বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
০-৭। এক দিনের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ফল। শনিবার আমদাবাদে প্রথম জয়ের খোঁজে নামবেন বাবর আজ়মেরা। ভারতের মাটিতে এই ম্যাচে গ্যালারির সমর্থন তাঁদের দিকে থাকবে না নিশ্চিত ভাবেই। তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে আরও এক জন সম্পর্কে। ভারতের এক ক্রিকেটারকে থামাতে পারলে বাবরদের কাজ কিছুটা সহজ হয়ে যেতে পারে প্রতিকূল আবহের মধ্যেও।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছ থেকে প্রায় একাই ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব সময় নিজের সেরাটা উজাড় করে দেন। বাঁহাতি জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে তাঁর একটু সমস্যা আছে। পাকিস্তান দলে আছেন শাহিন আফ্রিদির মতো বিপজ্জনক বাঁহাতি জোরে বোলার। নিঃসন্দেহে কোহলিকে থামাতে বাবরের প্রধান অস্ত্র হবেন শাহিন। সমস্যা হল, বিশ্বকাপে শাহিনকে এখনও চেনা ফর্মে দেখা যায়নি। আর কোহলি ব্যাট হাতে শাসন করছেন প্রতিপক্ষের বোলারদের। কোহলিকে থামাতে দায়িত্ব নিতে হবে শাহিনকেই। তাঁকে হিসাব করে ব্যবহার করতে হবে বাবরকেও।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রবল চাপ সামলে ৮৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অপরাজিত ৫৫। কথা বলছে কোহলির ব্যাট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও কোহলি বার বার সফল। প্রায় সর্বত্রই রান করেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৫টি এক দিনের ম্যাচ খেলে করেছেন ৬৬২ রান। গড় ৫৫.১৬। এক দিনের ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ইনিংসও কোহলি খেলেছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তিনটি শতরান রয়েছে তাঁর। যার শেষটি এসেছে গত এশিয়া কাপে। পাশাপাশি, পাকিস্তনের বিরুদ্ধে ১০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৪৮৮ রান করেছেন কোহলি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮২। গড় ৮১.৩৩।
পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোহলি কতটা সফল। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের চাপ তাঁকে কাবু করতে পারে না। বরং পাক বোলারদের ক্লাব স্তরে নামিয়ে আনাতেই যেন তাঁর আনন্দ। পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক বজায় রাখা কোহলি কখনও ২২ গজের লড়াইয়ে তাঁদের রেয়াত করেন না। উপভোগ করেন তাঁদের সঙ্গে লড়াই। চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোহলির সাফল্যের অন্যতম ইউএসপি।
শনিবারের ম্যাচে বাবরদের প্রধান লক্ষ্য হবে কোহলিকে থামানো। তার আগে অবশ্য ভারতের ওপেনিং জুটি ভাঙতে হবে তাঁদের। দিল্লিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিশন আত্মবিশ্বাস পেয়ে গিয়েছেন। যা বাবরদের কাজ আরও কঠিন করতে পারে। রোহিতেরা সফল হোন বা ব্যর্থ— কোহলি একই রকম। বিশ্বকাপের প্রথম দু’ম্যাচে তা দেখা গিয়েছে। নিজে ভুল না করলে তাঁকে আউট করা কঠিন। বাবরদের এই কঠিন কাজটাই দ্রুত সেরে ফেলতে হবে শনিবার। না হলে ০-৮ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা।
কোহলির ক্রিকেটীয় দক্ষতা অজানা নয় বাবরদের। কিন্তু জানা থেকেই বা হবে কী! কোহলি সম্পর্কে আগের ২৫টি ম্যাচেও (এক দিনের এবং টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে) জানা ছিল পাক শিবিরের। তবু তাঁকে রুখতে পারেননি বাবরেরা। শনিবার কি পারবেন? উত্তর দেবে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের ২২ গজ। পারলে এক রকম, না পারলে বাবরদের ফিরতে পারে এশিয়া কাপের স্মৃতি।