শ্রেয়স আয়ার।
সিরিজ় জেতা ছিল আগের ম্যাচেই। সেখানে শেষ ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে রবিবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ফলটা ৪-১ করে দিল সূর্যকুমার যাদবের টিম ইন্ডিয়া। তাও টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৬০ তুলে।
অসম্ভবকে সম্ভব করল শ্রেয়স আয়ারের ব্যাট। কম গেলেন না অক্ষর পটেল। বল হাতেও সেরাটা দিলেন অভিজ্ঞ স্পিনার। পাশে পেলেন তরুণ রবি বিষ্ণোইকে।
ম্যাচ শেষ তৃপ্ত ভারত অধিনায়ককে বলতে শোনা গেল, ‘‘দারুণ কাটল সিরিজ়টা। কাটল প্রথম দিন থেকেই। দু’টি ভাবনা মাথায় রেখে খেলেছি আমরা। একটা, কখনও ভয় পাব না। সঙ্গে প্রত্যেকে নিজেদের খেলা উপভোগ করব।’’
সূর্যকুমার যোগ করেন, ‘‘এমনিতে এই ম্যাচটাও জিততে পেরে খুশি হয়েছি। চিন্নাস্বামীতে অনেক ম্যাচ দেখেছি। এখানে ১৬০-১৭৫ তুললেও যে কেউ ম্যাচ জিতে যেতে পারে। সেখানে আমরাই শেষ হাসি হেসেছি।’’
চিন্নাস্বামীতে রবিবার আর একটু হলে কিন্তু পেসার আরশদীপ সিংহ সমা্লোচনার মুখে পড়ছিলেন। সেটা হয়নি শুধুই তাঁর এবং ম্যাচের শেষ ওভারের সৌজন্যে। পরিসংখ্যান বলছে, তিনি ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়েছেন। প্রতি ওভারে ১০। পাশাপাশি ঘটনা, নির্ণায়ক শেষ ওভারে তিনি দিলেন মাত্র ৩ রান। বলা ভাল, এই একটা ওভারই ম্যাচ উপহার দিল ভারতকে।
যা নিয়ে অকপট আরশদীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সত্যিই প্রথম দিকে বড্ড রান দিয়ে ফেলেছিলাম। ভাল লাগল তার পরেও গুরুত্বপূর্ণ ওভারটা করার সুযোগ পেয়ে। যেটা আমার কাছেও ছিল পরীক্ষা। তবে সেই মুহূর্তে বিশেষ কোনও ভাবনা মাথায় রাখিনি। সূর্যভাই বলে যায়, কিচ্ছু না ভেবে যেন নিজের বলটা করি। তাতে যা হয় হবে।’’
আরশদীপের সংযোজন, ‘‘তবে কৃতিত্ব আমার একার নয়। ব্যাটসম্যানদেরও। ভারতীয় বোলিংয়ের যে মাপকাঠি তৈরি হয়েছে, সেই অনুযায়ী বল করতে পারিনি। তবে অনেক কিছু শিখলাম সিরিজ়ে। কথা দিচ্ছি, সব ভুল শুধরে দারুণ ভাবে ফিরব।’’
শেষ ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের অনেকেই ব্যর্থ হলেও ভারতীয় ইনিংস ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছয় শ্রেয়সের জন্য। তাঁর কথা, ‘‘প্রত্যেকে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। ভুল হতে পারে। তারপরেও প্রত্যেকে নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। সেই অনুযায়ী শট খেলেছে। আমি ওদের দলেই নিজেকে রাখছি। তবে ম্যাচের আগে নিজের ইচ্ছে ছিল, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের। কিন্তু যখন নামলাম, আমাদের তিন উইকেট পড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া বল ঠিকঠাক ব্যাটেও আসছিল না। তখনই বুঝে যাই, ১৬০ রানের মতো করলেও চলবে। দেখা গেল ঠিকই ভেবেছিলাম।’’
সব অর্থেই এই সিরিজ়ে নজর কাড়ছিলেন বিষ্ণোই। রবিবারও ব্যতিক্রম হয়নি। অক্ষরের সঙ্গে তিনিই অস্ট্রেলিয়ার রান তোলার গতি থামিয়ে দেন। কেমন তাঁর নিজের এই সিরিজ়ের অভিজ্ঞতা? তরুণ লেগস্পিনারের কথা, ‘‘প্রথম ম্যাচটায় ভাল কিছু করতে পারিনি। তবে আগাগোড়া নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী বলটা করেছি। বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে। আমার পরিকল্পনা খুবই সহজ-সরল ছিল। ঠিকঠাক স্টাম্পে বল করে যাওয়া ছাড়া অন্য বিশেষ কিছু ভাবিনি। তবে বল করতে করতে দেখলাম একটু শর্ট অব লেংথ-এ বলটা রাখলে ব্যাটসম্যানরা সাবলীল ভাবে স্ট্রোক খেলতে পারছে না।’’
এখানেই থামেননি বিষ্ণোই। আরও বলেছেন, ‘‘সামনের দিকে তাকাচ্ছি। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এই ছন্দটা ধরে রাখার চেষ্টা করব। ওখানেও আমার মন্ত্র হবে ব্যাটসম্যানদের আক্রমণ করা। রক্ষণাত্মক বোলিং কোনও কালে আমার পছন্দ নয়।’’
পরাজিত অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের আফসোস বোলাররা মাত্র ১৬০ রানে বিপক্ষকে আটকে দিলেও সেই তাড়া করে ম্যাচ জিততে না পেরে, ‘‘আমি খুবই হতাশ।’’