ম্যাচ জিতে উল্লাস বেঙ্কটেশ, শ্রেয়স, রোহিতদের। ছবি টুইটার
ব্যাটে মূল্যবান ৩৫ রান। বল হাতে মোক্ষম সময়ে দু’টি উইকেট। রবিবারের ইডেন গার্ডেন্স মাতিয়ে দিলেন বেঙ্কটেশ আয়ার। ভারত তথা কেকেআর ক্রিকেটারের অনবদ্য পারফরম্যান্সে এক দিনের সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চুনকাম করল ভারত। রোহিত শর্মার দল রবিবার জিতল ১৭ রানে। সেই সঙ্গে আইসিসি-র টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে চলে এল ভারত।
বিরাট কোহলী এবং ঋষভ পন্থকে বিশ্রাম দেওয়ায় তাঁরা আগেই দল ছেড়ে গিয়েছিলেন। টস করার সময়েই রোহিত চমক দেন। জানান, রবিবারের ম্যাচে ওপেন করতে নামবেন ঈশান কিশন এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়। দলের স্বার্থে তিনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। তবে আদতে দেখা গেল, তিনি নেমেছেন চারে। তিনে পাঠিয়ে দেন শ্রেয়স আয়ারকে। তবে ওপেনিংয়ে সুযোগ দেওয়া হলেও তা কাজে লাগাতে পারলেন না রুতুরাজ। তৃতীয় ওভারেই তুলে মারতে গিয়ে ফিরে গেলেন। ভারতের রান তখন ১০। দ্বিতীয় উইকেটে শ্রেয়স এবং ঈশান বরং অনেক বেশি পরিণত মানসিকতা দেখালেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তাঁরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতের ইনিংস।
জুটি ৫০ পেরনোর পরেই ধাক্কা খেল ভারত। হেডেন ওয়ালশকে তুলে মারতে গিয়ে ফিরলেন শ্রেয়স (২৫)। পরের ওভারেই সাজঘরে ঈশানও (৩৪)। টানা দু’উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। সেই চাপ আরও বাড়ে রোহিতও ফিরে যাওয়ায়। ওপেনার হিসেবে নামা রোহিত চারে নেমে মানিয়ে নিতে পারেননি। একটি চার মারলেও ক্রিজে যেন সেই স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না। ৯৩ রানে চার উইকেট পড়ে যায়।
এরপরেই শুরু হয় সূর্যকুমার এবং বেঙ্কটেশের তাণ্ডব। ১৫ ওভারে এক সময় ভারতের স্কোর ছিল ৯৮। মনে করা হয়েছিল, ১৪০-১৪৫-এর বেশি উঠবে না। কিন্তু সব হিসেব বদলে দিলেন এই দুই ব্যাটার। কোনও ক্যারিবিয়ান বোলারকেই রেয়াত করেননি দু’জনে। কোমরের পাশ দিয়ে হালকা ফ্লিক করে ছয় মারা যেন অভ্যেস করে ফেলেছেন সূর্য। রবিবারও সেই জিনিস দেখা গেল। এমনকী, সবাইকে চমকে দিয়ে বেঙ্কটেশও একই ধরনের শট খেললেন। নন-স্ট্রাইকার সূর্যও অভিনন্দন জানাতে ছুটে এলেন।
ক্যারিবিয়ান বোলারদের ব্যর্থতাকেও দায়ী করতে হবে। ১৫ ওভার পর্যন্ত ভাল বোলিং করে শেষ দিকে এসে বোলিংটাই ভুলে গেলেন তাঁরা। একের পর এক ফুলটস, হাফভলি ভারতের দুই ব্যাটারের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। শেষ পাঁচ ওভারে ৮৬ রান তোলে ভারত। অর্ধশতরান করে নেন সূর্যকুমার। বেঙ্কটেশ অপরাজিত থাকেন ৩৫ রানে।
প্রথম ওভারেই কাইল মেয়ার্সকে ফিরিয়ে ধাক্কাটা দিয়েছিলেন দীপক চাহার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে তুলে নিলেন শে হোপকেও। ৩ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন কিছুটা চাপে। এখান থেকেই খেলার ধরার চেষ্টা করেন নিকোলাস পুরান এবং রভম্যান পাওয়েল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে এই জুটির দাপটে প্রাণ হাতে চলে এসেছিল রোহিতদের। কিন্তু তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে যেন বড্ড আগে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হল। দু’জনেই মারকুটে ব্যাটার। ঠিক ঠাক ব্যাটে-বলে হলে দল জিতবে। না হলে নয়। তাই-ই হল। হর্ষলের একটি লাফিয়ে ওঠা বলে চালিয়ে খেলতে গেলেন। ডিপ ফাইন লেগে বেশ খানিকটা দৌড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরলেন শার্দূল ঠাকুর।
এর পর বল হাতে শুরু বেঙ্কটেশের দাপট। প্রথমে পোলার্ডকে, তার পরে জেসন হোল্ডারকে ফেরালেন কেকেআর-এর ক্রিকেটার। কেন কেকেআর তাঁকে এ বার ধরে রেখেছে, সেটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। দুই মারকুটে ব্যাটারকে ফিরিয়ে দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন। তখনও পুরান বাকি ছিলেন। অর্ধশতরানও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শার্দূলের বলে ঈশানের দুরন্ত ক্যাচে থেমে গেল পুরানের দৌড়ও।