হুঙ্কার: পাঁচ উইকেট বুমরার। বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরিয়নে। এপি/পিটিআই
সেঞ্চুরিয়ন জয় দিয়ে ক্রিকেট মাঠে বছরটা দারুণ ভাবে শেষ করল ভারত। যে সেঞ্চুরিয়নকে এত দিন দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্গ বলেই মানা হত।
আবার একটা দলগত প্রচেষ্টার ফলে জয় পেল ভারত। যেখানে সবাই কিছু না কিছু অবদান রেখে গিয়েছে। কে এল রাহুল এবং মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে পুরো নম্বর দিতে হবে প্রথম দিনে ভারতকে ও রকম একটা মঞ্চ তৈরি করে দেওয়ার জন্য। প্রথম দিনে উইকেটে স্পঞ্জি বাউন্স ছিল। উইকেট থেকে পেসাররা টেনিস বলের মতো বাউন্স আদায় করে নিতে পেরেছিল। সেই কঠিন সময়টা কাটিয়ে একশো রানের উপরে জুটি গড়ে রাহুল-মায়াঙ্ক। এই জুটির গুরুত্ব কতটা ছিল, তা তৃতীয় দিনে ভারতের ব্যাটিং ধসটা দেখলেই বোঝা যাবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে এর চেয়ে দুর্বল ব্যাটিং লাইন আপ আগে দেখা যায়নি। দুই ইনিংসে ওদের ছিন্নভিন্ন করতে ভয়ঙ্কর ভারতীয় পেসারদের কোনও সমস্যাই হয়নি। মহম্মদ শামি আর যশপ্রীত বুমরার চেয়ে নতুন বলে কোনও ভাল পেস জুটি কি দেখা গিয়েছে? ব্যাটারদের জন্য ওরা বিভিন্ন কোণ সৃষ্টি করে থাকে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল, ধারাবাহিক ভাবে একই লাইন-লেংথে বল করে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে ওরা। ফলে ব্যাটাররা রান করার রাস্তা বার করতে পারে না। গত এক বছরে আমরা দেখেছি, কোনও দলই ওদের বিরুদ্ধে স্বস্তিতে ব্যাট করতে পারেনি। এর পরে আবার যোগ হয়েছে মহম্মদ সিরাজ। সিংহহৃদয় এই বোলার ক্লান্তিহীন ভাবে আক্রমণ করে যায়। সিরাজ যে ভাবে শামি-বুমরার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাতে বিপক্ষের ব্যাটারদের কাজটা আরও কঠিন হয়েছে। আর অশ্বিন বুঝেছিল, এই পিচে ওর কাজটা হবে চাপ রেখে যাওয়া। সেটাই করেছে ও। ম্যাচটাও শেষ করে দিল পরপর দু’টো উইকেট তুলে নিয়ে।সেঞ্চুরিয়নে বিশাল একটা জয় পেল ভারত। এই রকম একটা বড় জয় বিপক্ষের উপরে বিরাট চাপ তৈরি করে দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকাকেও এ বার কিছু প্রশ্নের জবাব দ্রুত বার করতে হবে। মানছি, ভারতেরও কিছু প্রশ্নের জবাব পেতে হবে। সেটা হল, মাঝের সারির ব্যাটিং নিয়ে।
ভারতের মাঝের সারির ব্যাটারদের মধ্যে যে রকম দক্ষতা আছে, আর ওদের যে রকম মান, তাতে আশা করছি নতুন বছরেই বড় রান আর সেঞ্চুরি দেখতে পাব। যা গত বছর দেখা থেকে বঞ্চিত ছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
নতুন বছর শুভ হোক, শান্তির হোক সবার।