ছন্দে: হাফসেঞ্চুরির পথে মায়াঙ্ক। সেঞ্চুরিয়নে। রয়টার্স
সেঞ্চুরিয়ন পার্কে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের প্রথম দিনেই ওপেনারদের দাপটে চালকের আসনে ভারত। প্রথম দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ছিল নির্দিষ্ট পরিকল্পনা। ম্যাচের শেষে যে কথা জানালেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল।
টস জিতে ব্যাট নেওয়ার পরে প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান ২৭২-৩। ১২২ রানে অপরাজিত রয়েছেন ওপেনার কে এল রাহুল। ওপেনিংয়ে তাঁর সঙ্গী মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সংগ্রহ ৬০। রান পেয়েছেন ছন্দে না থাকা অজিঙ্ক রাহানেও (অপরাজিত ৪০)। সাংবাদিক সম্মেলনে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল সহজ। যে বল উইকেটে আসছে, সেগুলো খেলতে হবে। বাইরের বল খেলা চলবে না। সেগুলো ছাড়তে হবে। আমরা এটাই নিয়ম মেনে করেছি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘প্রথম দিনের শেষে ২৭২-৩ হওয়ার নেপথ্যে কৃতিত্ব আমাদের ব্যাটিং শক্তির। পরিকল্পনা ছিল যে থিতু হয়ে গিয়েছে, সে আক্রমণ করবে। রাহুল ভাই সেটা দারুণ করেছে।’’
রবিবার তিনটি বড় রানের জুটিই ভারতকে নিয়ে গিয়েছে সুবিধাজনক জায়গায়। যে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘এক নজরে প্রথম দিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল রাহুলের শতরান আর আমাদের লম্বা জুটি তৈরি করে রান এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। রাহুল প্রথমে আমার সঙ্গে, তার পরে অধিনায়ক বিরাট (কোহলি) ভাইয়ের সঙ্গে, শেষে রাহানের সঙ্গে জুটি তৈরি করে রান এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সোমবারও সেই পরিকল্পনা নিয়েই খেলতে হবে।’’ভারতীয় দলের প্রথম দিন থেকেই বিপক্ষ বোলিংকে চাপে রাখার প্রসঙ্গে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘ম্যাচের আগের প্রস্তুতি ও মাঝের উইকেটে মহড়া কাজে লেগেছে। আপাতত আমাদের লক্ষ্য রানটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যত বেশি সম্ভব রান করে নিজেদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সোমবার প্রথম ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই এক ঘণ্টা সামলে দিতে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকার উপরে আরও চাপ বাড়ানোর চেষ্টা চলবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘শুরুর দিকে পরিবেশ আর্দ্র থাকায় কিছু বল পিছলে যাচ্ছে, সেটা আমরা দেখেছি। শুরুতে এই ব্যাপারটা সামলে দিতে পারলে বেলার দিকে পরিস্থিতি সহজ হয়ে আয়ত্তের মধ্যে চলে আসে।’’
নতুন কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের ভূমিকা সম্পর্কে মায়াঙ্ক বলেন, ‘‘কোচ বলে দিয়েছেন শৃঙ্খলার সঙ্গে খেলতে। দক্ষিণ আফ্রিকা বা অন্য দলের সঙ্গে বিদেশে খেলার সময় দর্শনীয় ক্রিকেট খেলার চেয়েও প্রয়োজন পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা। আমরা খুশি যে, প্রথম দিন থেকেই সেটা করা গিয়েছে।’’ শতরানকারী কে এল রাহুল সম্পর্কে তাঁর ওপেনিংয়ের সঙ্গী বলে যান, ‘‘নিজের খেলাকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করে রাহুল। ও জানে অফ স্টাম্প কোথায়। বল যেমন ছাড়তে জানে, তেমনই বলের লাইনে গিয়ে খেলতেও সমান দক্ষ। ওর শৃঙ্খলা এবং মনোনিবেশ নজর কাড়বেই।’’
অন্য দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির হাল ছাড়ছে না। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন লুনগি এনগিডি। তিনি বলেন, ‘‘এটা টেস্ট ক্রিকেট। একটা সেশনে কেউ জিতবে, কেউ হারবে। এই উইকেটে এখনও অনেক কিছু ঘটার বাকি আছে। প্রথম ইনিংসে ভারতকে ৩৫০-এর কম রানে আউট করলে ম্যাচ আমাদের অনুকূলে আসতেই পারে।’’
৪১তম ওভারে পর পর দু’বলে মায়াঙ্ক ও চেতেশ্বর পূজারাকে আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাময়িক চালকের আসনে এনেছিলেন এনগিডি। সে প্রসঙ্গ টেনেই এনগিডি বলে যান, ‘‘দু’বলে দু’উইকেটে ফেলে দেওয়া মানে যে কোনও মুহূর্তে ভাল কিছু ঘটতে পারে। দ্বিতীয় দিন সকালে যদি পর পর কয়েকটা উইকেট ফেলা যায়, তা হলে ভারতই কিন্তু চাপে পড়ে যাবে।’’