নাগাল্যান্ডের হয়ে খেলেন কিরণ। ফাইল চিত্র
ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু প্রথম প্রেম ছিল ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড’। ২০১১ সালে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় জ্যাভলিনে সোনাও জিতেছিলেন কিরণ প্রভু নাভগিরে। অ্যাথলেটিক্সের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ১০০-র বেশি পদক জিতেছেন। সেই কিরণই এ বার সুযোগ পেয়েছেন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলে। হরমনপ্রীত কৌরদের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফরে যাবেন এই ব্যাটার। ২০১৬ সালে প্রথম গুরুত্ব দিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন ২২ বছরের কিরণ। তার ছ’বছর পরে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেলেন তিনি।
কিরণের প্রথম কোচ গুলজার শেখ। একটি ম্যাচে কিরণের খেলা মুগ্ধ করেছিল তাঁকে। গুলজার বলেন, ‘‘পুণের একটা অ্যাকাডেমিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের ম্যাচে প্রথম কিরণকে দেখেছিলাম। হাসতে হাসতে ছক্কা মারছিল। ওর গায়ের জোর দেখে অবাক হয়েছিলাম। সেই সময় কোনও ক্লাবে প্রশিক্ষণ নিত না কিরণ। ওকে জিজ্ঞাসা করায় বলেছিল, ‘ক্রিকেট শুধু আনন্দের জন্য খেলি। অ্যাথলেটিক্স আমার প্রথম পছন্দ।’ আমি বুঝে গিয়েছিলাম, ওর কতটা ক্ষমতা সেটা ও নিজেই জানে না।’’
মহারাষ্ট্রের শোলাপুরের এক কৃষক পরিবারের মেয়ে কিরণ। ক্রিকেট খেলার খরচ চালাতে পারবেন না বলেই এই খেলার দিকে প্রথমে আগ্রহ দেখাননি। গুলজার তাঁর সব খরচ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই ক্রিকেটের দিকে মন দেন কিরণ। ২০১৬-১৭ সালে পুণের একটি প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক (৪২৯) রান করেছিলেন তিনি। মহারাষ্ট্র দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু খেলেননি। চলে গিয়েছিলেন নাগাল্যান্ডে। সেই সিদ্ধান্তই তাঁর কেরিয়ার বদলে দেয়।
২০২২ সালে মহিলাদের সিনিয়র টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় সব থেকে বেশি (৫২৫) রান করেন তিনি। তার মধ্যে অরুণাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে মাত্র ৭৬ বলে ১৬২ রান করেন। তিনিই এক মাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার যাঁর টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় দেড়শোর বেশি রান রয়েছে। নাগাল্যান্ডকে একাই কোয়ার্টার ফাইনালে তোলেন কিরণ। কিন্তু কেরলের বিরুদ্ধে হেরে ছিটকে যেতে হয়।
কিরণের বড় শট মারার সহজাত ক্ষমতার জন্য তিনি মহিলাদের টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে দীপ্তি শর্মার নেতৃত্বে ভেলোসিটি দলে সুযোগ পান কিরণ। একটি ম্যাচে ৩৪ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই ইনিংস তাঁকে জায়গা করে দিয়েছে ভারতীয় দলে। এ বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও নিজের ছাপ ফেলতে তৈরি হচ্ছেন এক সময় জ্যাভলিনে সোনাজয়ী কিরণ।