ICC Women's World Cup

ICC Women's World Cup: পাঁচ বছর ধরে প্রস্তুতি ঝুলনের, তৈরি রিচাও, বিশ্বকাপে স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায় দুই বঙ্গকন্যা

বিশ্বকাপে ভারতের অভিযান শুরুই হচ্ছে মহারণ দিয়ে। ৬ মার্চ প্রথম ম্যাচই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৪
Share:

বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরতে চান ঝুলন। কিংবদন্তি পেসার ভারতীয় দলের ভরসা। ডান দিকে, লকডাউনের মধ্যে বাড়িতেই প্রস্তুতি শুরু রিচার।

পাঁচ বছরের অপেক্ষার পরে ফের অধরা স্বপ্নপূরণের সামনে ঝুলন গোস্বামী। ২০১৭-তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে হেরে রানার-আপ হিসেবে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়েছিল ভারতের। অতিমারির জন্য গত বছর আয়োজন করা যায়নি মেয়েদের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। এ বার যা হচ্ছে নিউজ়িল্যান্ডে ৪ মার্চ থেকে। ৩৯ বছরের কিংবদন্তি পেসারের বিশ্বকাপ জেতার হয়তো এটাই শেষ সুযোগ।

Advertisement

ঝুলন মনে করছেন, বিশ্বকাপের আগে নিউজ়িল্যান্ডের মাটিতে ভারত যে পাঁচটি ওয়ান ডে খেলবে, সেটাই দলের জন্য সেরা প্রস্তুতি। বলছিলেন, ‘‘ভারতে থেকে নিউজ়়িল্যান্ডের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দলের সবচেয়ে বড় সুবিধে একটাই, প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে বিশ্বকাপের দেশে পাঁচটি ওয়ান ডে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। বাকিদের চেয়ে অনেক আগে থেকেই ওখানে থাকব আমরা। তাই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময়টা পেয়ে যাব।’’

ঝুলনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এটাই কি তাঁর শেষ বিশ্বকাপ? দ্রুত জবাব আসে, ‘‘সে সব নিয়ে বলতে চাই না। তবে আসন্ন বিশ্বকাপ আমার কাছে সত্যিই বিশেষ এক প্রতিযোগিতা। শেষ পাঁচ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার কথা ভেবে প্রস্তুতি নিয়েছি। এই বিশ্বকাপ কোনও ভাবেই হাতছাড়া হতে দিতে চাই না।’’ সচিন তেন্ডুলকর বহু অপেক্ষার পরে ২০১১-তে শেষ বারে এসে বিশ্বকাপের অধরা স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন। ঝুলনের ক্ষেত্রেও একই ছবি দেখা যায়
কি না, দেখার।

Advertisement

বিশ্বকাপে ভারতের অভিযান শুরুই হচ্ছে মহারণ দিয়ে। ৬ মার্চ প্রথম ম্যাচই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রতি দারুণ বোলিং করে আসা ঝুলন বলে দিচ্ছেন, ‘‘যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা আছে আমাদের। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ় জিততে না পারলেও দল হিসেবে আমরা খুব ভাল খেলেছি। প্রত্যেকটা ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। তখনই বুঝেছি, নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারলে আমাদের হারানো কঠিন।’’

বাংলার আর এক কন্যা রিচা ঘোষের এটাই প্রথম ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা। অতিমারির মধ্যে কোনও মাঠেই ট্রেনিং করতে যেতে পারছেন না। বাড়িতে ছোট্ট একটি কংক্রিটের পিচ রয়েছে। সেখানেই বাবার সঙ্গে চলছে তাঁর প্রস্তুতি। বিশেষ অনুমতি পেয়ে এই সপ্তাহ থেকেই শিলিগুড়ির বাঘাযতীন ক্লাবে কয়েকজন বোলারকে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন প্রতিভার। রিচার সবচেয়ে বড় স্বস্তি, দলে ‘ঝুলনদি’র উপস্থিতি। এত বড় মঞ্চে সফল হওয়ার জন্য কী কী জরুরি, তা ঝুলনের থেকেই শিখে নিতে মরিয়া তিনি। বলছিলেন, ‘‘নিউজ়িল্যান্ডের পরিবেশ একেবারেই আলাদা। ওখানে কখনও খেলিনি। ঝুলনদির অভিজ্ঞতা আছে সে দেশে খেলার। ওর থেকে অবশ্যই পরামর্শ নেব।’’ যোগ করেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় দু’মাস বিগ ব্যাশ খেলেছি। বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার কোনও সমস্যা হয় না। বরং স্বচ্ছন্দেই থাকি।’’ তবে নিউজ়িল্যান্ডে বল সুইং করবে। ব্যাটার এবং উইকেটকিপার হিসেবে সেটাই বড় পরীক্ষা। বলছেন, ‘‘সুইংয়ের মোকাবিলা কী ভাবে করা যায়, সেটা দ্রুত রপ্ত করতে হবে। শুধু ব্যাটার নয়, বল সুইং করলে কিপার হিসেবেও মানিয়ে নিতে হয়। যত দ্রুত সেটা পারা যায়, ততই ভাল।’’

মেয়েদের ওয়ান ডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ঝুলন। সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ছ’শোর বেশি উইকেটের মালকিন। কলকাতায় করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তার মধ্যেই যতটা সম্ভব দূরত্ববিধি মেনে প্রত্যেক দিন ভোরবেলা ট্রেনিং করতে বেরিয়ে পড়ছেন তিনি। এমন সময় ট্রেনিং করছেন, যখন মাঠে কেউ আসেন না। সিএবি-র জিমেও যাচ্ছেন ফাঁকা থাকাকালীন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সল্ট লেক ক্যাম্পাসের মাঠে ট্রেনারের সঙ্গে প্রত্যেক দিন দু-তিন ঘণ্টা ট্রেনিংয়ের পরে ফিরে আসছেন বাড়ি। লক্ষ্য একটাই, বিশ্বকাপের স্বপ্নপূরণ করা। যা অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছিল শেষ বার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement