দাপট: পিটারসেনকে ফেরানোর পরে বুমরাকে অভিনন্দন অধিনায়ক বিরাটের। বুধবার কেপ টাউনে। ছবি রয়টার্স।
কেপ টাউনে তাঁর বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে প্রথম ইনিংসে ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং। ৪২ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে দিনের নায়ক ‘বুম বুম’ বুমরার মুখে শোনা গিয়েছে অধিনায়ক বিরাট কোহলির প্রশংসা।
বুধবার খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে বুমরা বলে যান, ‘‘চার বছর আগে এই মাঠেই বিরাটের নেতৃত্বে আমার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। ওর নেতৃত্বে খেলার আনন্দটাই আলাদা।’’ কেন এ কথা বলছেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বুমরা। বলেছেন, ‘‘বিরাট সব সময় আমাদের পাশে থেকেছে। দলের সব বোলারকে ও উদ্ধুদ্ধ করে। তরতাজা রাখে দলটাকে। ’’
চার বছর আগে কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল বুমরার। আবার সেই মাঠে ফিরে এসে টেস্ট জীবনে সপ্তম বারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে বুমরা বলেছেন, ‘‘যে মাঠে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল, সেখানে আবার খেলার অনুভূতিটাই আলাদা।’’ নিজের বোলিং নিয়ে ভারতীয় পেসারের মন্তব্য, ‘‘নিজে ভাল খেলতে পারলে দারুণ লাগে, এটা বলতেই হবে। তবে যদি সেই পারফরম্যান্স ম্যাচের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে, তা হলে তৃপ্তি অনেক বেশি হয়।’’
বুমরা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিশ্রমের ফলই এই সাফল্য। তাঁর কথায়, ‘‘পরিশ্রমের ফল ঠিক পাওয়া যায়। কখনও আমি উইকেট পাই, কখনও অন্য কেউ পায়। আমরা দল হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।’’ জোহানেসবার্গে হারের পরে বুমরার ফর্ম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তিনি বলছেন, ‘‘আমি রাগ করিনি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাইরে কী বলাবলি হচ্ছে, সে ব্যাপারে মন দিতে গেলে আমার সমস্যা হয়েছে। আমার হাতে যা আছে, সেটাই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি।’’ প্রশ্ন ওঠে, বাইরে যে সব কথা হয়, তা নিয়ে কি আদৌ মাথা ঘামায় দল? বুমরার জবাব, ‘‘আপনি প্রশ্নের সঙ্গে উত্তরটাও দিয়ে দিয়েছেন। আমরা সবাই একটা রুটিন মেনে চলি। সাফল্য সে ভাবেই আসে। মাথায় রাখতে হবে, কেউ আপনার প্রশংসা করবে, কেউ সমালোচনা।’’
দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারত এগিয়ে ৭০ রানে। হাতে আট উইকেট। ব্যাট করছেন চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় ইনিংসে কত রান তুলতে পারলে নিরাপদ থাকতে পারবেন বলে মনে হয়? বুমরার জবাব, ‘‘সে রকম কোনও জাদু সংখ্যা নেই যে আমি এখনই বলে দিতে পারলাম। আমাদের উইকেটটা ভাল করে দেখতে হবে।’’ নিউল্যান্ডসের বাইশ গজ নিয়ে বুমরার মত, ‘‘নতুন বলে এই উইকেট থেকে ফায়দা তোলা যায়। নতুন অবস্থায় সিমে পড়ে বল নড়াচড়া করে। কিন্তু বল যত পুরনো হয়, সেলাইটা যত নষ্ট হয়ে যায়, ব্যাটাররা তত সুবিধে পায়। আমাদের এখন বড় জুটি
গড়তে হবে।’’ ভারত প্রথম ইনিংসে ২২৩ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল। পুজারা মনে করেন, রানটা একটু কম হয়ে গিয়েছে। কেন তিনি বলছেন রানটা আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল? দিনের শুরুতে পুজারা বলেছিলেন, ‘‘এই পিচটা কিন্তু ব্যাটার-বোলার, দু’জনের জন্যই আদর্শ। বোলাররা যেমন এই পিচ থেকে সাহায্য পাচ্ছে, সে রকমই ব্যাটাররা যদি উইকেটে টিকে থাকে, রান করতে পারবে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকা আবার বলছে, এই সিরিজ়ে তাদের প্রধান চিন্তা হয়ে উঠেছেন ভারতের দুই ব্যাটার— পুজারা এবং কোহলি। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার কিগান পিটারসেন এ দিন খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেন, ‘‘আমাদের দ্রুত উইকেট নিতে হবে। ক্রিজ়ে এখন পুজারা-বিরাট রয়েছে। ওই দু’জন আমাদের সামনে সমস্যা সৃষ্টি করেছে শেষ
কয়েকটা ইনিংসে।’’ যোগ করেন, ‘‘বিরাটের উইকেট সবার আগে চাই।’’