কিরণ নবগিরে। ছবি: টুইটার
দ্রুত বদলাচ্ছে মহিলাদের ক্রিকেট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দৌলতে মহিলা ব্যাটাররাও এখন পাওয়ার ব্যাটিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। ভারতীয় দলে একাধিক আগ্রাসী ব্যাটার থাকলেও, সে অর্থে পাওয়ার ব্যাটার নেই। আগামী দিনে সেই জায়গা নিতে পারেন কিরণ নবগিরে।
দ্রুত তিন বা চার উইকেট পড়ে গেলে কে প্রতি আক্রমণে বিপক্ষের বোলিং আক্রমণকে দিশেহারা করতে পারবেন? দীর্ঘ দিনের এই প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত পেয়ে গেল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। মহিলাদের টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জারে ঝড় তুলেছেন কিরণ। উইকেটের সব দিকে শট নিতে পারেন। তাঁর পাওয়ার ব্যাটিং ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে।
মিতালি রাজ, স্মৃতি মান্ধানা, হরমনপ্রীত কাউর, শেফালি বর্মারা সকলেই মূলত ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে ব্যাট করেন। চার বা পাঁচ নম্বরের মধ্যেই সাধারণত নামেন তাঁরা। কিন্তু ছয়, সাত নম্বরে ব্যাট করে প্রতিপক্ষ শিবিরে পাল্টা আক্রমণ পৌঁছে দেওয়ার মতো ব্যাটার না থাকা ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম দুর্বলতা। বিশেষ করে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের দৌলতে মহিলাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও যখন দ্রুত বদলাচ্ছে ব্যাটিংয়ের কৌশল। এখন বিভিন্ন দলেই নিচের দিকে এমন ব্যাটাররা আছেন, যাঁরা অনায়াসে বাইন্ডারি লাইনের বাইরে পাঠাতে পারেন বল।
নবগিরে আদতে মহারাষ্ট্রের ক্রিকেটার। কিন্তু রাজ্য দলে তেমন সুযোগ না পাওয়ায় গত বছর তিনি চলে যান নাগাল্যান্ডে। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ডান হাতি ব্যাটারকে। নাগাল্যান্ডের হয়ে মহিলাদের জাতীয় টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় করেছেন ৫২৫ রান। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৭৩। অরুণাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে করা তাঁর ৭৬ বলে অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংসই এখন কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে কোনও ভারতীয় ব্যাটারের সর্বোচ্চ। বিরাট কোহলী, রোহিত শর্মাদেরও এই কৃতিত্ব নেই। টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জারেও মাতিয়ে দিচ্ছেন নবগিরে। প্রতিযোগিতায় দ্রুততম অর্ধশতরানের কৃতিত্বও এখন তাঁর ঝুলিতে। ভেলোসিটির হয়ে ৬৯ রানের ইনিংসে নবগিরের স্ট্রাইক রেট ছিল ২০০-র বেশি।
নবগিরের বাবা কৃষক। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা এবং দুই ভাই। কোথা থেকে পেলেন এমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মন্ত্র? সতীর্থ ইয়াসিক্তা ভাটিয়াকে নবগিরে বলেছেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বিশ্বকাপ জেতানো ছয় দেখেই এমন ব্যাটিংয়ের কথা তাঁর মাথায় আসে।
কিন্তু হাতে এত জোর! এর পিছনে রয়েছে অন্য কারণ। ব্যাট হাতে ঝড় তুললেও নবগিরের প্রথম প্রেম কিন্তু ক্রিকেট নয়। অ্যাথলেটিক্স। পুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে জ্যাভলিন থ্রো, শট পাট এবং ১০০ মিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছেন বেশ কিছু প্রতিযোগিতায়। জাতীয় ক্রিকেটে সাফল্যের জন্য সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জারে। এখন তাঁকে নিয়েই নতুন স্বপ্ন দেখছে ভারতের মহিলা ক্রিকেট। প্রতিপক্ষ শিবিরে পাল্টা লড়াই পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।