টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে বিরাট কোহলির নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। যার পর থেকেই ক্ষুব্ধ বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। এ বার মুখ খুললেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রীও। তিনি জানিয়েছেন, সীমিত ওভারের অধিনায়কত্ব চলে যাওয়ায় বিরাটের ভালই হয়েছে। তিনি আরও ভাল করে নিজের ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করতে পারবেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছাড়তে চলেছেন, তা জানিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট। বিশ্বকাপের পরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট দল নির্বাচনের দেড় ঘণ্টা আগে ওয়ান ডে নেতৃত্ব থেকেও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সরিয়ে দেয় বিরাটকে। এর আগে কোহলি চেয়েছিলেন, ওয়ান ডে ও টেস্ট দলে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে। কিন্তু সাদা বলের খেলায় দু’জন অধিনায়ক থাকুক, তা চায়নি বোর্ড। সেই কারণ দেখিয়েই ওয়ান ডে দলের নেতৃত্ব থেকে সরানো হয় বিরাটকে।
এ বার এই নেতৃত্ব বদল সম্পর্কে মুখ খুললেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী। এ দিন ভারতের ক্রিকেট সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে শাস্ত্রী জানিয়েছেন, এতে ভালই হয়েছে টেস্ট অধিনায়ক বিরাট ও সাদা বলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার পক্ষে।
প্রাক্তন ভারতীয় কোচ বলেন, ‘‘এতে ভালই হবে। এটা বিরাট ও রোহিতের পক্ষে শাপে বর হয়েছে। কারণ, এক জনের পক্ষে তিন ধরনের ক্রিকেটে মন দেওয়া কঠিন ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের সুরক্ষাবিধি মেনে তাকে গোটা বছরের বেশির ভাগ সময়েই জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘বিরাট লাল বলের ক্রিকেট খেলায় মনোনিবেশ করুক। যত দিন পারবে, টেস্ট ক্রিকেটে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে যাক। আগামী ৫-৬ বছর দারুণ ছন্দে পাওয়া যাবে বিরাটকে। তাই টেস্ট দল নিয়ে সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে মন দিতে পারবে ও।’’
উল্লেখ্য, ভারতীয় ওয়ান ডে দলের নেতৃত্ব বিরাটের হাত থেকে বোর্ড রোহিত শর্মার হাতে দেওয়ায় চলতি মাসের শুরুতে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সে সময় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বিরাটকে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু বিরাট জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। এই ঘটনার পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় কোচের দায়িত্বে থাকা রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বিরাট ওর দিকের বক্তব্য জানিয়েছে। এ বার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট তাঁর দিকের বক্তব্য জানাক। দু’পক্ষের বক্তব্য জানা গেলে এই সমস্যা সামলাতে অসুবিধা হবে না।’’
রবিবার আরও একটি তথ্য ফাঁস করেন শাস্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, সাদা বলের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন খেলার জন্যই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘বহু দিন ধরেই ও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনায় ছিল। ও জানত, তিনটি ফর্ম্যাটে খেলার মতো ধকল আর নিতে পারছে না। ওর শরীর তিনটি ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে খেলার জন্য সহযোগিতা করছিল না। সাদা বলের ক্রিকেট দীর্ঘদিন খেলার জন্যই টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছিল ধোনি।’’
শাস্ত্রী জানিয়েছেন, ধোনি যখন ওর অবসরের বিষয় ঘোষণা করেছিল, দলের প্রত্যেকে অবাক হয়ে গিয়েছিল। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘ধোনি আমার কাছে এসে বলেছিল, ছেলেদের আমার কিছু বলার আছে। আমি ভেবেছিলাম ম্যাচের ব্যাপারে হয়তো ও কিছু বলবে।’’ যোগ করেন, ‘‘ড্রেসিংরুম থেকে ও বেরিয়ে আসার পরে ক্রিকেটারদের চোখ-মুখ ছোট হয়ে গিয়েছিল।’’