সমর্থন: ইডেনের গ্যালারিতে প্যালেস্টাইনের পতাকা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমী। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের জায়গা থেকে দেখলে মঙ্গলবারের ম্যাচের কোনও গুরুত্ব ছিল না। যথারীতি শাহিন শাহ আফ্রিদি, মহম্মদ ওয়াসিমদের গতির মুখে নাজেহাল দশা হল শাকিব আল হাসানদের বাংলাদেশের। কিন্তু ইডেনে উপস্থিত দর্শকদের উন্মাদনায় কোনও খামতি ছিল না। সেই উত্তেজনা বাড়িয়ে দিলেন বালি এবং ইকবালপুর থেকে আসা চার বন্ধু। তাঁরা প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়াতে শুরু করেন
গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে।
মুহূর্তের মধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেই ছবি। একবালপুর থেকে আসা শেহনাজ় ও সাদ্দাম বলছিলেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। আমরা প্যালেস্টাইনের সমর্থনেই পতাকা উড়িয়েছি। কিন্তু এটা নিয়ে যে কোনও আলোচনা হতে পারে, ভাবিনি।’’ সাংবাদিকরা তাঁদের পতাকা দেখানোর অনুরোধ করতেই ‘জি ওয়ান’ ব্লক থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। সেই ব্লকে উপস্থিত পুলিশকর্মী পরে বলছিলেন, ‘‘আমরা বুঝিনি প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়াবে ওরা। গ্যালারিতে অনেকে কটূ মন্তব্যও করছেন।’’ রাতে ওই চার যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় ময়দান থানার পুলিশ।
ইডেনে এ দিন উপস্থিত তিরিশ হাজার দর্শকের অনেকেই ছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে। আমদাবাদে ‘‘দিল দিল পাকিস্তান গানটি বাজানো হয়নি।’’ বেঙ্গালুরুতে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলতে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। কলকাতা আগের মতোই সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরল। পাকিস্তানের সাফল্যের সময় বারবার বেজে ওঠে, ‘‘দিল দিল পাকিস্তান, জান জান পাকিস্তান।’’
সেই সুরে গলা মেলাচ্ছিলেন মুম্বই থেকে উড়ে আসা চার ভাই-বোন। মা পাকিস্তানি। বাবা ভারতীয়। সারওয়ার শেখ, শেহবাজ় খান, রুমা খানেরা বলছিলেন, ‘‘ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের প্রত্যেকটি ম্যাচ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমদাবাদে ভারত-পাক ম্যাচের টিকিট পাইনি। ইডেনে প্রথম বার ম্যাচ দেখতে এসেছি। এত ভাল পরিবেশ খুব কম জায়গায় দেখেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘আমাদের মা পাকিস্তানের। বাবা ভারতীয়। দু’দেশের ম্যাচ হলে আমরা ভারতকেই সমর্থন করি। আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ। তাই মায়ের দেশকে সমর্থন করছি। ইডেনের আন্তরিকতা আমাদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। আর কোনও মাঠে এত ভাল ব্যবহার পাইনি।’’