সোয়েপসনের বোলিং অ্যাকশন অনেকটা ওয়ার্নের মতো। —ফাইল ছবি
করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে অভিষেক হতে চলেছে অস্ট্রেলীয় লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসনের। এর মধ্যে তেমন বিশেষত্ব নেই। কিন্তু সোয়েপসনের টেস্ট অভিষেক দেখতে পারলে সম্ভবত সব থেকে বেশি খুশি হতেন শেন ওয়ার্ন।
পাকিস্তানের উইকেটে পাক ব্যাটারদের কি সমস্যায় ফেলতে পারবেন সোয়েপসন? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে খেলা শুরু হওয়ার পর। অজি শিবির অবশ্য ২৮ বছরের লেগ স্পিনারকে নিয়ে দারুণ আশাবাদী। কারণ, সোয়েপসনের স্পিনে পালিশ করেছেন ওয়ার্ন নিজে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সাতটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেও এখনও টেস্ট বা এক দিনের ম্যাচ খেলেননি কুইন্সল্যান্ডের এই স্পিনার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫১টি ম্যাচে ১৫৪টি উইকেট নিয়েছেন এখনও পর্যন্ত।
এ সব শুকনো পরিসংখ্যানের থেকেও আকর্ষণীয় হল সোয়েপসনের বোলিং অ্যাকশন। যা দেখলেই মনে পড় যাবে সদ্য প্রয়াত লেগ স্পিনারকে। হঠাৎ দেখলে ভ্রমও হতে পারে। গত কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে থাকলেও প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। শেষ পর্যন্ত করাচির মন্থর উইকেট তাঁকে বহু কাঙ্খিত অভিষেকের সুযোগ দিতে চলেছে।
ওয়ার্নের কাছে বেশ কিছু দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে ২০১৭-১৮ মরসুমে সোয়েপসনকে পিচ ব্যবহার করা নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেন ওয়ার্ন। ৭০৮ টেস্ট উইকেটে মালিক সোয়েপসনকে শিখিয়ে গিয়েছেন লেগ স্পিনের সুক্ষ শিল্প। ধারাল করেছেন কবজির মোচড়। সেই মোচড়েই করাচির বাইশ গজে তিনি ঘূর্ণির ঝড় তুলবেন বলে আশায় অজি শিবির।
ওয়ার্নের মৃত্যুর পর আবেগপ্রবণ সোয়েপসন বলেছিলেন, ‘‘মানুষটাকে কখনও ধন্যবাদ জানানো হয়নি। আমার ক্রিকেটে ওঁর প্রভাব যথেষ্ট। উনি প্রতি দিন আমাকে সামনের দিকে ঠেলতেন আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য। ওঁর মতো মহান ক্রিকেটারের সান্নিধ্য পাওয়া সত্যিই গর্বের।’’
সোয়েপসনের টেস্ট অভিষেক ঘিরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথরা। নেট মাধ্যমে সেই উচ্ছ্বাস প্রকাশও করেছেন তাঁরা। কামিন্স বলেছেন, ‘‘সোয়েপসন খুবই উত্তেজিত। সত্যি কথা বলতে, আমরা সকলেই দারুণ উত্তেজিত। ও দীর্ঘ দিন ধরেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যখন খেলেনি তখনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওকে খেলতে দেখার জন্য আমরা সবাই মুখিয়ে রয়েছি।’’ করাচির মন্থর উইকেটে সোয়েপসন সাহায্য পাবে বলেই মনে করেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আরও একটা মন্থর উইকেটে খেলতে হবে আমাদের। সোয়েপসন দলে থাকায় বিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার সুযোগ থাকবে আমাদের কাছে। কারণ ওর মতো ভাল রিস্ট স্পিনার ভাল সাহায্য পেতে পারে।’’
উত্তেজনার আরও কারণ ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার ব্রাইস ম্যাকগেনের। সেই শেষ। তার পর আর কোনও লেগ স্পিনারের মাথায় ওঠেনি ব্যাগি গ্রিন টুপি। ওয়ার্নের শিষ্যকে নিয়ে সতর্ক পাকিস্তান শিবিরও। পাক অধিনায়ক বাবর আজম বলেছেন, ‘‘আমরা ওর ভিডিয়ো দেখছি। সেই মতোই পরিকল্পনা করা হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, করাচিতেও দুই পাক স্পিনার সাজিদ খান এবং নৌমান আলিকে সামলাতে সমস্যায় পড়বে অজিরা।