বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নুরুল হাসান। ছবি: টুইটার।
নুরুল হাসানকে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক করেছে বাংলাদেশ। প্রথম বার জাতীয় দলকে তিনি নেতৃত্ব দেবেন জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২০ ওভারের সিরিজে। নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব বাড়তি চাপ বলে মনে করছেন না নুরুল।
২৮ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে সাতটি টেস্ট, ছয়টি এক দিনের ম্যাচ এবং ৩৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। আগামী এশিয়া কাপ থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত সম্ভবত শাকিব আল হাসানই বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেবেন। নুরুল জানেন, তাঁকে অস্থায়ী অধিনায়ক করা হয়েছে।
ছয় বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও, দেশের হয়ে খুব বেশি খেলার সুযোগ হয়নি নুরুলের। গত বছর শেষ দিকে প্রায় তিন বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন তিনি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর গত কয়েক বছরে অনেক পরিশ্রম করেছেন। নিজেকে নতুন ভাবে তৈরি করেছেন। এখন ক্রিকেটার হিসাবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী নুরুল। টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব পেয়ে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চান নুরুল।
নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়ার পর নুরুল বলেছেন, ‘‘আমার খুব বেশি উত্তেজনা বা রোমাঞ্চ হচ্ছে না। এখন আর আমি আগের মতো অল্পতেই উত্তেজিত বা রোমাঞ্চিত হই না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আমাকে আগেই জানিয়েছিল। প্রথম বার শুনে একটু বিস্মিত হয়েছিলাম। পরে মনে হয়েছে, এটা একটা দায়িত্ব। আমাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে যথাযথ ভাবে।’’ নুরুল আরও বলেছেন, ‘‘আগে খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম। নিজেকে অনেক পরিবর্তন করেছি। এখন আর অল্পতেই আবেগপ্রবণ হই না। নিজেকে বদলাতে দু’তিন বছর সময় লেগেছে। মনে হয়েছিল পরিবর্তন দরকার। এখন আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। সেটা করতে পেরেই সাফল্য পেয়েছি।’’
জানিয়ে দিয়েছেন, দলকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার বার্তাই দেবেন তিনি। নুরুল বলেছেন, ‘‘তুলনা করলে এক দিনের ক্রিকেটের থেকে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা একটু পিছিয়ে রয়েছি। মনে হয় ২০ ওভারের ম্যাচগুলো আমরা আগ্রাসী ভাবে খেললেই ভাল হবে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যখনই ভয়ে ভয়ে খেলার চেষ্টা করেছি তখনই পিছিয়ে পড়েছি। তাই আগ্রাসী এবং সাহসী ক্রিকেট খেলা দরকার।’’ ফলাফল নিয়ে বেশি ভাবতে চান না নুরুল। বাংলাদেশের নতুন টি-২০ অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘ফলাফল নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। আমার কাছে পদ্ধতিটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফল নিয়ে ভেবে রাতের ঘুম নষ্ট করতে চাই না। সঠিক পদ্ধতি মেনে চলতে পারলে দলের পক্ষে ফলাফল আসা কঠিন হবে না। সকলের ক্রিকেট খেলার আলাদা ধরন রয়েছে। সকলে একই রকম ভাবে আগ্রাসী হতে পারে না। কিন্তু সকলে মিলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলাই যায়। দল থেকে বাদ পড়ার ভয় না পেয়ে সকলে ডাকাবুকো ক্রিকেট খেলুক।’’
বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের সুবাদে নুরুলকে জাতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট কর্তারা। নেতৃত্ব নিয়ে বলেছেন, ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্যে বড় পার্থক্য আছে বলে আমার মনে হয় না। উভয় ক্ষেত্রেই একটা দল হিসাবে খেলাই থাকে প্রধান লক্ষ্য। আমি নিশ্চিত আমরা জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একটা দল হিসাবেই খেলব।’’
জানেন কয়েকটা ম্যাচের জন্যই নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন। নুরুল বলেছেন, ‘‘সত্যি বলতে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘ কোনও পরিকল্পনা আমার নেই। আমি শুধু নিজের ক্রিকেট এবং উন্নতির পদ্ধতিতেই বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছি।’’