উইকেট নেওয়ার পরে উল্লাস কুলদীপ যাদবের। ছবি: রয়টার্স।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে ও পরে সম্পূর্ণ উল্টো দৃশ্য। আগে যেখানে ইংল্যান্ডের ব্যাটারেরা সাবলীল ব্যাট করছিলেন, পরে সেখানেই বেসামাল হয়ে পড়লেন তাঁরা। কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণির কোনও জবাব তাঁদের কাছে ছিল না। চা বিরতির আগেই ৫ উইকেট নিলেন কুলদীপ। কুলদীপকে সঙ্গ দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা। অশ্বিন নিলেন ৪ উইকেট। জাডেজার খাতায় গেল ১ উইকেট। তাঁদের দাপটে খেই হারাল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। চা বিরতির আগেই ইংল্যান্ডকে অল আউট করার সুযোগ ছিল ভারতের। কিন্তু বেন ফোকস ও শোয়েব বশির তা আটকে রাখেন। চা বিরতির পরেই অবশ্য ২১৮ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ড।
চা বিরতির ঠিক আগেই ওলি পোপকে আউট করেছিলেন কুলদীপ। বিরতির পরে দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেতে পারতেন তিনি। তাঁর বল জ্যাক ক্রলির ব্যাটের কানায় লেগে হাওয়ায় ওঠে। ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেন সরফরাজ় খান। আম্পায়ার আউট দেননি। সরফরাজ় অনেক আবেদন করলেও রোহিত রিভিউ নেননি। পরে দেখা যায় ক্রলি আউট ছিলেন।
ক্রলিকে আউট করতে অবশ্য বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি কুলদীপকে। তাঁর বল অফ স্টাম্পের বাইরে পরে ক্রলির ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে উইকেটে গিয়ে লাগে। ৭৯ রানে আউট হন ক্রলি। নিজের শততম টেস্ট খেলতে নেমে জনি বেয়ারস্টো শুরু থেকেই বড় শট খেলার মানসিকতা নিয়ে নেমেছিলেন। দু’টি ছক্কাও মারেন তিনি। কিন্তু বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। ২৯ রান করে কুলদীপের বলে আউট হন। ভাল ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল।
পরের ওভারেই জো রুটকে আউট করেন রবীন্দ্র জাডেজা। রুট ভেবেছিলেন বল ঘুরবে। কিন্তু বল সোজা প্যাডে গিয়ে লাগে। ২৬ রান করেন রুট। চলতি সিরিজ়ে আরও এক বার ব্যর্থ হলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। কুলদীপের বল বুঝতেই পারলেন না তিনি। পিছনের পায়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হলেন শূন্য রানে। ১৭৫ রানের মাথায় তিনটি উইকেট পড়ল ইংল্যান্ডের।
কুলদীপ, জাডেজার পরে উইকেট নেন অশ্বিনও। নিজের শততম টেস্ট খেলতে নেমে টম হার্টলিকে আউট করেন তিনি। ভাল ক্যাচ ধরেন দেবদত্ত পড়িক্কল। সেই ওভারেই আউট হন মার্ক উড। চা বিরতির আগেই ইংল্যান্ডকে অল আউট করার সুযোগ ছিল। কিন্তু দু’টি ক্যাচ মিস হওয়ায় তা হয়নি।
চা বিরতির পরে দু’টি ওভারে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন ফোকস। কিন্তু বেশি ক্ষণ খেলতে পারেননি তিনি। ইংল্যান্ডের বাকি দু’টি উইকেট তুলে নেন অশ্বিন। ২১৮ রানে শেষ হয় স্টোকসদের ইনিংস। শততম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪টি উইকেট নেন অশ্বিন।
অথচ শুরুটা ভাল হয়েছিল ইংল্যান্ডের। যশপ্রীত বুমরার বল শুরুতে একটু সুইং করছিল। কিন্তু ক্রিজ়ে বাউন্স কম থাকায় সামলাতে সমস্যা হচ্ছিল না ইংরেজ ব্যাটারদের। তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন খারাপ বলের। কোনও বল ব্যাটের গোড়ায় পেলে বড় শট খেলতে ভয় পাচ্ছিলেন না বেন ডাকেট ও ক্রলি। ফলে রান উঠছিল।
দুই পেসারের প্রথম স্পেলের পরে স্পিনারদের হাতে বল তুলে দেন রোহিত। প্রথমে অশ্বিন। পরে কুলদীপ। অশ্বিনের বল সাবধানে খেলেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। ঝুঁকি নেননি। কিন্তু কুলদীপের প্রথম ওভারেই বড় শট খেলতে যান ডাকেট। ব্যাটে-বলে হয়নি। পিছন দিকে বেশ খানিকটা দৌড়়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেন শুভমন গিল। ২৭ রানে ফেরেন ডাকেট। ক্রলি ভাল খেলছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দেন ওলি পোপ। হাত জমে যাওয়ার পরে রান তোলার গতি বাড়ান ক্রলি। অশ্বিনের বলে সামনে বিশাল ছক্কা মারেন। মধ্যাহ্নভোজের আগেই অর্ধশতরান করেন ক্রলি। বিরতির ঠিক আগেই ইংল্যান্ডকে আরও একটি ধাক্কা দেন কুলদীপ। তাঁর বলে ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে ১১ রানের মাথায় স্টাম্প আউট হন পোপ।