ফাইল চিত্র।
তাঁর সময়ে এক নম্বর টেস্ট দল হিসেবে পাঁচ বছর বিশ্বক্রিকেটকে শাসন করেছে ভারত। এবং সেই একচ্ছত্র আধিপত্যে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিরাট কোহালি। ভারতীয় দলের প্রাক্তন প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী বলে দিলেন, ভবিষ্যতে এই ভারতীয় দল এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ক্ষমতা ধরে।
এ দিনই মুম্বই টেস্টে নিউজ়িল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্ট র্যাঙ্কিং তালিকার শীর্ষস্থান ফের দখল করেছে ভারত। প্রসিদ্ধ লেখক জেফ্রি আর্চারকে এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে ভারতের প্রাক্তন কোচ বলেছেন, “গত পাঁচ বছরে যদি কোনও দল টেস্ট ক্রিকেটের দূত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে থাকে, তবে সেই কাজ করে দেখিয়েছে ভারতীয় দল। সেই অভিযানে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বিরাট কোহালি।”
ভারত অধিনায়কের প্রশংসা করে শাস্ত্রী বলেছেন, “বেশির ভাগ দলের মতো বিরাটও টেস্ট ক্রিকেটের পূজারি। বাকি ক্রিকেটবিশ্বের কাছে এই ব্যাপারটা আপাত ভাবে হয়তো খুবই বিস্ময়কর। সারা বছরে ভারতীয় দল যে পরিমাণ একদিনের ম্যাচ খেলে এবং যেখানে রয়েছে আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতা, তার পরেও ভারতীয় দলের টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা নিঃসন্দেহে বাকিদের কাছে অবাক করে দেওয়ার মতোই একটা বিষয়। কিন্তু ঘটনা হল, এই দলের যে কোনও ক্রিকেটারকে যদি প্রশ্ন করা যায়, তা হলে ৯৯ শতাংশ সদস্য বলবে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার ভালবাসা কতটা গভীর।” শাস্ত্রীর সংযোজন, “ঠিক সেই কাজটাই গত পাঁচ বছর ধরে করেছে ভারতীয় দল এবং প্রত্যেক বছরের শেষে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল হিসেবে নিজেকে
সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।”
পরিসংখ্যান বলছে, ভারতই একমাত্র দল যারা পরপর দু’বার অস্ট্রেলিয়া সফরে জিতেছে টেস্ট সিরিজ়। ইংল্যান্ড সফরেও পাঁচ টেস্ট সিরিজ়ে ভারত এগিয়ে ২-১। কোভিড আতঙ্কের কারণে শেষ টেস্ট স্থগিত হয়ে যায়, যা হবে আগামী বছরে। শাস্ত্রী মনে করেন, টেস্ট ক্রিকেট মানচিত্রে ভারতের এই একচ্ছত্র শাসনের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে আরও একটি তথ্য। তা হল, দুর্দান্ত ফাস্ট বোলিং সমৃদ্ধ একটি দল হিসেবে ভারত বিশ্ব-মঞ্চে নিজেকে নতুন আঙ্গিকে মেলে ধরেছে। শাস্ত্রী বলেছেন, “হতে পারে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে আমরা হেরে গিয়েছিলাম নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে, কিন্তু সেই অধ্যায় বাদ দিলে গত পাঁচ বছর ধরে এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটকে শাসন করেছি আমরাই।” সেখানেই না থেমে প্রাক্তন কোচের বিশ্লেষণ, “অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দু’বার টেস্ট সিরিজ় জয়। তার পরে ইংল্যান্ড সফরেও আমরা ২-১ এগিয়েছিলাম। সাদা বল এবং লাল বলে ভারতীয় দল বিশ্বের সর্বত্র জিতেছে। তার থেকেও বড় কথা, লাল বলের ক্রিকেটে ভারতীয় দল একটা মাপকাঠি তৈরি করে দিয়েছে। সঙ্গে উঠে এসেছে এক ঝাঁক জোরে বোলার, যা ভারতীয় ক্রিকেটে আগে কোনওদিন শোনা যায়নি। এটাকে অসাধারণ ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।”
এবং এমন এক দলের গুরু হিসেবে তাঁর প্রাপ্তি কি? স্বমেজাজে শাস্ত্রীর জবাব, “এই প্রজন্ম যে ভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলছে, যে ভাবে এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটকে আপন করে নিয়েছে, তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। ওদের উত্তরাধিকারীরা এ ভাবেই টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাইবে।”