এ দিন রোহিত শর্মা অল্প সময়ের জন্য মাঠের বাইরে যাওয়ায় অধিনায়কত্ব করেন যশপ্রীত বুমরা। যা নিয়ে মজা করে শ্রেয়স বলেন, ‘‘আমি তো বুমরাকে ঘুষ দিতে চেয়েছিলাম একটা ওভার বল পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই চেষ্টা কাজে এল না!’’
আগ্রাসী: তিন নম্বরে নেমে ঝড় তুললেন শ্রেয়স। ছবি বিসিসিআই।
লখনউয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নামার আগে শ্রেয়স আয়ার জানিয়েছিলেন, তিন নম্বর জায়গাটাই তাঁর প্রিয়। দেখা গেল, সেই পছন্দের জায়গায় নেমে বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গেলেন শ্রেয়স। করলেন ২৮ বলে অপরাজিত ৫৭। ইনিংসে রয়েছে পাঁচটা চার, দু’টো ছয়।
ম্যাচের আগে শ্রেয়সের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আপনি তিন থেকে শুরু করে নানা জায়গায় ব্যাট করেছেন। কিন্তু তিন নম্বরে ব্যাট করা নিয়ে কী বলবেন? সম্প্রচারকারী চ্যানেলে শ্রেয়স বলেন, ‘‘তিন নম্বরে আমি সাবলীল বোধ করি। তিনে খেলেই আমি বড় হয়ে উঠেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তিন নম্বরে নামার মানে হল, ওপেনার যদি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায়, তা হলে আপনাকে ওপেনারের ভূমিকাটাই পালন করতে হয়। তা ছাড়াও আপনার হাতে সময় থাকে উইকেটে জমে যাওয়ার। আর পরের দিকে দ্রুত রান তোলার। ম্যাচটা শেষ করে আসার সুযোগও থাকে আপনার সামনে। তাই ওই নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার।’’ তবে শ্রেয়স এও বলতে ভোলেননি, ‘‘ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আমি সব সময় নমনীয়। দলের জন্য যে কোনও জায়গায় খেলতে তৈরি।’’
এ দিন ম্যাচের পরে নিজের বিধ্বংসী ইনিংস নিয়ে শ্রেয়স বলে যান, ‘‘আমি চেষ্টা করছিলাম, টাইমিং ঠিক রাখার। বড় মাঠ বলে দু’রান নেওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম বেশি।’’ এ দিন রোহিত শর্মা অল্প সময়ের জন্য মাঠের বাইরে যাওয়ায় অধিনায়কত্ব করেন যশপ্রীত বুমরা। যা নিয়ে মজা করে শ্রেয়স বলেন, ‘‘আমি তো বুমরাকে ঘুষ দিতে চেয়েছিলাম একটা ওভার বল পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই চেষ্টা কাজে এল না!’’
এ দিন রেকর্ড বইয়ে নাম উঠে গেল রোহিতের। ৪৪ রান করার পথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় শীর্ষে চলে এলেন ভারত অধিনায়ক। পিছনে ফেলে দিলেন বিরাট কোহলি (৩২৯৬) এবং মার্টিন গাপ্টিলকে (৩২৯৯)। ১২৩ ম্যাচে রোহিতের সংগ্রহ ৩৩০৭। লেগস্পিনার যুজ়বেন্দ্র চহালও এ দিন একটি নজির গড়ে ফেললেন। যশপ্রীত বুমরাকে পিছনে ফেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তিনি হয়ে গেলেন ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। চহালের শিকার সংখ্যা ৬৭।
লখনউয়ের পরে ম্যাচ এ বার ধর্মশালায়। যেখানে চার বছর আগে অভিষেক হয়েছিল শ্রেয়সের। এই ক’বছরে নিজের ব্যাটিংয়ে কী পরিবর্তন এনেছেন তিনি? শ্রেয়স বলেছেন, ‘‘প্রথম যখন আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসি, তখন খুবই চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করতে চাইতাম। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের আবেগকে প্রাধান্য দিতাম। তবে এখন আমার মানসিকতাটা বদলে গিয়েছে। আমি অনেক শান্ত এবং ঠান্ডা মাথার ক্রিকেটার হয়ে উঠেছি। যা আমাকে ইনিংস গড়তে সাহায্য করছে।’’ যোগ করেন, ‘‘এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে আপনি কীসে ভাল আর কীসে খারাপ, তা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন হয় না। আপনাকে খোলা মনে খেলতে হয়। যেখানে প্রথম বল থেকেই আপনি বড় শট মারতে পারবেন।’’ শ্রেয়সের কাছে জানতে চাওয়া হয়, লেগস্পিনের বিরুদ্ধে আপনি এত সাবলীল ব্যাটিং করেন কী করে? লেগস্পিনার বল করতে এলেই আপনি আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। শ্রেয়সের জবাব, ‘‘লেগস্পিনাররা সাধারণত আপনার চোখের একটু ওপর থেকে বলটাকে ভাসিয়ে দেয়। আর সেই ধরনের বল দেখলেই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হয় শট খেলার। নেটেও আমি এই ভাবে অনুশীলন করি।’’
তবে শ্রেয়স এটাও বলছেন, তাঁর শট বাছাইটা পরিস্থিতি আর বলের উপরেও নির্ভর করে থাকে। শ্রেয়সের কথায়, ‘‘যদি দেখি বলটা মারার মতো নয় আর সেই সময় ইনিংস গড়ার কাজ করতে হচ্ছে, তবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করি। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলি।’’ এর পরেই অবশ্য হেসে বলে ফেললেন, ‘‘তবে লেগস্পিনার লেগস্পিনারই। যে কোনও দিন আমি ওদের বিরুদ্ধে শট খেলতে তৈরি।’’