যশ দয়াল। —ফাইল চিত্র।
রবিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন যশ দয়াল। লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেক হতে পারে বাঁহাতি পেসারের। কিন্তু ৫২১ দিন আগে ছবিটা এ রকম ছিল না। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিংহের কাছে পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা খেয়েছিলেন যশ। হেরেছিল তাঁর দল গুজরাত টাইটান্স। রাতারাতি খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন যশ। এই ঘটনায় তাঁদের গোটা জীবনটাই বদলে গিয়েছিল। পুত্র ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পরে সেই দিনগুলির কথা মনে পড়ছে যশের বাবা চন্দ্রপাল দয়ালের।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে চন্দ্রপাল বলেন, “আমাদের কাছে ওটা একটা বড় দুর্ঘটনা ছিল। রাস্তা দিয়ে যখন হাঁটতাম, পাশ দিয়ে স্কুলের বাস গেলে বাচ্চারা ভিতর থেকে টিটকিরি দিত। বলত, ‘রিঙ্কু সিংহ, রিঙ্কু সিংহ, পাঁচ ছক্কা।’ খুব কষ্ট হত। ওর মা রাধা তো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। যশও খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। গুজরাত ওকে ছেড়ে দেওয়ায় আরও বড় ধাক্কা লেগেছিল।”
যশ অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁরা হাল ছাড়েননি। সারা ক্ষণ পুত্রকে সাহস জুগিয়েছেন তিনি। চন্দ্রপাল বলেন, “যশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিলাম, যত দিন না যশ ভারতীয় দলে সুযোগ পাবে, তত দিন থামব না। ওর পাশে আমরা সব সময় ছিলাম। তার ফল পাচ্ছি।”
পুত্র দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন, এর থেকে বড় পুরস্কার পিতার কাছে কিছু হতে পারে না বলেই মনে করেন চন্দ্রপাল। তিনি বলেন, “এর থেকে বড় মুহূর্ত আর কী হবে? কোনও ক্রিকেটারের কাছে দেশের হয়ে টেস্ট খেলা সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। পুরো কৃতিত্ব যশের। ধাক্কা খেলেও লড়াই ছাড়েনি ও। নিজের কাজ করে গিয়েছে। সমালোচনা কানে নেয়নি। ভাল বল করেছে। তার ফল পেয়েছে।”
২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় যশের। উত্তরপ্রদেশের হয়ে খেলেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মোট ২৪টি ম্যাচ খেলেছেন যশ। ২৮.৮৯ গড়ে নিয়েছেন ৭৬টি উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক খেলে নজর কেড়েছেন এই বাঁহাতি পেসার।
দলীপেও ভাল বল করেছেন যশ। ভারত বি-র হয়ে ভারত এ-র বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ১৬ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে ১ উইকেটে নিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ ওভারে ৫০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ভারতে এখন যে বাঁহাতি পেসারের রয়েছেন তাঁদের মধ্যে যশের সঙ্গে লড়াই চলছিল আরশদীপ সিংহের। কিন্তু লাল বলের ক্রিকেটে আরশদীপ নজর কাড়তে পারেননি। ফলে যশকে সুযোগ দিয়েছেন নির্বাচকেরা।