সিএবি-র প্রশাসনে ফিরতে চলেছেন সৌরভ। ফাইল ছবি
সিএবি-এর আসন্ন নির্বাচনে লড়তে চলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কথা জানিয়ে দিলেন বিদায়ী বিসিসিআই সভাপতি। বোর্ড থেকে বিদায় নিলেও ক্রিকেট প্রশাসনেই থেকে যাচ্ছেন সৌরভ। আবার ফিরছেন সিএবি-তে।
শনিবার সংস্থাকে সৌরভ বলেছেন, “হ্যাঁ, আমি নির্বাচনে লড়তে চলেছি। আগামী ২২ অক্টোবর মনোনয়ন জমা দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। পাঁচ বছর আমি সিএবি-তে ছিলাম। লোধা কমিটির নিয়ম অনুযায়ী আরও চার বছর থাকতে পারব। ২০ তারিখের মধ্যে নিজের প্যানেল তৈরি করে ফেলতে পারব বলে আশা করছি।” সৌরভ এ দিন ইডেন গার্ডেন্সে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ইদানীং যে কুৎসা চলছে তাঁর জবাব দিতেই নির্বাচনে লড়তে চলেছেন। সৌরভের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিদায়ী সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়াও।
শোনা যাচ্ছিল, সৌরভের দাদা স্নেহাশিস সিএবি-র পরবর্তী সভাপতি হতে পারেন। তবে বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সৌরভ সরে যাবেন, এই খবর নিশ্চিত হতেই সব সমীকরণ বদলে যায়। জল্পনা চলছিল, সৌরভ সিএবি সভাপতি হিসাবে ক্রিকেট প্রশাসনে ফিরতে পারেন। সেই জল্পনাই সত্যি হতে চলেছে।
শনিবার সিএবি-তে ফটো সেশন ছিল। বিদায়ী অ্যাপেক্স কাউন্সিলের কর্তা এবং বিভিন্ন আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। সৌরভকেও বিকেলে আসতে দেখা যায়। মাঠে নেমে সিএবি-র বিদায়ী সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে অনেক ক্ষণ হাসিমুখে আলোচনা করেন। সিএবি-র বিভিন্ন কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। তার পরে সেখানে হাজির সংবাদমাধ্যমের সামনেও সিএবি-র নির্বাচনে লড়ার কথা পরিষ্কার করে দেন।
সৌরভ সিএবি-তে আসতে পারেন, এই খবর শোনার পরেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিরোধী গোষ্ঠী। বিরোধী পক্ষের অন্যতম মুখ বিশ্বরূপ দে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছেন। জেলার ক্রিকেটে তাঁর ভোটব্যাঙ্ক যথেষ্ট শক্তিশালী। সূত্রের খবর, সেই ভোটব্যাঙ্ক ভাঙার কাজ সৌরভ শুরু করে দিলেন এ দিনই। কর্তাদের সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠকে নিজের দিকে অনেক ভোট টেনে আনবেন বলেই জানা গিয়েছে।
বোর্ড থেকে রাজ্য সংস্থার প্রধান হওয়া নিশ্চয়ই উন্নতি নয়। তবু কারও কারও মত, সিএবি-তে ক্রিকেট প্রশাসনে অন্তত ভেসে থাকতে পারবেন সৌরভ। তা ছাড়া যে ভাবে জয় শাহ, এন শ্রীনিবাসনেরা রীতিমতো অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান করে তাঁকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়েছেন, তা-ও মেনে নিতে পারছেন না সৌরভ। বাকি সকলকে মোটামুটি ভাবে রেখে দেওয়া হয়েছে, মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন একমাত্র তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরেই একটি অনুষ্ঠানে সৌরভ বলেন, সারাজীবন কেউ পদে থাকতে পারে না। তিনি বোর্ড প্রধানের পদ উপভোগ করেছেন, সফল হয়েছেন বলেও মনে করেন। কিন্তু এটা তাঁর মনের কথা হলে এটাও মানতে হবে যে, অনিল কুম্বলের অপসারণ একেবারেই চাননি বিরাট কোহলি। দ্বিধার কোনও জায়গাই নেই। বোর্ডের মসনদ হারিয়ে সৌরভ আহত, রক্তাক্ত, অপমানিত।
সৌরভ এর আগে জগমোহন ডালমিয়ার আমলে সিএবি সচিব হয়েছেন। ডালমিয়ার মৃত্যুর পরে সংস্থার প্রেসিডেন্ট হন। সিএবি-তে তাঁর ছয় বছর হয়ে গিয়েছে। টানা ছয় বছরের মেয়াদের পরেই তিনি বোর্ডে যান প্রেসিডেন্ট হিসেবে। পদাধিকারীদের টানা মেয়াদ বাড়ানোতে সম্মতি জানিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও নতুন রায় দিয়েছে। ফলে সিএবি প্রশাসনে ফিরতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। বোর্ডে যেমন বিজেপি নেপথ্যে সক্রিয় ছিল বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, তেমনই সিএবি নির্বাচনে তৃণমূল তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী ভূমিকা থাকতে পারে, তা-ও দেখার। ডালমিয়ার প্রয়াণের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণাতেই সৌরভ সিএবি প্রেসিডেন্ট পদে বসেছিলেন।