লক্ষ্য: দলের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে চান চন্দ্রকান্ত। ফাইল চিত্র।
বিদর্ভ, মধ্যপ্রদেশের মতো দলকে এক সময় ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে দেখা হত ঘরোয়া ক্রিকেটে। চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের হাতে সেই দু’টি দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দু’টি দল অন্যতম শক্তিশালী। চন্দ্রকান্তের কোচিংয়ে প্রথম বারের মতো রঞ্জি ট্রফি জিতেছিল তারা। শেষ বারই মধ্যপ্রদেশকে প্রথম বারের মতো রঞ্জি ট্রফি দেন ঘরোয়া ক্রিকেটের ‘পণ্ডিতমশাই’। সেই সঙ্গেই মুম্বইয়ের কোচ হিসেবে জিতেছেন তিনটি রঞ্জি ট্রফি। বিদর্ভকে জিতিয়েছেন দু’বার। বর্তমানে তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ। মরসুম শুরু হওয়ার আগেই তাঁর সাফ বার্তা, ‘‘দলকে ট্রফি দেওয়ার দায়িত্ব এ বার আমার।’’
গত মরসুমে নাইটদের ম্যাচ দেখে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক বার করে এনেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে জ়ুম কলের মাধ্যমে আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলছিলেন, ‘‘আইপিএলের বাকি দলগুলোর চেয়ে কেকেআর অনেক বেশি আগ্রাসী। জেতার মরিয়া চেষ্টা রয়েছে দলের সকলের মধ্যে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমার দায়িত্ব এ বার দলকে তৃতীয় আইপিএল ট্রফি পাইয়ে দেওয়া। তার জন্য সব রকম চেষ্টা করতে চাই।’’
নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারকে আগেও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন চন্দ্রকান্ত। মুম্বইয়ের কোচ থাকাকালীন শ্রেয়স তাঁর দলে খেলতেন। নাইট অধিনায়কের মধ্যে শুরু থেকেই ভয়ডরহীন মানসিকতা দেখতে পেয়েছিলেন কোচ। চন্দ্রকান্তের কথায়, ‘‘ওকে কখনও ভয় পেতে দেখিনি। যখন ছোট ছিল, তখনও বিপক্ষকে দেখে চাপে পড়ে যেত না। সত্যি বলতে, কেকেআরের মধ্যে ভয়ডরহীন মানসিকতা হয়তো ওর হাত দিয়েই এসেছে শেষ মরসুমে। এটাই আমাদের সাহায্য করবে। আমি চাইব, আমাদের দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়া যেন ঠিক মতো তৈরি হয়।’’
চন্দ্রকান্তের কোচিংয়ের পদ্ধতি খুবই পছন্দ করেন কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর। সম্প্রতি মুম্বইয়ের এক সংবাদপত্রে তিনি বলেছেন, ‘‘চন্দ্রকান্ত একেবারে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেকেআরের কোচ হয়ে। এমন সব দলকে ও ট্রফি জিতিয়েছে, যাদের কথা আগে ভাবাই হত না।’’ গাওস্করের এই মন্তব্য খুবই উদ্বুদ্ধ করেছে চন্দ্রকান্তকে। তাঁর কোচিংয়ের মূল মন্ত্র হল শৃঙ্খলা। শেষ বার মধ্যপ্রদেশ দলকে প্র্যাক্টিসের সময়ও ম্যাচের সাদা জার্সি পরে নামতে হত। অনুশীলনে কোনও রকম হাফ প্যান্ট তিনি বরদাস্ত করতেন না। কিন্তু এ বার বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে তাঁকে। আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনদের উপরেও কি একই নিয়ম খাটানো সম্ভব? নাকি তাঁদের জন্য অন্য কিছু ভেবেছেন নাইট কোচ? চন্দ্রকান্তের উত্তর, ‘‘নিয়ম কিন্তু সকলের জন্য এক। তবে রঞ্জি দলকে যে ভাবে চালানো যায়, সে ভাবে তো আইপিএল দল গড়া সম্ভব নয়। তবে ভাল ক্রিকেট খেলতে গেলে শৃঙ্খলা সবচেয়ে জরুরি।’’ যোগ করেন, ‘‘ওদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে যেতে হবে আমাকে। এমন কিছু নিয়ম তৈরি করব না, যা দলের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি করবে।’’
রাসেল, নারাইনরা দলের সম্পদ। কিন্তু চন্দ্রকান্ত জনপ্রিয় নতুন ক্রিকেটার তুলে আনার জন্য। নাইট পরিবারে শেষ কয়েক বছরে বাংলার কোনও ক্রিকেটারকে দেখা যায়নি। তবে চন্দ্রকান্তের আশ্বাস, বাংলা থেকেও ক্রিকেটার উঠবে। বলছিলেন, ‘‘নিয়মিত শিবির আয়োজন করার চেষ্টা করা হচ্ছে কলকাতায়। বাংলা থেকে ক্রিকেটার তুলে আনার প্রকল্পও শুরু হয়ে গিয়েছে।’’