পার্থ টেস্ট জয়ের দুই নায়ক। যশপ্রীত বুমরা (বাঁ দিকে) ও যশস্বী জয়সওয়াল। ছবি: পিটিআই।
দু’ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট নিয়েছেন যশপ্রীত বুমরা। পার্থে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বুমরা চান যশস্বী জয়সওয়ালকে ম্যাচের সেরার পুরস্কার দিতে। কেন দলের তরুণ ব্যাটারের নাম করলেন ভারতের অধিনায়ক?
পার্থে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬১ রানের ইনিংস খেলেছেন যশস্বী। এটিই তাঁর প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফর। সেখানে প্রথম টেস্টেই তিন অঙ্কে পৌঁছেছেন তিনি। বুমরার চোখে এটি যশস্বীর টেস্ট কেরিয়ারে খেলা সেরা ইনিংস। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বুমরা বলেন, “আমার চোখে এটা যশস্বীর সেরা টেস্ট ইনিংস। কারণ, প্রথম ইনিংসে ও রান পায়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে ও খেলার ধরন বদলেছে। যশস্বী আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার। সে ভাবেই ও সাফল্য পেয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ও প্রথম দিকে ধরে খেলেছে। ওর স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে ব্যাট করেছে। এটা ওর প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফর। সেখানে শুরুতেই ও দেখিয়েছে যে ও কতটা পরিণত। আমি হলে ওকে ম্যাচের সেরা বাছতাম।”
এই টেস্টে ভারতের হয়ে শতরান করেছেন আরও এক ব্যাটার। বিরাট কোহলি। দীর্ঘ দিন ব্যাটে বড় রান ছিল না কোহলির। তা নিয়ে অবশ্য চিন্তা ছিল না দলের। বুমরা জানিয়েছেন, কোহলি ভাল খেললেও রান পাচ্ছিলেন না। তাঁরা জানতেন তিনি খুব তাড়াতাড়ি রান পাবেন। বুমরা বলেন, “কোহলির এটা চার নম্বর অস্ট্রেলিয়া সফর। এখানকার উইকেট ওর থেকে ভাল কেউ বোঝে না। ওর আমাদের দরকার নেই। ওকে আমাদের দরকার। কোহলি ভালই খেলছিল। বড় রান আসছিল না। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত একটা বলে ও আউট হয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে যে শুরুটা পেয়েছে সেটা ও কাজে লাগিয়েছে। সিরিজ়ের শুরুতে কোহলি শতরান পেয়ে যাওয়ায় আমাদের সুবিধা হল।”
পার্থে অভিষেক হয়েছে নীতীশ রেড্ডি ও হর্ষিত রানার। দু’জনেই নজর কেড়েছেন। নীতীশ দুই ইনিংসেই রান করেছেন। উইকেট নিয়েছেন। হর্ষিতও উইকেট নিয়েছেন। দুই তরুণকে নিয়ে আশা দেখছেন বুমরা। এই টেস্টে ভারতের অধিনায়ক বলেন, “ওদের দেখে মনে হয়নি ওরা প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছে। শুরু থেকেই ওদের আত্মবিশ্বাস ছিল। ওরা কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে চাইছিল। প্রথম টেস্ট খেলতে নামা ক্রিকেটারদের মনে ভয় থাকলে সেই ভয় দূর করা যায় না। ওদের মনে কোনও ভয় ছিল না। ওরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে।”
পার্থে এর আগেও খেলেছেন বুমরা। তবে সেটি অন্য মাঠে। এই মাঠে ভারত প্রথম বার খেলতে নামল। পার্থের উইকেটে পেসারেরা সাহায্য পান। কিন্তু এই পিচ তুলনায় অনেক সহজ ছিল বলে জানিয়েছেন বুমরা। তিনি বলেন, “২০১৮-১৯ সফরে পার্থে খেলেছিলাম। সেই পিচে গতি বেশি ছিল। খেলা যত গড়িয়েছিল পিচ তত দ্রুত হয়েছিল। কিন্তু এই পিচে প্রথম দিনই বোলারদের জন্য সুবিধা ছিল। তৃতীয় দিনের পর রোদের কারণে পিচ ভাঙতে শুরু করে। ফলে অসমান বাউন্স দেখা যাচ্ছিল। আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছি। তাই সফল হয়েছি।”
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। তার পরেও দলের কোনও ক্রিকেটার ভয় পাননি বলেই জানিয়েছেন বুমরা। প্রত্যেকের আত্মবিশ্বাস ছিল যে তাঁরা ফিরতে পারবেন। সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লেগেছে ভারতের। এর পর গোলাপি বলের টেস্ট। গত সফরে অ্যাডিলেডে দিন-রাতের এই টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। এখন অবশ্য দ্বিতীয় টেস্টের কথা ভাবছেন না বুমরা। আপাতত বিশ্রাম নিয়ে তার পর দ্বিতীয় টেস্টের পরিকল্পনা শুরু করতে চান তিনি।