স্মরণীয়: টসের সময় দুই অধিনায়ক বুমরা ও স্টোকস।
এজবাস্টনে ঋষভ পন্থের শুক্রবার অনবদ্য সেঞ্চুরি দেখে মোহিত কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর। তিনি গণমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর ইনিংস।’’
১১১ বলে ১৪৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে পন্থ মেরেছেন চারটি ছয় এবং ২০টি চার। সঙ্গে রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২২২ রান, যা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ডও।
সেখানেই শেষ নয়। পন্থ ম্লান করে দিয়েছেন তাঁর পূর্বসুরি মহেন্দ্র সিংহ ধোনির টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তিও। ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফয়জালাবাদে ৯৩ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এ দিন পন্থ সেঞ্চুরি করেন ৮৯ বলে। তাঁর প্রথম ৫০ রান আসে ৫৩ বলে।
মুগ্ধ সচিন টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এককথায় বিস্ময়কর ইনিংস। দারুণ খেলেছ।’’ সচিন প্রশংসা করেছেন জাডেজারও। লিখেছেন, ‘‘খুবই সময়োপযোগী ইনিংস উপহার দিয়েছে জাডেজা। ও খুব সুন্দর ভাবে স্ট্রাইক রোটেট করেছে। কয়েকটা শট তো ছিল চোখধাঁধানো।’’
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের ৩৬তম অধিনায়ক হিসেবে শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টস করতে গিয়েছিলেন পেসার যশপ্রীত বুমরা। বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মার করোনা সংক্রমণ হওয়ায় তিনিই এই মুহূর্তে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারত বনাম ইংল্যান্ডের অমীমাংসিত পঞ্চম টেস্টে। তবে তাঁকে যে দীর্ঘ মেয়াদি অধিনায়ক হিসেবে এই মুহূর্তে ভাবা হচ্ছে না, তা দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের কথাতেই প্রকাশ। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, অধিনায়ক বুমরার চেয়েও ম্যাচ জেতানো পেসার হিসেবে বুমরাকে চান তাঁরা।
কপিল দেবের পরে বুমরাই দ্বিতীয় পেসার যিনি অধিনায়ক হিসেবে ভারতীয় দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। রোহিত শর্মা এজবাস্টনে খেলতে পারবেন না জানার পরে বুমরাকে অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে দ্রাবিড় বলেন, ‘‘তোমাকে বোলার হিসেবেই বেশি করে চাই অধিনায়কের চেয়ে।’’ এ দিন ম্যাচের সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারেবুমরা বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে বুমরার সঙ্গে অনেক বার কথা হয়েছে। ওকে শান্ত মাথায় খেলার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। বলা হলে অধিনায়ক বুমরার চেয়েও ম্যাচ জেতানো পেসার বুমরাকে চাই আমাদের। যোগ করেছেন, ‘‘বুমরা খুব বিচক্ষণ ক্রিকেটার। খেলার উপরে দখল অগাধ। এ ছাড়াও দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতাও রয়েছে ওর।’’
যাঁকে নিয়ে এত কথা সেই বুমরা টস করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘‘দারুণ লাগছে। এর চেয়ে ভাল প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে না। এর চেয়ে ভাল মুহূর্ত আর কিছুই হতে পারে না।’’ যোগ করেন, ‘‘আমাদের প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। এ বার ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’’উল্লেখ্য, পেসার-অধিনায়ক হিসেবে এর আগে একমাত্র ভারতের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কপিল দেব। কিন্তু ১৯৮৭ সালে তিনি নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরে আর কোনওপেসার ভারতের অধিনায়ক হননি। এ বার বুমরা দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সেই নজির স্পর্শ করলেন। দ্রাবিড় বলেছেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে বোলিং, ফিল্ডিং পরিবর্তন হয়। বুমরার কাছে এটা নতুন পরীক্ষা। একজন পেসারের পক্ষে অধিনায়কত্ব করা সহজ কাজ নয়। কারণ তাঁকে নিজের বোলিং নিয়েও ভাবতে হয়।একজন অধিনায়ক খেলতে খেলতেই পরিণত হন।’’
নিজের পেসারদের প্রশংসা করে দ্রাবিড় বলেন, ‘‘ইংল্যান্ডের ব্যাটিং নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। যদিও আমাদের পেস বোলিং শক্তি নিয়ে আমরা গর্বিত। বিশ্বের সর্বত্র আমাদের পেসারেরা পাল্লা দিয়ে খেলে এসেছে। আশা করি, এই পঞ্চম টেস্টেও ভাল করবে। আমরা তাই বিপক্ষ নিয়ে নয়। নিজেদের নিয়েই ভাবছি।’’