New Zealand tour of India 2024

১২১-এ শেষ! ফের লজ্জার হার রোহিত-বিরাটদের, ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে ভারত চুনকাম, এই নিয়ে দু’বার

২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ়ের দু’টি টেস্টই হেরেছিল ভারত। তার ২৪ বছর পর আবার ঘরের মাঠে সিরিজ়ের সব টেস্ট হারলেন রোহিতেরা। এ বার নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে লজ্জার হার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৩
Share:

(বাঁদিকে) বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।

বেঙ্গালুরুতে ৪৬ রানে অলআউট হওয়া ভারতীয় দল ওয়াংখেড়ের ২২ গজে চতুর্থ ইনিংসে কত রান করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় ছিলই। রবিবার সেই সংশয়ে সিলমোহর দিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মতো ভারতীয় ক্রিকেটের মহারথীরা। নিউ জ়িল্যান্ডের দেওয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঘরের মাঠে ভারতীয় ব্যাটারেরা সাজঘরে ফেরার শোভাযাত্রা তৈরি করলেন। দলের ব্যাটিং ধস সামলে একা লড়াই করলেন ঋষভ পন্থ। তাঁর ৬৪ রানের ইনিংস শেষ হল বিতর্কিত সিদ্ধান্তে। লাভ হল না অবশ্য। নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে আড়াই দিনে ভারত তৃতীয় টেস্ট হারল ২৫ রানে। ১২১ রানেই শেষ হয়ে গেল রোহিতদের ইনিংস।

Advertisement

২৪ বছর পর দেশের মাঠে টেস্ট সিরিজ়ে চুনকাম হল ভারতীয় দল। ২০০০ সালে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা দুই টেস্টের সিরিজ় ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল ভারতের মাটিতে। এই প্রথম নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ় হারল ভারত।

বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল! বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। স্পিন বলের বিরুদ্ধে বিশ্বের সেরা ভারতীয় ব্যাটারেরা? বলা যাচ্ছে না। এবি ডিভিলিয়ার্স কয়েক দিন আগে ঠিকই বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয়েরা সবচেয়ে ভাল স্পিন খেলে, এটা একটা ধারণা মাত্র।’’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ফেরা রোহিতেরা ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে সহজে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের শীর্ষে ছিলেন। সেই আত্মবিশ্বাসের আড়ালে ক্রিকেটীয় দক্ষতায় যে মরচে ধরে গিয়েছে, তা সম্ভবত বুঝতে পারেননি রোহিত, বিরাটেরা। ভারতীয় দলের দুই সিনিয়রতম ব্যাটারকেই ভরসা করা যাচ্ছ না। কখনও অবিবেচকের মতো নিজেদের উইকেট ছুড়ে দিচ্ছেন। কখনও তাঁদের ক্রিকেটীয় দক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে। সেই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমন গিল, সরফরাজ় খানদের মতো জুনিয়রদের মধ্যেও। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারেরা দায়িত্বজ্ঞানহীন ক্রিকেটের যে প্রদর্শনী সাজালেন, তাতে টেস্ট বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন না দেখাই নিরাপদ হতে পারে।

Advertisement

ওয়াংখেড়ে রোহিত, যশস্বী, সরফরাজ়দের ঘরের মাঠ। প্রতিটি ঘাস তাঁদের চেনা। সেই ২২ গজে তিন জনে এমন ভাবে আউট হলেন, তা অবিশ্বাস্য। রোহিত (১১) এবং সরফরাজ় (১) অকারণ আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিলেন। যশস্বী (৫) বলের লাইন মিস্ করে এলবিডব্লিউ হলেন। শুভমন (১) অজাজ পটেলের বলে জাজমেন্ট দিয়ে বোল্ড হলেন। কোহলি (১) ধরা পড়লেন অজাজেরই স্পিনে। ৭.১ ওভারে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২৯। কারও মধ্যে টেস্ট ইনিংস খেলার ন্যূনতম ধৈর্য দেখা গেল না! সে সময় ৪৬ রানের ‘কীর্তি’ টপকে যাওয়া অসম্ভব মনে হচ্ছিল না। পন্থ এবং রবীন্দ্র জাডেজা সেই লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করলেন ভারতীয় ক্রিকেটকে। ব্যাটিং ধসে কঠিন হয়ে যাওয়া রাস্তায় দলের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন তাঁরা। চাপের মুখে গুটিয়ে থাকেননি পন্থ। প্রয়োজনে আগ্রাসী শট খেলেছেন। জাডেজা ২২ গজের এক দিন আগলে রেখেছিলেন। দু’ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে বেশ সাবধানি ছিলেন। অন্য উপায় অবশ্য তাঁর সামনে ছিল না। তা-ও বেশি ক্ষণ টিকতে পারলেন না। জাডেজাকেও (৬) আউট করলেন অজাজ। আট নম্বরে ব্যাট করতে নামা ওয়াশিংটন সুন্দরের ব্যাটিংয়ে চাপের ছাপ ছিল স্পষ্ট।

পন্থের লড়াই শেষ হল ৬৪ রানে। অজাজের বলে ক্যাচের আবেদন করে নিউ জ়িল্যান্ড। মাঠের আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নেন টম লাথাম। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাট একই সঙ্গে পন্থের প্যাড এবং বলের কাছে এসেছে। আত্মবিশ্বাসী পন্থ দাবি করেন বল তাঁর ব্যাটে লাগেনি। ব্যাট এবং প্যাডের সংঘর্ষের শব্দ ধরা পড়েছে স্নিকোমিটারে। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সাজঘরে ফিরতে হয় উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে। এর পর আর কেউই চাপ সামলাতে পারেননি। রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৮), আকাশ দীপ (শূন্য), ওয়াশিংটনেরা (১২) পর পর আউট হয়ে গেলেন।

মুম্বইয়ের ২২ গজে আবারও বিপজ্জনক হয়ে উঠলেন অজাজ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিলেন নিউ জ়িল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভুত স্পিনার। ৫৭ রানে ৬ উইকেট নিলেন তিনি। তাঁর স্পিন সামলাতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটারেরা। এ ছাড়া গ্লেন ফিলিপস ৪২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। তাঁর বল খেলতেও সমস্যায় পড়েছেন ভারতীয় ব্যাটারেরা। ১০ রানে ১ উইকেট ম্যাট হেনরির।

রবিবার সকালে নিউ জ়িল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৭৪ রানে। ৫৫ রানে ৫ উইকেট নেন জাডেজা। ৬৩ রানে ৩ উইকেট অশ্বিনের। ১টি করে উইকেট পান আকাশ এবং ওয়াশিংটন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement