প্রথম টেস্টে কামিন্সরা। ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া
পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ পেশোয়ারে। সন্ত্রাসের আবহ কাটিয়ে সবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। তার মধ্যেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে প্যাট কামিন্সরা কি সফর শেষ করবেন?
সফর নিয়ে আলোচনার সময় থেকেই ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) দফায় দফায় চাপ দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ভাবমূর্তি ফেরাতে মরিয়া পাকিস্তান সরকার কোনও কসুর করেনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানদের সমতুল নিরাপত্তা।
দু’দেশের প্রথম টেস্ট হচ্ছে রাওয়ালপিণ্ডিতে। সেখান থেকে ১৮৪ কিলোমিটার দূরের পেশোয়ারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সফরকারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হলেও সন্ত্রাসের আতঙ্ক ফিরেছে। এই আতঙ্কেই শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করেছিল ইংল্যান্ড। পাকিস্তানে পৌঁছেও মাঠে না নেমেই ফিরে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডও।
পিসিবি-র দাবি, সফর সম্পূর্ণ করবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। অস্ট্রেলিয়া বোর্ড (সিএ) সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তারা। ইসলামাবাদের অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কর্তারা। পিসিবি-র সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা। এখনই সফর বাতিল করার মতো কিছু ঘটেনি বলেই মনে করছে সিএ। উল্লেখ্য দীর্ঘ ২৪ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া।
ঐতিহাসিক সফর উপলক্ষ্যে এই মুহূর্তে রাওয়ালপিণ্ডিতেই রয়েছেন সিএ-র সিইও এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সংগঠনের প্রধান। শুক্রবার বিস্ফোরণের পরেই দুই অস্ট্রেলীয় কর্তাকে দলের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করেছে পাক সরকার। পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়ার পরের দু’টি টেস্ট হওয়ার কথা লাহৌর এবং করাচিতে।
মাঠের বাইরের এই আতঙ্কের পাশাপাশি মাঠের লড়াইয়েও কোনঠাসা অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দিনের শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ১ উইকেটে ২৪৫। ওপেনার আবদুল্লা শফিক ৪৪ রান করে নেথান লায়নের বলে সাজঘরে ফেরেন প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অপর ওপেনার ইমাম উল-হক এবং আজহার আলি স্বচ্ছন্দে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তানের ইনিংস। দ্বিতীয় দিনের মধ্যহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত পাকিস্তানের রান ১ উইকেটে ৩০২। ১৫৪ রানে অপরাজিত ইমাম। ৯৫ রানে অপরাজিত আজহার।
২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পাক সফরের সময়ও করাচিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়েছিল। সে সময় প্রোটিয়ারা সফর শেষ করেই ফেরেন। সেই উদাহরণ এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলেই অস্ট্রেলীয় কর্তাদের আশ্বস্ত করেছেন পাক কর্তারা। যদিও ২০০৯ সালে সফররত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের বাসে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের মাটিতে বন্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০১৯-২০ মরসুম থেকে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল অবশ্য নির্বিঘ্নেই সফর শেষ করে।