Under-19 World Cup 2024

বাবা পারেননি, ছেলে রানার্স হলেও মন জিতেছেন, উদয়ের তুলনা শুরু হয়েছে ‘ফিনিশার’ রিঙ্কুর সঙ্গে

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে রানার্স হয়েছে ভারত। অনেক চেষ্টা করেও দলকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেতে পারেননি উদয় সাহারান। কিন্তু মন জিতেছেন তিনি। এখন থেকেই রিঙ্কু সিংহের সঙ্গে তুলনা হচ্ছে তাঁর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪৪
Share:

উদয় সাহারান। —ফাইল চিত্র।

ফাইনালে উঠে বাবার কথা বলেছিলেন উদয় সাহারান। তাঁর খেলার ধরনের নেপথ্যে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন ‘ব্যর্থ’ বাবাকে। নিজে ক্রিকেটার হিসাবে বাবা পারেননি। ছেলের মধ্যে নিজের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেছেন। ছেলে ট্রফির কাছে গিয়ে ফিরে এসেছেন। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কছে হারতে হয়েছে। অধিনায়ক হিসাবে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে উদয়কে। কিন্তু এখন থেকেই তাঁর তুলনা শুরু হয়েছে রিঙ্কু সিংহের সঙ্গে। ছোটদের ক্রিকেটে ‘ফিনিশার’-এর তকমা পেয়ে গিয়েছেন উদয়।

Advertisement

রাজস্থানের গঙ্গানগরের বাসিন্দা সঞ্জীব সাহারানও ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু ক্রিকেটার হিসাবে বেশি দূর এগোতে পারেননি তিনি। এখন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসাবে কাজ করেন। কিন্তু ছেলের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা ছোটবেলাতেই নজরে এসেছিল সঞ্জীবের। তাই ১৪ বছর বয়সে রাজস্থান ছেড়ে পঞ্জাবে চলে যান উদয়। সেখানকার অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন উদয়। চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিতে ইন্ডিয়া বি দলের নেতৃত্ব দেন উদয়। পাঁচ ম্যাচে ২৯৭ রান করে ভারতের বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পান তিনি।

বিশ্বকাপের আগে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ খেলেছেন উদয়। বিশ্বকাপের ঠিক আগেই দক্ষিণ আফ্রিকাতে একটি ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতা খেলে ভারত। সেখানে ইংল্যান্ডও ছিল। সেই প্রতিযোগিতাতেও ভাল খেলেন উদয়। তাঁর উপর ভরসা দেখায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। উদয়কে ভারতীয় দলের অধিনায়ক করা হয়। ভরসার দাম দিয়েছেন এই ডান হাতি ব্যাটার।

Advertisement

শুধু নেতা হিসাবে নন, এক জন ভাল ব্যাটার হিসাবেও নিজেকে তুলে ধরেছেন উদয়। এ বারের বিশ্বকাপে সর্বাধিক রান করেছেন উদয়। সাতটি ম্যাচে তাঁর রান ৩৯৭। ৫৬ গড় ও ৭৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন এই ডান হাতি ব্যাটার। একটি শতরান ও তিনটি অর্ধশতরান করেছেন তিনি। সেমিফাইনালে দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন উদয়। তিনি যখন খেলতে নামেন তখন ১২ রানে ২ উইকেট পড়ে গিয়েছে ভারতের। পরে আরও ২ উইকেট পড়ে যায়। কিন্তু ভয় পাননি উদয়। অহেতুক তাড়াহুড়ো করেননি। সচিন ধাসের সঙ্গে ১৭১ রানের জুটি বেঁধেছেন। ৯৬ রানের মাথায় সচিন আউট হওয়ার পরে একার কাঁধে দলকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছেন। ৮১ রানের মাথায় যখন আউট হয়েছেন তত ক্ষণে দলের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফাইনালে সেই কাজটি করতে পারেননি উদয়।

উদয়ের ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা তাঁকে ফিনিশার-এর তকমা দিয়েছে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন তাঁকে তুলনা করেছেন রিঙ্কুর সঙ্গে। ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন তারকা রিঙ্কু। প্রথমে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও পরে টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করেছেন তিনি। নিজের কাজ চুপচাপ করেন রিঙ্কু। ঠান্ডা মাথায় দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। উদয়ের মধ্যেও সেই ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করেন অশ্বিন।

গত বার যশ ঢুলের নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। কিন্তু তার পর থেকে তেমন নজর কাড়তে পারেননি ঢুল। রঞ্জিতে দিল্লি তাঁকে অধিনায়ক করলেও ভাগ্য বদলায়নি তাদের। উদয়ের সামনেও তাই কড়া চ্যালেঞ্জ। নিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার। ভারতীয় ক্রিকেটে নিজের জায়গা পাকা করার। সেই মন্ত্রেই নিজেকে তৈরি করছেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ অধিনায়ক। একটা একটা পা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান তিনি। যে শিক্ষা তাঁকে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা, সেই শিক্ষাই উদয়ের এগিয়ে যাওয়ার প্রধান অস্ত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement