মার্করামকে ফেরানোর পর শামি। ছবি রয়টার্স
জোহানেসবার্গ ভারতের কাছে পয়া মাঠ হিসেবেই পরিচিত। এখনও পর্যন্ত এই মাঠে একটিও টেস্টে হারেনি ভারত। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন খুব একটা ভাল গেল না ভারতের কাছে। রান কোনওমতে ২০০ পেরোলেও দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার একটির বেশি উইকেট ফেলতে ব্যর্থ যশপ্রীত বুমরারা। দ্বিতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকা খেলতে নামবে ১৬৭ রান পিছিয়ে থেকে। হাতে ৯ উইকেট।
সোমবার দিনের শুরুতেই ভারতীয় সমর্থকদের চমক অপেক্ষা করেছিল। টস করতে দেখা গেল কেএল রাহুলকে। বিরাট কোহলী কোথায় গেলেন? রাহুল টস করতে এসে জানালেন, কোমরের হালকা চোটের কারণেই এই টেস্টে খেলতে পারবেন না কোহলী। যদিও ম্যাচের আগের দিন বা তারও আগে কোহলীর চোটের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ম্যাচের দিন সকালে চোট পেয়েছেন কিনা, সেটাও পরিষ্কার নয়। কোহলীর বদলে দলে জায়গা পেলেন হনুমা বিহারি।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত। প্রথম ঘণ্টায় কোনও উইকেট পড়েনি। কিন্তু ২৬ রানের মাথায় ফিরে গেলেন ময়াঙ্ক আগরওয়াল। ওপেনিং জুটিতে এ বার বড় রান উঠল না। তিনে নেমেছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। দক্ষিণ আফ্রিকার জোরে বোলারদের সামনে সাহসী হয়ে ব্যাটিং করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে সঙ্গ দিল না এ বারও। ৩৩ বলে ৩ রান করে ডুয়ান অলিভিয়েরের লাফিয়ে ওঠা একটি বলে ব্যাট ঠেকালেন। পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা তেম্বা বাভুমার হাতে লোপ্পা ক্যাচ জমা পড়ল। পরের বলেই আউট অজিঙ্ক রহাণে। তিনিও এই টেস্টে ছন্দে ফিরতে ব্যর্থ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ফিরে গেলেন।
সকাল থেকে রাবাডা, অলিভিয়েরের অফ স্টাম্পের বাইরে একের পর এক বল অনায়াসে ছাড়ছিলেন রাহুল, ময়াঙ্করা। কিন্তু রহাণে সেটা দেখেও শিক্ষা নিলেন না। প্রথম বলে এসেই অফ স্টাম্পের বাইরে খোঁচা দিলেন। ক্ষিপ্ত সুনীল গাওস্কর তো বলেই দিলেন, টেস্টজীবন বাঁচাতে আর হয়তো একটা ইনিংস পেতে পারেন পুজারা, রহাণে।
দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার আউট হওয়ার পর নেমেছিলেন বিহারি। সিডনিতে গত বছরের শুরুতে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করতে দেখা গেল তাঁকে। সেই অনবদ্য ডিফেন্স এবং টেকনিক। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা এক সময় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের অনবদ্য ক্যাচে ফিরতে হল তাঁকে। অর্ধশতরান করার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না রাহুলও। পুল করতে গিয়েছিলেন মার্কো জানসেনকে। ডিপ ফাইন লেগে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে তালুবন্দি করেন রাবাডা।
ভারতের রান যে ২০০ পেরোল, তার কৃতিত্ব প্রাপ্য রবিচন্দ্রন অশ্বিনেরই। শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর প্রথম থেকেই চড়াও হন। কিন্তু অর্ধশতরানের চার রান দূরে থেমে গেল তাঁর ইনিংস।
দিনের শেষে এইডেন মার্করামকে ফেরালেন মহম্মদ শামি। কিন্তু প্রথম ইনিংসে ভারতের পুঁজি এতটাই কম, যে দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা সেটা টপকে যেতেই পারে। এই পরিস্থিতি একমাত্র ভরসা ভারতের বোলাররাই। যদি দ্বিতীয় দিন তাঁরা ডিন এলগারদের চাপে ফেলতে পারেন, তা হলে সিরিজ জেতার আশা করতেই পারে ভারত।