আইপিএলের ট্রফি। — ফাইল চিত্র।
আইপিএলের দলগুলির দাবি মেনে নিলে আগামী দিনে হয়তো আর মেগা নিলাম দেখা যাবে না। ক্রিকেটার ধরে রাখার নিয়মেও আসবে বড় বদল। বুধবার রাতে আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে দলমালিকদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন নিয়মকানুন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে আইপিএলের দলগঠন সংক্রান্ত নিয়মে বেশ কিছু বদল দেখা যেতে পারে।
বৈঠকে শেষ দু’বারের মেগা নিলামকে হাতিয়ার করে বেশ কিছু বড় দল জানিয়েছে, নিজেদের দলের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের এখনই হাতছাড়া করতে চায় না তারা। গত তিন বছরে বেশ কিছু দল নিজেদের দলের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের উপর বিনিয়োগ করেছে। মেগা নিলাম তিন বছর অন্তর আয়োজন করলে দলগঠনের স্বার্থের এই ক্রিকেটারদের অনেককেই হয়তো ছেড়ে দিতে হবে। ফলে বিনিয়োগের পরিবর্তে কিছুই পাবে না দলগুলি। এ কারণেই আপত্তি।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খান মেগা নিলাম তুলে দেওয়ার পক্ষে সবচেয়ে সরব। তিনি পাশে পেয়েছেন মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, রাজস্থান এবং গুজরাতের মতো দলকে। তবে বিরোধিতা করেছে দিল্লি। সেই দলের কর্তা পার্থ জিন্দল বলেছেন, “কিছু কিছু দল মেগা নিলাম চায় না দেখে আমি অবাক। আমি সেই দলে নেই। প্রত্যেক দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে। তা হলেই আইপিএল আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে। সবাই মেগা নিলাম তুলে দেওয়ার পক্ষে নয়।”
এই বৈঠকের আগেই জানা গিয়েছিল, বেশির ভাগ দল ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায়। তারা ৫-৬ ক্রিকেটারকে ধরে রাখার পাশাপাশি সমসংখ্যক ‘রাইট-টু-ম্যাচ’ কার্ডের পক্ষপাতী। এতে মোটামুটি দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারকেই ধরে রাখা যাবে। আইপিএল যারা জিতেছে, সেই দলগুলিই নিলাম তুলে দিতে চাইছে। পঞ্জাব, দিল্লি, লখনউ এবং বেঙ্গালুরুর মতো আইপিএল না জেতা দল এর বিপক্ষে।
মেগা নিলাম তুলে দিতে চাওয়ার পক্ষে থাকা দলগুলির বেশির ভাগেরই শক্তিশালী অ্যাকাডেমি রয়েছে। প্রত্যেকেই প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের পিছনে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। মেগা নিলাম হলে এই ক্রিকেটারদের সবাইকে ধরে রাখা যাবে না। যেমন, রাজস্থান বিনিয়োগ করেছে যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেল। যদি পাঁচ জন ক্রিকেটার ধরে রাখার নিয়ম থাকে, তা হলে এঁদের ধরে রাখতে পারবে না তারা। কারণ রাজস্থানে সঞ্জু স্যামসন, জস বাটলার, ট্রেন্ট বোল্ট, যুজবেন্দ্র চহালের মতো ক্রিকেটারেরাও রয়েছেন।
একই ভাবে, মুম্বই বিনিয়োগ করেছে তিলক বর্মা, টিম ডেভিড, জেরাল্ড কোয়েৎজি, আকাশ মাধোয়াল, নমন ধীর, নেহাল ওয়াধেরার উপরে। এ বার সেই দলে রোহিত শর্মা, যশপ্রীত বুমরা, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পাণ্ড্যের মতো ক্রিকেটার থাকায় তাদেরও প্রতিভাবানদের ছাড়তে হবে। কলকাতার ক্ষেত্রে হর্ষিত রানা, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী, রমনদীপ সিংহ, রিঙ্কু সিংহ, বরুণ চক্রবর্তীর উপর বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এই দলগুলি প্রায় সারা বছর কোনও না কোনও সময়ে শিবির করে থাকে। নিয়মিত ক্রিকেটারদের ফিটনেসের খবর রাখে। তাদের খাবারদাবারের তালিকা তৈরি করে দেয়। অ্যাকাডেমিতে বছরের যে কোনও সময়ে অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখনকার নিয়ম বজায় থাকলে বিনিয়োগ করা ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হবে। মেগা নিলাম চাওয়া দলগুলি সংখ্যায় খুবই কম। তারা নিলাম করার পক্ষে জোরদার যুক্তি দিতে পারেনি।
এ ছাড়া, আলোচনা হয়েছে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়ম নিয়েও। এই নিয়মে আরও বেশি ভারতীয়কে সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কার্যক্ষেত্রে কিছু কিছু দল বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মের বিরোধিতা করেছেন রোহিত শর্মা।