শাকিব আল-হাসান। ফাইল চিত্র।
আইপিএলের শেষ বেলায় কিছুটা চমকে দিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দেড় কোটি টাকায় তাঁরা কিনে নিল শাকিব আল-হাসানকে। এই নিয়ে চতুর্থ বার কেকেআরে ফিরলেন শাকিব। দলে আসেন, আবার নিলামে তুলে দেওয়া হয়। গত এক বছরে শাকিব এমন কিছু পারফরম্যান্স করেননি দেশের হয়ে, যা তাঁকে আইপিএলে সুযোগ করে দেবে। তবু কেকেআরের তাঁকে নেওয়ার প্রধান কারণ, বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগগুলিতে খেলার অভিজ্ঞতা এবং মিডল অর্ডারে বিকল্প তৈরি রাখা।
শাকিবকে দলে নেওয়ার পরেই আইপিএল ট্রফি হাতে তাঁর একটি ছবি পোস্ট করেছে কেকেআর। সেটি ২০১৪ সালে তোলা। সে বারই শেষ ট্রফি এসেছিল কেকেআরের ক্যাবিনেটে। সেই প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন শাকিব। মাঝের সারিতে তাঁর দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা এবং মাঝের দিকের ওভারে এসে কম রান দেওয়া— এই দু’টি ব্যাপারই তাঁর পক্ষে যায়।
পরের দিকে আরও পরিণত হয়েছেন শাকিব। বাংলাদেশের অধিনায়ক হয়েছেন। দলকে সুনিপুণ ভাবে চালনা করছেন। বাংলাদেশ এখন যে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় খেলছে, সেখানেও নেতা শাকিবই। বিপদের সময় বার বার বাংলাদেশ তাঁর উপরেই ভরসা করেছে। শাকিব নিরাশ করেননি কোনও বারই। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ হয়তো সে ভাবে জ্বলে উঠতে পারেনি। কিন্তু শাকিব আলাদা করে নজর কেড়ে নিয়েছেন। সে কারণেই এখনও আইসিসি-র টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারদের তালিকায় সবার উপরে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম।
২০২২-এ টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে মোট ১৫টি ম্যাচ খেলেছেন শাকিব। রান করেছেন ৩৪৯। অর্ধশতরান রয়েছে তিনটি। উইকেট পেয়েছেন তিনটি। পরিসংখ্যানের বিচারে মোটেই আকর্ষণীয় নয়। তবে শাকিবকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে তাঁর অভিজ্ঞতা। দেশের হয়ে খেলা না থাকলে বিশ্ব ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগে খেলেন শাকিব। কিছু দিন আগেই বাংলা টাইগার্সের হয়ে আবু ধাবি টি-টোয়েন্টি লিগে খেলে এসেছেন। তার আগে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন। প্রতিটি প্রতিযোগিতাতেই শাকিবকে কেউ বসানোর সাহস পান না। তিনি থাকেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে।
অথচ কেকেআরে থাকার সময়ে অনেক ম্যাচেই বসতে হয়েছে তাঁকে। দলের কম্বিনেশন ঠিক রাখতে গিয়ে ডাগআউটে থাকতে হয়েছে। কারণ তিনি বিদেশি। আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনরা বরাবরই গুরুত্ব পেয়েছেন। এ বারও যা দল হয়েছে, তাতে খুব অঘটন না হলে শাকিবের বাইরে বসারই কথা। মাঝে কোনও ম্যাচে সুযোগ পেলে সেখানে জ্বলে উঠতে হবে তাঁকে।
গত মরসুমে অলরাউন্ডারদের সাহায্য সে ভাবে পায়নি কেকেআর। জ্বলে উঠতে পারেননি রাসেল। এ বার তাঁর ডেভিড উইজ়াকে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন শাকিব। রাসেলের ছন্দ দেখা না গেলে প্রথম একাদশে শিকে ছিঁড়তে পারে বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের। কেকেআর দল পরিচালন সমিতিও সেটা ভেবেই তাঁকে নিয়েছে। অতীতে কলকাতায় খেলে গেলেও শুধুমাত্র ইডেন গার্ডেন্স, দর্শক এবং দলের মালিক বাদে বাকি সবই বদলে গিয়েছে। শাকিবের সঙ্গে কলকাতার আত্মিক সম্পর্কও রয়েছে। আপাতত প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়াটাই তাঁর কাছে মূল লক্ষ্য।