মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
ভারতের জার্সিতে মহম্মদ শামি শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনালে হারের পর থেকে আর বল করতে দেখা যায়নি বাংলার পেসারকে। শোনা গিয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফিরতে পারেন দলে। কিন্তু তাঁর চোট এখনও সারেনি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে তো শামিকে?
শামির গোড়ালিতে চোট। এই বছর ফেব্রুয়ারিতে অস্ত্রোপচার করানো হয় তাঁর। বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাবও শুরু করেছেন তিনি। গত জুলাইয়ে বল করার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন শামি। কিছু দিন আগে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করার ভিডিয়োও পোস্ট করেন তিনি। ওজন তুলছেন, জিম করছেন শামি। কিন্তু দেশের জার্সিতে তিনি খেলবেন কবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
শোনা গিয়েছিল রঞ্জি ট্রফিতে খেলবেন শামি। বাংলার হয়ে রঞ্জি খেলে নিজের ফিটনেস প্রমাণ করে দেশের জার্সিতে ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তিনি এখনও ম্যাচ খেলার জন্য সুস্থ নন। তাই বাংলার প্রথম দুই ম্যাচের দলে রাখা হয়নি শামিকে। কিছু দিন আগে বাংলার ক্রিকেট সংস্থার বার্ষিক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এক দিনের বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ২৪ উইকেট নেওয়া পেসার। তাঁকে সম্মান জানায় সিএবি। সেখানে শামি বলেন, “মাঠে ফেরার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে চাই না। ১০০ শতাংশ সুস্থ হওয়ার পরেই মাঠে ফিরব।”
শামির চোট যে সারেনি তা বোঝা যায় বাংলা দলে তাঁকে না রাখা দেখেই। সেই সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে শামির অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়েও খেলা হবে না বলে শোনা গিয়েছিল। যদিও সেটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন শামি। এক্স-এ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ছবি তুলে দিয়ে শামি লিখেছিলেন, “এই ধরনের ভিত্তিহীন গুজব কেন ছড়ানো হচ্ছে? আমি কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি। চেষ্টা করছি সুস্থ হয়ে ওঠার। আমার চোটের ব্যাপারে আমিও কিছু বলিনি। ভারতীয় বোর্ডের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। তাই এই সব খবরে কান দেবেন না। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, বেসরকারি সূত্রে পাওয়া খবর আপনারা বিশ্বাস করবেন না। বন্ধ করুন এই সব। ভুয়ো খবর ছড়াবেন না।”
গত বছর বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর জানা গিয়েছিল, শামি চোট নিয়েই খেলেছিলেন। বিশ্বকাপে খেলার সময় প্রতি দিন ইঞ্জেকশন নিতেন। বাংলার পেসারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছিল। শামির এক প্রাক্তন সতীর্থ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেছিলেন, “বাঁ পায়ের গোড়ালিতে দীর্ঘ দিন ধরেই চোট শামির। অনেকেই এটা জানে না যে, বিশ্বকাপের সময় নিয়মিত ইঞ্জেকশন নিত ও। সেই ভাবেই গোটা প্রতিযোগিতা খেলেছিল। এটা বুঝতে হবে যে, বয়স বাড়লে যে কোনও চোট সারতে বেশি সময় লাগে।”
কোনও বোলার সাফল্য পেতে থাকলেও তাঁকে চোট নিয়ে খেলানোর ঝুঁকি নেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বরে বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছিলেন, মুম্বইয়ে চিকিৎসককে দেখানোর পর শামিকে পাঠানো হবে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখানে তাঁর রিহ্যাব (সুস্থতার প্রক্রিয়া) চলবে। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির চোট উদ্বেগজনক নয় বলেই জানা গিয়েছিল বিসিসিআই সূত্রে। কিন্তু তার পরেও এক বছর ধরে ক্রিকেটের বাইরে শামি।
বিশ্বকাপের পর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ড সিরিজ়ে খেলতে পারেননি শামি। এর পর আইপিএল এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। মনে করা হয়েছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ফিরবেন শামি। কিন্তু তা হয়নি। এর পর আশা করা হয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে তাঁকে। কিন্তু সেটাও হল না। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত খেলবে ২২ নভেম্বর থেকে। তার আগে সুস্থ হয়ে দলে যোগ দিতে পারবেন শামি? মাঝে রঞ্জি ট্রফি রয়েছে। সুস্থ হলে সেখানে খেলে নিজের ফিটনেসের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে শামির কাছে।