শাকিব আল হাসান। —ফাইল চিত্র।
তামিম ইকবালের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসানের উপর দায় চাপালেন শাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাকিবের দাবি, ক্রিকেটীয় বিষয় ছাড়া বাকি ব্যাপারে উৎসাহ বেশি বিসিবি সভাপতির।
তামিম-শাকিব দ্বন্দ্ব নতুন নয়। বেশ কিছু দিন ধরেই বাংলাদেশের দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের সম্পর্ক শীতল। গত এক দিনের বিশ্বকাপের আগে থেকে তাঁদের দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা শোনা গিয়েছে। শাকিব অধিনায়ক হলে নাকি তামিম খেলতে চান না। আবার অধিনায়ক শাকিবও নাকি তামিমকে দলে চাইতেন না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝে তামিমের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন শাকিব।
বাংলাদেশের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘এই বিষয়টা নিয়ে পাপন ভাই (নাজমুলের ডাক নাম) কথা বলার পর সবার নজরে এসেছিল। আমাদের সম্পর্কে নানা রকম সমস্যা তৈরি হয় তার পর থেকে। ক্রিকেট সংক্রান্ত আলোচনার বদলে আমাদের দু’জনের সম্পর্কই বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে।’’ তামিমের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে শাকিব বলেছেন, ‘‘একটা দীর্ঘ সময় আমাদের মধ্যে খুব বেশি কথা হত না। তার মনে আমরা একদমই কথা বলতাম না, তেমন নয়। আবার একটা সময় ছিল, যখন আমরা সব সময় এক সঙ্গে থাকতাম। দু’জন মানুষের সম্পর্ক সব সময় এক রকম থাকে না। এটা খুব স্বাভাবিক। আমার এবং ওর বিয়ে হওয়ার পর আমরা আলাদা আলাদা জায়গায় থাকতে শুরু করি। ফলে আমরা এক সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পেতাম না। আগে আসলে আমরা একই বাড়িতে থাকতাম আলাদা আলাদা তলায়। স্বভাবতই আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। দু’জনেই সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করার পর এবং ক্রিকেটীয় ব্যস্ততা বৃদ্ধির ফলে যোগাযোগ আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে।’’ শাকিব আরও বলেছেন, ‘‘যোগাযোগ কমে যাওয়ার কারণেই কথা কম হত। তবে মাঠে বা অনুশীলনে আমরা যথেষ্ট কথা বলতাম। কোথাও দেখা হলেও কথা হত। প্রয়োজন হলেই আমরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতাম। আমার মনে হয় না সে সময় তার থেকে বেশি কথা বলার সুযোগ আমাদের ছিল।’’
শাকিব মনে করেন না তাঁর সঙ্গে তামিমের বড় কোনও সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘তামিমের সঙ্গে এমন কিছুই হয়নি, যাতে সম্পর্ক ভাল বা খারাপ হতে পারে। আমরা এখনও এক সঙ্গে খেললে এক সাজঘরেই সময় কাটাই। আমাদের মধ্যে এমন কিছু হয়নি, যা দলের জন্য ক্ষতিকর। আমরা দু’জনে সব সময় চেষ্টা করেছি দলের জন্য অবদান রাখার। তার জন্য আলাদা করে কথা বলার দরকার হয় না আমাদের। মাঠে বা সাজঘরে আমাদের মধ্যে কখনও কোনও সমস্যা হয়নি।’’
শাকিবের দাবি, তাঁর সঙ্গে তামিমের সম্পর্ক নিয়ে অকারণ জলঘোলা করা হয়েছে একটা সময়ের পর থেকে। বিসিবি সভাপতি বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা না বললে, এত আলোচনাও হত না। তাঁর কিছু মন্তব্যের জন্য বিষয়টি জটিল হয়েছে বলে মনে করেন শাকিব। অক্রিকেটীয় ব্যাপারে বিসিবি সভাপতির আগ্রহ নিয়েও অসন্তুষ্ট বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, নাজমুলের অতিসক্রিয়তার জন্যই শাকিব-তামিম দ্বন্দ্বের খবর উঠে এসেছিল আকর্ষণের কেন্দ্রে। উল্লেখ্য, নাজমুল এখন বাংলাদেশের ক্রীড়ামন্ত্রী।