই উইকেটের এক দিকে দাঁড়িয়ে যান এলগার।
তাঁকে সঙ্গ দেন টনি ডি’জর্জি। দু’জনে মিলে দ্রুত রান তুলছিলেন। ভারতের তৃতীয় ও চতুর্থ পেসার হিসাবে শার্দূল ঠাকুর ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ দাগ কাটতে পারলেন না। উইকেট নেওয়া তো দূর, যে চাপ বুমরা ও সিরাজ রেখেছিলেন তা আলগা হয়ে যায়। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন এলগার ও ডি’জর্জি। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে আর উইকেট পড়েনি।
দুই ব্যাটারের মধ্যে ৯৫ রানের জুটি হয়। শেষ পর্যন্ত সেই জুটি ভাঙেন বুমরা। ২৮ রানে আউট হন ডি’জর্জি। রান পাননি কিগান পিটারসেন। কিন্তু অভিষেক টেস্টে নেমে ভরসা দিলেন ডেভিড বেডিংহ্যাম। ভয় না পেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন তিনি। চা বিরতির আগেই শতরান পূর্ণ করেন এলগার। ২০টি চার মারেন তিনি। মধ্যাহ্নভোজ থেকে চা বিরতির মাঝে ১৪৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শামি থাকলে এতটা সহজে রান করতে পারত না তারা। তা ছাড়া উইকেট পড়ার সম্ভাবনাও আরও বাড়ত। কিন্তু তা করতে পারলেন না শার্দূল, প্রসিদ্ধরা।
চা বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩ উইকেটে ১৯৪। এলগার ১১৫ ও বেডিংহ্যাম ৩২ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ভারতের থেকে ৫১ রান পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।