স্ত্রী রিভাবার সঙ্গে রবীন্দ্র জাডেজা। —ফাইল চিত্র।
আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে স্ত্রীর বিরুদ্ধে করা বাবার সব অভিযোগ অসত্য। এ বার আরও এক বার স্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল রবীন্দ্র জাডেজাকে। রাজকোটে ম্যাচের সেরার পুরস্কার স্ত্রীকেই দিলেন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
রাজকোটে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের ইনিংস খেলেছেন জাডেজা। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫টি উইকেট। ফলে ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন জাডেজা। পুরস্কার পাওয়ার পরে একটি ভিডিয়ো বার্তায় জাডেজা বলেন, “ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া খুব গর্বের। একই টেস্টে শতরানও করেছি। ঘরের মাঠে ম্যাচের সেরা হওয়ার অনুভূতি আলাদা। এই পুরস্কার আমি আমার স্ত্রীকে উৎসর্গ করতে চাই। পর্দার আড়ালে সব থেকে বেশি পরিশ্রম ও করে। আমাকে প্রতি মুহূর্তে উৎসাহ দেয়। ও আমার শক্তি।”
কয়েক দিন আগে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন জাডেজার বাবা। ছেলে সম্পর্কে তিনি বলেন, “সত্যি কথা শুনতে চান? আমার সঙ্গে রবীন্দ্র এবং রিভাবার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি ওদের ফোন করি না, ওরাও করে না। বিয়ের দু’তিন মাস পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। জামনগরে একাই থাকি আমি। ওরা আলাদা বাড়িতে থাকে। একই শহরেও থেকেও দেখা হয় না। আমি জানি না ওর স্ত্রী রবীন্দ্রের উপর কী জাদু করেছে।”
জাডেজার বাবা ওই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোই তাঁর জীবনের মস্ত একটা ভুল ছিল। অনিরুদ্ধসিন বলেন, “ও আমার ছেলে, এটাই এখন আমার সব থেকে বড় যন্ত্রণার জায়গা। ওর বিয়ে না দিলেই ভাল হত। রবীন্দ্র ক্রিকেটার না হলে আরও ভাল হত। তা হলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হত। বিয়ের তিন মাসের মধ্যে রবীন্দ্রের স্ত্রী সব সম্পত্তি ওর নামে লিখে দিতে বলে। আমাদের পরিবারের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দেয় রিভাবা। ও পরিবারের সঙ্গে থাকতে চায়নি। স্বাধীন জীবন চেয়েছিল। আমি ভুল হতে পারি, নয়নাবা (জাডেজার বোন) ভুল হতে পারে, কিন্তু কী করে পরিবারের আরও ৫০ জন ভুল হতে পারে? ওদের সঙ্গে পরিবারের কারও কোনও সম্পর্ক নেই।”
জাডেজার মেয়ের মুখ বহু দিন দেখেননি বলেও দাবি অনিরুদ্ধসিনের। তিনি বলেন, “কোনও কিছু লুকোতে চাই না। গত পাঁচ বছরে নাতনির মুখ দেখিনি। সব কিছুই দেখে রবীন্দ্রর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সব কিছুর মধ্যে ওরা মাথা গলায়। রবীন্দ্রর টাকার দিকে ওদের নজর।”
বাবার করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জাডেজা। তিনি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লিখেছেন, “এটা একটা সাজানো সাক্ষাৎকার। এটাকে পাত্তা দেওয়ার কোনও কারণ নেই। ওই সাক্ষাৎকারে যে জিনিসগুলো বলা হয়েছে, তার কোনও অর্থ নেই। সব মিথ্যে। এক পক্ষের কথা বলা আছে ওখানে। সব অভিযোগ অস্বীকার করছি। আমার স্ত্রীর চরিত্র কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমারও অনেক কথা বলার আছে। কিন্তু সেগুলো সকলের সামনে বলা ঠিক নয় বলেই আমি মনে করি।”
মুখ খুলেছেন রিভাবাও। জাডেজার স্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি গুজরাতের জামনগর উত্তর বিধানসভার বিজেপি বিধায়কও রিভাবা। দলীয় একটি কর্মসূচিতে তাঁকে শ্বশুরের করা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্ন শুনেই বিরক্ত হন রিভাবা। তিনি বলেন, “এখানে আমরা কেন জড়ো হয়েছি? এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি। এখানে পারিবারিক প্রশ্নের জবাব দেব না। আপনাদের কিছু জানার থাকলে আমার সঙ্গে অন্য সময় কথা বলুন। সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দেব। আমারও আনেক কিছু বলার আছে।” স্পষ্ট করে জবাব না দিলেও রিভাবার কথায় স্পষ্ট, তাঁরও অনেক অভিযোগ রয়েছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে।