বাবর আজ়ম। —ফাইল চিত্র।
আগামী ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) চেয়ারম্যান পদে বসবেন জয় শাহ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ভোট তিনি পাননি। সীমান্তের ওপারে সেই আশঙ্কাই ফুটে উঠেছে। প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউনিস খানের আশা, জয় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করবেন।
এখন আইসিসির সদস্যসংখ্যা ১৬। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্বে জয়কে সমর্থন করেছিলেন ১৫ জন সদস্য। পিসিবি তাঁকে যেমন সমর্থন করেনি, তেমন সরাসরি বিরোধিতাও করেনি। বাকি সব সদস্য জয়কে সমর্থন করায় পিসিবি একা বিরোধিতা করলেও লাভ হত না। জয়ের আইসিসির পরবর্তী চেয়ারম্যান হওয়া আটকাত না। আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান। সে দেশে দল পাঠানোর ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানায়নি বিসিসিআই। বলা ভাল, জানাননি জয়ই। কারণ এখনও তিনি বিসিসিআইয়ের সচিব। আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়ার পরও কি তিনি বিসিসিআইয়ের হয়েই ব্যাট ধরবেন? না কি আইসিসি কর্তা হিসাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবেন?
প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ক্রিকেটমহলে। পাকিস্তানের ক্রিকেটকর্তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে একটা আশঙ্কাও। সম্ভবত সেই আশঙ্কা থেকেই ইউনিস বলেছেন, ‘‘আশা করব জয় শাহ আইসিসির চেয়ারম্যান হিসাবে ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তাঁর উচিত খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়ে কাজ করা। আইসিসির পদে থেকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে তাঁর নিশ্চিত করা উচিত, ভারতীয় দল যাতে পাকিস্তানে খেলতে আসে। মনে রাখা উচিত পাকিস্তানের দল কিন্তু ভারতে খেলতে (গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপ) গিয়েছিল।’’
পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটারের আশা, আইসিসি চেয়ারম্যান হিসাবে জয় পাকিস্তানকে বঞ্চিত করবেন না। ভারসাম্য বজায় রেখে আইসিসির দায়িত্ব সামলাবেন। উল্লেখ্য, গত এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। বিসিসিআই রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের পাকিস্তানে পাঠাতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা হয়েছিল হাইব্রিড মডেলে। ভারতীয় দল খেলেছিল শ্রীলঙ্কায়।
অন্য দিকে, নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন কোচ জন বুকাননও। তাঁর আশা, টি-টোয়েন্টি লিগের বাড়বাড়ন্তের সময় টেস্ট ক্রিকেটকে রক্ষা করার জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করবেন জয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বুকানন বলেছেন, ‘‘জয় শাহের আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করব, ক্রিকেটের স্বার্থে আইসিসি কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করবেন। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মাঝে এক দিনের ক্রিকেটকেও বাঁচিয়ে রাখা দরকার। টেস্ট ক্রিকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০ ওভারের ক্রিকেট যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে। প্রসারও হয়েছে। ক্রিকেটের এই বিবর্তনের সময় ৫০ ওভারের ক্রিকেটের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া উচিত। এক জন ক্রিকেটারের পক্ষে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সমান মান বজায় রেখে চলা কঠিন। ভারসাম্য রক্ষার জন্যই প্রয়োজন এক দিনের ক্রিকেট।’’
বিসিসিআই সচিব হিসাবে সফল ভাবে কাজ করেছেন জয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রজার বিন্নীর মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার সভাপতি থাকার সময় দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। ক্রিকেট প্রশাসক হিসাবে আইসিসিতেও জয় সুনাম বজায় রাখতে পারবেন বলেই আশা ইউনিস, বুকাননদের।