মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ড সফরে।
স্মৃতি: ইডেনেও জয়ের কারিগর ছিলেন রামাধীন। ফাইল চিত্র।
১৯৫০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ় জয়ের স্মৃতি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে এখনও অমলিন। জয়ের দুই কারিগর ছিলেন আলফ ভ্যালেন্টাইন এবং সোনি রামাধীন। রবিবার চলে গেলেন সেই কিংবদন্তি স্পিনার। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
যাঁর সম্পর্কে প্রয়াত ধারাভাষ্যকার এবং ক্রিকেট ঐতিহাসিক টোনি কোজ়িয়ারের উক্তি ছিল, “ওরা ছিল একে অপরের যোগ্য পরিপূরক। মাথায় ক্যাপ, পুরো হাতা জামা পরে কব্জির মোচড়ে গোটা সিরিজ়ে রামাধীন স্পিনের যে জাদু দেখিয়েছিল, তা ইংল্যান্ড শিবিরের কাছে অপার রহস্যই রয়ে গিয়েছিল।”
রামাধীনের জন্ম ১৯২৯ সালে ত্রিনিদাদের সেন্ট চার্লসে। দেশের হয়ে খেলেছিলেন ৪৩টি টেস্ট। উইকেট ছিল ১৪৩। মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৫০ সালে ইংল্যান্ড সফরে। তাঁর সঙ্গে নাম জড়িয়ে রয়েছে ইডেনেরও। ১৯৫৮ সালে ভারত সফরে কলকাতায় পলি উমরিগড়ের দলকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়েছিল এক ইনিংস এবং ৩৩৬ রানে। রামাধীন নেন নরি কন্ট্রাক্টর এবং সুভাষ গুপ্তের উইকেট। তবে মুম্বইয়ে প্রথম টেস্টে তিনি কোনও উইকেট পাননি।
অফস্পিন করালেও একই বোলিং অ্যাকশনে লেগস্পিন করাতেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন রামাধীন। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অভিষেক টেস্ট ছিল হতাশার। দুই ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ হারে। দুই ইনিংসে দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন রামাধীন।
ছবিটা পাল্টে যায় লর্ডসে। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ছিল ৩২৬। জবাবে ইংল্যান্ড শেষ ১৫১ রানে। রামাধীন ৬৬ রানে পাঁচ উইকেট নেন। ৬০১ রান তাড়া করে জেতার পথে ইংল্যান্ড শিবিরে আশা জাগিয়েছিলেন শিরিল ওয়াশব্রুক। তিনি ১১৪ রান করেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে এই কিংবদন্তি স্পিনার ৭২ ওভার বোলিং করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৬ রানে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে এনে দেন জয়। যে স্মরণীয় মুহূর্ত উদযাপন করতে ক্যালিপসো সুরকার লর্ড কিচেনার গান লিখেছিলেন, “দোজ় টু লিটল পালস অব মাইন/রামাধীন অ্যান্ড ভ্যালেন্টাইন।”