ধাক্কা: বিরাট ৫১ ও শিখর ৭৯ রান করেও প্রথম ওয়ান ডে-তে দলকে জেতাতে পারলেন না। বুধবার। ছবি— রয়টার্স।
কেপ টাউন থেকে খেলা চলে এল পার্লে। বলের রংও লাল থেকে পাল্টে হল সাদা। কিন্তু ভারতের ভাগ্য বদলাল না। প্রথম ওয়ান ডে-তে হারতে হল ৩১ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই ম্যাচটা একটা কারণে স্মরণীয় থেকে যাবে। এই ম্যাচে মুকুটহীন অবস্থায় খেলল বিরাট। ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু হল একটা নতুন অধ্যায়। তাই দু’টো ব্যাপার দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। এক, এই বিরাট কী রকম খেলে। দুই, কে এল রাহুল কেমন নেতৃত্ব দেয়। ফিল্ডিংয়ের সময় দেখলাম, ভারতের সেই আগ্রাসী মেজাজটাই উধাও। অথচ মাঠে কি না বিরাট রয়েছে! অধিনায়ক রাহুলকে বেশ নিষ্প্রাণ লেগেছে। ব্যাটারদের উপরে কোনও রকম চাপ তৈরি করতে দেখা যায়নি। বিরাট একটু চুপচাপই ছিল। যে কারণে ভারতীয় দলের মধ্যে সেই তেজিয়ান ভাবটাও খুঁজে পেলাম না।
একই সঙ্গে ভারতের কৌশল নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। বেঙ্কটেশ আয়ারকে খেলানো হল অথচ ওকে একটা ওভারও বল দেওয়া হল না। এই বেঙ্কটেশকেই তো হার্দিক পাণ্ড্যর বিকল্প অলরাউন্ডার বলে ধরা হচ্ছিল। বুধবার কিন্তু বল করার অনেক সুযোগ ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা (১৪৩ বলে ১১০) এবং র্যাসি ফান ডার ডুসেন (৯৬ বলে অপরাজিত ১২৯) মিলে যোগ করল ২০৪ রান। কোনও বোলারই ওদের উপরে ছাপ ফেলতে পারেনি। ওই সময় কি বেঙ্কটেশকে কয়েক ওভার বল দেওয়া যেত না? আর যদি বল করানোর পরিকল্পনা না থাকে, তা হলে ওর জায়গায় সূর্যকুমার যাদবকে খেলাও। সূর্য তো ভাল ছন্দেই আছে। এই রকম রণনীতি এবং পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য অধিনায়ক রাহুলের সঙ্গে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের দিকেও আঙুল তোলা যায়।
পার্লের বোলান্ড পার্কের উইকেটটা দেখে ভারতীয় পিচের কথা মনে হচ্ছিল। লো বাউন্স। ধীরে বল আসছে। ২৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ভারত একটা সময় ভাল জায়গাতেই ছিল। রাহুল দ্রুত ফিরে গেলেও খেলাটা ধরে নিয়েছিল শিখর ধওয়ন এবং বিরাট। তবে রাহুলের আউট দেখে মনে হল, চাপে আছে। না হলে অনিয়মিত স্পিনার এডেন মার্করামের সোজা বলে ব্যাট পেতে খোঁচা দেয়!
ধওয়ন (৮৪ বলে ৭৯) আবার ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরে সাবলীল ব্যাট করে গেল। বিরাটের ইনিংসে বড় রানের মশলা ছিল। রানটা অবশ্য খারাপ করল না। ৬৩ বলে ৫১। কিন্তু বিরাটের থেকে কি আমরা হাফসেঞ্চুরিতে সন্তুষ্ট হই! আউট অবশ্য চরিত্রবিরোধী শট খেলেই হল। সুইপ মারতে গিয়ে ব্যাটের উপরের দিকে লাগিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিল। যে শট ও খেলে না।
তিন উইকেট পড়ার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঝের সারির ব্যাটাররা ম্যাচটা ধরে নেয়। ঠিক উল্টো ছবি ভারতীয় ব্যাটিংয়ে। টেস্ট সিরিজ় থেকে মাঝের সারির ব্যাটারদের ফর্ম ভারতকে ডোবাচ্ছে। ওয়ান ডে-তেও তার ব্যতিক্রম হল না। ১৩৮-১ থেকে ১৯৯-৭! এর মধ্যে ঋষভ পন্থের আউটটা বড় ধাক্কা। অসাধারণ দক্ষতায় পেসার আন্দিলে ফেলুকওয়েওয়ের বলে স্টাম্প করল কুইন্টন ডি’কক। শেষ দিকে শার্দূল (অপরাজিত ৫০) দেখাল কী ভাবে খেলা উচিত ছিল।
এই মাঠে শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচ না জিতলে এই সিরিজ়ও গেল ভারতের।