সচিন তেন্ডুলকর মানেই ক্রিকেট। ভারতে ক্রিকেট যদি ধর্ম হয়, অনেকের মতে সচিন সেই ধর্মের দেবতা। সেই দেবতার কাছে ক্রিকেট যেমন প্রেম, ভালবাসা, ধ্যান, জ্ঞান, তেমনই সেই দেবতার মনের অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছেন অঞ্জলি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে যে ছেলেটা পাকিস্তানের মাঠে তাঁদের পেসারদের অনায়াসে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছিলেন, সেই সচিনই তাঁর ভালবাসাকে খুঁজে পেয়েছিলেন মুম্বই বিমানবন্দরে।
১৯৯০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সফর শেষ করে দেশে ফিরছেন ১৭ বছরের ছেলেটা। সেই সিরিজেই সচিন তাঁর প্রথম টেস্ট শতরান করেছিলেন। সেই সময় মাকে নিতে বিমানবন্দরে হাজির অঞ্জলি।
প্রথম দেখাতেই একে অপরের জন্য একটা টান অনুভব করেছিলেন। কিন্তু পরিচয় ছিল না। তাঁদের দেখা যেন হওয়ারই ছিল। পরবর্তী সময় তাঁদের পরিচয় হয় এক বন্ধুর বাড়িতে।
অঞ্জলি জানিয়েছিলেন বিমানবন্দরে তিনি যখন সচিনকে দেখেন, সেই সময় তিনি চিনতেন না ভারতীয় ক্রিকেটের ‘বিস্ময়বালক’কে। ভারতের হয়ে শতরান করার পরেও অঞ্জলির কাছে অপরিচিত ছিলেন সচিন।
বয়সে সচিনের থেকে ছ’বছরের বড় অঞ্জলি। ১৯৯০ সালে তাঁদের যখন প্রথম দেখা হয়, এক জন ভারতীয় ক্রিকেটে সবে নিজের দ্যুতি ছড়াতে শুরু করেছেন, অন্য জন ডাক্তারির ছাত্রী।
অঞ্জলি ব্যস্ত থাকতেন পড়াশোনা নিয়েই। ক্রিকেট সম্পর্কে তাঁর ধারণা সেই সময় খুবই কম। অঞ্জলি জানিয়েছেন, সেটাই ছিল সচিনের তাঁর প্রতি আকর্ষণের মূল কারণ। সচিনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর ক্রিকেট নিয়েও জ্ঞান বাড়াতে শুরু করেন অঞ্জলি।
সচিনের সঙ্গে প্রেম-পর্ব চলার সময় এক বার সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে আরও কিছু বন্ধুরা ছিলেন। সচিন সেই সময় ভারতীয় ক্রিকেটের জনপ্রিয় মুখ। সেই মুখ ঢাকতে সচিন পরেছিলেন চশমা এবং গালে নকল দাড়ি লাগিয়েছিলেন। সিনেমার মাঝে বিরতিতে হঠাৎ চশমা খুলে যায়। তাঁকে চিনে ফেলেন অনেকে। মাঝপথেই সিনেমা ছেড়ে বার হয়ে যেতে হয় তাঁদের।
পাঁচ বছর প্রেম করার পর ১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন সচিন এবং অঞ্জলি। এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জলি বলেন, “সচিন ছাড়া আর কাউকেই আমি চিনি না। ওকে আমি খুব ভাল বুঝতে পারি। আমি সচিনের প্রেমিকা হই বা স্ত্রী, ওর সঙ্গে সম্পর্কটা একই থেকে গিয়েছে।”
অবসরের পর বান্দ্রার বাড়িতে থাকেন তাঁরা। সঙ্গে ছেলে অর্জুন এবং মেয়ে সারা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলে রয়েছেন অর্জুন।