চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। —ফাইল চিত্র।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কি পাকিস্তানেই হবে? এখনও এই বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি আইসিসি। তার মাঝেই দুবাইয়ে গিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নকভি। সংযুক্তি আরব আমিরশাহি ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন তিনি। এই প্রতিযোগিতার আয়োজনের জন্য সব রকম চেষ্টা করছে তারা। বোঝা যাচ্ছে, ভারতের দাবিই মেনে নিচ্ছে পাকিস্তান। চাপে শেষ পর্যন্ত নিজেদের অনড় মনোভাব থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা পাকিস্তানে খেলতে যাবে না। ভারতের আপত্তির পরে শুক্রবার বৈঠকে বসেছিল আইসিসি। ১৫ মিনিটেই তা শেষ হয়ে যায়। শনিবার বৈঠকের কথা থাকলেও হয়নি। জানা গিয়েছে, আইসিসি পাকিস্তানকে জানিয়ে দিয়েছে যে ‘হাইব্রিড মডেল’ ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মুবাশির উসমানির সঙ্গে দেখা করেছেন নকভি।
দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, নকভি জানিয়েছেন, তাঁরা পুরো প্রতিযোগিতা পাকিস্তানে আয়োজন করতে প্রস্তুত। তবে আইসিসি যে সিদ্ধান্ত নেবে তা তাঁরা মেনে নেবেন। আইসিসির সহযোগী দেশের যে কমিটি রয়েছে তাতে রয়েছেন উসমানি। ভারতও চাইছে হাইব্রিড মডেলে তাদের ম্যাচগুলি দুবাইয়ে হোক। সেই কারণেই হয়তো সেখানে গিয়েছেন নকভি। উসমানির সঙ্গে আলোচনা সেরে রাখতে চাইছেন তিনি। যদি শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা হয় তা হলে দুবাইয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখতে সেথানে গিয়েছেন নকভি। কারণ, খাতায়কলমে প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ পাকিস্তান। তাই সব প্রস্তুতি তাদেরই করতে হবে।
নকভি জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা চান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হোক। তার জন্য দরজা খোলা রাখছেন তাঁরা। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচে ছিলেন নকভি। ভারতকে ৪৪ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ম্যাচ শেষে নকভি বলেন, “আমরা তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে চাইছি না। আমাদের চিন্তাভাবনা জানিয়েছি। ভারতও নিজেদের মত জানিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ক্রিকেটের জয়। আলোচনার জন্য আমাদের দরজা খোলা। হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা হবে, না অন্য কোনও পদ্ধতিতে হবে তা জানি না। তবে আমরা একটাই কথা বলতে চাই, যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা যেন সব দেশের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়।”
রবিবার, ১ ডিসেম্বর আইসিসির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা জয় শাহের। কিন্তু পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এখনই দায়িত্ব নিতে পারবেন না তিনি। ‘ক্রিকেট পাকিস্তান’ জানিয়েছে, শনিবার কার্যকাল শেষ হওয়ার কথা ছিল গ্রেগ বার্কলের। দায়িত্ব ছাড়ার আগে তাঁর শেষ কাজ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি ঘোষণা করা। কিন্তু পাকিস্তানেই সেই প্রতিযোগিতা হবে কি না তা নিয়ে এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি। এই অবস্থায় শাহকে দায়িত্ব দিলে এই সমস্যা মেটানো তাঁর পক্ষে কঠিন হতে পারে। সেটা চাইছে না আইসিসি। এই পরিস্থিতিতে বার্কলের কার্যকাল আরও এক মাস বৃদ্ধি করা হতে পারে। অর্থাৎ, ১ ডিসেম্বরের বদলে ১ জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব নিতে পারেন শাহ। তবে এখনও পর্যন্ত আইসিসি এই বিষয়ে কিছু জানায়নি।
পাশাপাশি আইসিসিকে তিনটি শর্ত দিয়েছে পাকিস্তান। সেগুলি হল—
দুবাইয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা— ভারতের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ দুবাইয়ে হতে পারে। তাদের নক আউট পর্বের খেলাও সেখানে হলে সমস্যা নেই। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে যে সব দল খেলতে যাবে তাদের নিরাপত্তা পর্যাপ্ত থাকতে হবে।
ভারত বাদ পড়লে বাকি খেলা পাকিস্তানে— ভারত যদি গ্রুপ পর্বে বাদ পড়ে তা হলে আগের সূচি অনুযায়ী সেমিফাইনাল ও ফাইনালে লাহোরেই হবে। দুবাইয়ে আর কোনও ম্যাচ হবে না।
ভারতে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান খেলবে নিরপেক্ষ মাঠে— পরবর্তীতে ভারতকে যদি আইসিসি কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব দেয়, তা হলে পাকিস্তান খেলতে যাবে না। পাকিস্তানের সব প্রতিযোগিতা কোনও নিরপেক্ষ দেশে ফেলতে হবে। এই তিনটি শর্ত আইসিসি মানলে তবেই ‘হাইব্রিড মডেল’-এ তারা রাজি হবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।