আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মাঠ ঢাকার চেষ্টায় মাঠকর্মীরা। ছবি: পিটিআই।
আইপিএলের ফাইনালের মঞ্চ আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। যে মাঠে এক লক্ষ ১০ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসে খেলা দেখতে পারেন। ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল এই স্টেডিয়াম। কিন্তু সেই মাঠের থেকে পরিকাঠামোর দিক থেকে এগিয়ে ইডেন গার্ডেন্স। প্রমাণ করে দিল বৃষ্টি।
আমদাবাদে বৃষ্টি থেমে যায় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। তার পরেও খেলা শুরু করা সম্ভব হয় না। মাঠের একটি পিচে জল জমে গিয়েছিল। সেখান দিয়ে দৌড়াতে গেলে চোট পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই কারণে বৃষ্টি থামার পরেও খেলা শুরু করা যায়নি। আমদাবাদে রবিবারও বৃষ্টি হয়েছিল। সোমবারও চেন্নাই সুপার কিংস ব্যাট করতে নামার পরেই বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু দু’দিনই দেখা যায় প্রচণ্ড বৃষ্টি হলেও পুরো মাঠ ঢেকে ফেলার ব্যবস্থা নেই আমদাবাদের মাঠে। যা রয়েছে ইডেনে।
কলকাতার মাঠে দেখা গিয়েছে বৃষ্টি হলেই পুরো মাঠ ঢেকে ফেলা হয়। এর ফলে বৃষ্টি থামার পর পরই খেলা শুরু করে দেওয়া সম্ভব হয়। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম ভারত ম্যাচ হয়েছিল ইডেনে। সে বার বৃষ্টি শেষ হওয়ার পরেই খেলা শুরু করা সম্ভব হয়েছিল। সাদা আস্তারণে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল মাঠ। জল মাঠে পড়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু আমদাবাদে তা নেই। পিচ ঢাকার পর আরও একটি আস্তারন দেওয়া হয় তার উপর, কিন্তু তাতে মাঠের খুব অল্প অংশই ঢাকা পড়ে। সেই আস্তারণ সরাতে গিয়েই সোমবার পাশের পিচে জল পড়ে যায়। তাতেই বিপত্তি। আশিস নেহরাকে দেখা যায় ভেজা অংশে পা দিয়ে দাগ কাটতে। জায়গাটা যে ভাল রকমের ভেজা তা বোঝা যাচ্ছিল। সুপারসপার দিয়ে বার বার মাঠ শুকনো করার চেষ্টা করতে দেখা যায়।
বৃষ্টির সময় এ ভাবেই ঢেকে ফেলা হয় ইডেনের মাঠ। ছবি: পিটিআই।
যে মাঠ তৈরি করতে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, সেই স্টেডিয়ামে এমন অবস্থা দেখে বিরক্ত দর্শকরা। সেই সঙ্গে স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়েও জল পড়তে দেখা যায়। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে। সেখানে দেখা যায় স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ছে। আর সেই জলে ভেসে যাচ্ছে দর্শকাসন। জনৈক দর্শক সেই ভিডিয়ো টুইট করে লেখেন, “যাঁরা ছাদে ঘেরা স্টেডিয়ামের আশা করছেন, তাঁরা দেখুন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের সবচেয়ে ভাল স্টেডিয়ামে কী অবস্থা।” সেই ভিডিয়োয় এক সমর্থক লিখেছেন, “খুব খারাপ অভিজ্ঞতা স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে। পার্কিংয়ের এলাকায় কাদা ভর্তি এবং সুইমিং পুলের মতো জল।”
স্টেডিয়ামের দুর্দশার আরও তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। কেদার নামে এক সমর্থক পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেই সমস্যা বাড়ে। তিনি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, “বৃষ্টি শুরু হতেই সবাই ছোটাছুটি করে আশ্রয় খুঁজতে শুরু করে। প্রবল ধাক্কাধাক্কি হয়। স্টেডিয়ামে কোনও নেটওয়ার্ক ছিল না। পরিবারের সঙ্গে আমি আর একটু হলেই আলাদা হয়ে যেতাম। তখন যোগাযোগের উপায় থাকত না।”
এই বছর ভারতে এক দিনের বিশ্বকাপ হবে। তার আগে মাঠগুলির অবস্থা উন্নতি করতে কয়েক শো কোটি টাকা খরচ করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেই তালিকায় রয়েছে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামও। সবে তৈরি হওয়া স্টেডিয়ামকেও আবার উন্নতির জন্য অর্থ খরচ করতে হবে বোর্ডকে।