বিরাট কোহলী। ছবি ইনস্টাগ্রাম
বছরের শুরুটা হয়েছিল ব্রিসবেনের গাব্বায় ঐতিহাসিক টেস্ট জিতে। বছরের শেষ হল সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুরমুশ করে। একই বছরে জোড়া দুর্গের পতন হল ভারতের হাতে।
বলা হত, ব্রিসবেনে নাকি অস্ট্রেলিয়া অপরাজেয়। কথাটা যে নিছক ফেলনা নয়, সেটার প্রমাণ ছিল পরিসংখ্যানেই। ভারতের কাছে হারার আগে ৩৩ বছর গাব্বায় হারেনি অস্ট্রেলিয়া। যে দলই খেলতে নেমেছে, তারাই পর্যুদস্ত হয়ে ফিরেছে। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ইংল্যান্ড। অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট ছিল গাব্বায়। জো রুটের ইংল্যান্ড গুঁড়িয়ে যায় ৯ উইকেটে।
কিন্তু তার কয়েক মাস আগেই অজিঙ্ক রহাণের ভারত (বিরাট কোহলী তখন ছুটি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন) সেই মাঠে জিতেছিল। অস্ট্রেলিয়ার রক্তচক্ষুকে ভয় পায়নি। বোলারদের আগ্রাসন এবং ঋষভ পন্থের দুরন্ত ইনিংসের দাপটে গাব্বায় ১৯৮৮ সালের পর হারে অস্ট্রেলিয়া। শুধু টেস্ট নয়, ভারত সিরিজও নিশ্চিত করে ফেলে গাব্বায়।
সেঞ্চুরিয়নও সে ভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুর্গ। এই মাঠে ২০১৪-র ফেব্রুয়ারির পর থেকে হারেনি তারা। টানা সাতটি ম্যাচে জিতেছে এখানে। মোট ২৭টি টেস্ট তারা খেলেছে সেঞ্চুরিয়নে। এর মধ্যে মাত্র তিনটিতে তারা হেরেছে, যার সর্বশেষটি এল ভারতের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার।
এর আগে ভারত এই মাঠে দু’টি টেস্ট খেলেছে। দু’টিতেই জঘন্য ভাবে হারতে হয়েছে। ২০১০-এ প্রথম বার খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসেই ভারত ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে জাক কালিসের দ্বিশতরান এবং হাসিম আমলা ও এবি ডিভিলিয়ার্সের শতরানে ভর করে ৬২০ তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে সচিন তেন্ডুলকরের শতরান এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ৯০-ও ভারতকে ইনিংসে হারের থেকে বাঁচাতে পারেনি।
শেষ বার ভারত এই মাঠে খেলেছে ২০১৮-এ। বিরাট কোহলী প্রথম ইনিংসে ১৫৩ করেছিলেন। তা-ও ভারত শেষ পর্যন্ত টেস্ট হারে ১৩৫ রানে।
এ বার জয়ের পিছনে ভারতের মূল কাণ্ডারি বোলাররাই। প্রথম ইনিংসে মহম্মদ শামি পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর সংগ্রহে তিন উইকেট। এ ছাড়াও যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, শার্দূল ঠাকুর প্রত্যেকেই নিজের মতো করে অবদান রেখেছেন।
এর আগে ভারত আটটি সিরিজ খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তারা প্রথম টেস্টে জিতে সিরিজ শুরু করল। এর আগে ২০০৬-০৭ সালে জোহানেসবার্গে জিতে সিরিজ শুরু করেছিল ভারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন ম্যাচের সিরিজ হেরে গিয়েছিল ১-২ ফলে। এ বার কী হবে, সময় বলবে।