আগ্রাসী: ২৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে এ ভাবে রিভার্স সুইপও মারতে দেখা গেল কার্তিককে। শুক্রবার। ছবি পিটিআই।
দুরন্ত প্রত্যাবর্তন। শুধু সিরিজ়ে ভারতেরই নয়। দীনেশ কার্তিকেরও। ওর ২৭ বলে ৫৫ রান চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া দলকে বাঁচিয়েছে। সঙ্গে দুরন্ত খেলল হার্দিক পাণ্ড্যও। ওর ৩১ বলে ৪৬ রানও এই ম্যাচে জয়ে বড় অবদান রেখেছে। তবে বিশেষ করে কার্তিকের কথা বলতে হবে। রাজকোটের পিচটা কিন্তু ব্যাটিং করার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। অসমান বাউন্স হচ্ছিল। এর মধ্যেও কার্তিক কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিং করে গিয়েছে। যার সাহায্যে এক সময় ৮১ রানে চার উইকেট চলে যাওয়ার পরেও ১৬৯-৬ রানে পৌঁছে যায় ভারত। জবাবে ১৬.৫ ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয়ে যায় ৮৭ রানে। ৮২ রানে জিতে সিরিজ় ২-২ করে ফেলল ভারত।
আসলে আইপিএল যেমন তরুণদের মঞ্চ, তেমন দীনেশ কার্তিকদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের মঞ্চও। যাদের দক্ষতায় বয়স কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। নিজেকে প্রমাণ করে আবার জাতীয় দলে ফিরে এসে এ রকম পারফর্ম করে যেতে পারে। বিশ্বকাপের আগে কার্তিকের এই ব্যাটিং কিন্তু ভারতীয় দলকে স্বস্তিতে রাখবে। কার্তিককে দেখে আমার মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কথা মনে পড়ছে। যে ভাবে ধোনি ভারতীয় দলে ফিনিশারের কাজটা নিপুণ ভাবে সামলেছে সেটাই মনে পড়িয়ে দিচ্ছে কার্তিক। ১৬ বছর জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলছে কার্তিক। এই প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হাফসেঞ্চুরি পেল। এ ভাবেও ফিরে আসা যায়!
একই সঙ্গে হার্দিকের কথাও বলতে হবে। বিশ্বকাপের আগে এই ভারতীয় দলে হার্দিকের থাকাটা ভারসাম্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই শুধু নয়, হার্দিক বোলিংটাও সামলে দিতে পারবে। প্রথম দুটো ম্যাচে হারের পরে অনেকে ঋষভ পন্থের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আমার কিন্তু ওর অধিনায়কত্ব নিয়ে কিছু বলার নেই। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ঋষভ কিন্তু অধিনায়কের দায়িত্ব দারুণ ভাবে সামলেছে। ঋষভের অধিনায়কত্বের থেকেও আমার কাছে বেশি চিন্তার ওর ফর্ম। এই ম্যাচেও কিন্তু ও রান পেল না (২৩ বলে ১৭)। বিশ্বকাপের আগে এটা নিশ্চিত ভাবে দলকেও ভাবাবে।
জেতার জন্য ১৭০ রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং স্বস্তিতে ছিল না। আবেশ খানকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। ১৮ রানে চার উইকেট তুলে নিয়ে ও-ই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছে। ছেলেটা গত ৩-৪ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএলে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে। এখন জাতীয় দলের হয়েও নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিচ্ছে। অনেকে উমরান মালিককে কেন খেলানো হচ্ছে না সেই প্রশ্ন তুলছেন। আমার কিন্তু মনে হয়, উমরানকে একটু সময় দিতে হবে। ওকে জাতীয় দলে ডাকার উদ্দেশ্যই হয়তো এই পরিবেশটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারাটা। যে অভিজ্ঞতা ওকে ভবিষ্যতে অনেক সাহায্য করবে। তাই ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের ওকে এই ম্যাচেও না খেলানোটা সমর্থন করি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।