শেষ দিকে ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার মধ্যে শেষ হলেও, দিনের শেষে শুভমনের ইনিংস দাম পেল। ছবি: পিটিআই
আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে প্রথম শতরান। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে শুধু শতরানেই থামলেন না, করে ফেললেন দ্বিশতরান। স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন শুভমন গিল। তাঁর প্রতি দল যে আস্থা দেখাচ্ছে, তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছেন তিনি। বুধবার নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ইনিংস এনে দিল ম্যাচের সেরার পুরস্কার। শেষ দিকে ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার মধ্যে শেষ হলেও, দিনের শেষে শুভমনের ইনিংস দাম পেল। ম্যাচের শেষে জানালেন, দু’শো করার কোনও পরিকল্পনা করে নামেননি। বোলারদের আক্রমণ করাই আসল উদ্দেশ্য ছিল তাঁর।
শেষ ওভারের প্রথম বলে শার্দূল ঠাকুর ছয় খাওয়ার পর হতাশ হয়ে পড়েছিলেন শুভমন। সেই শার্দূলই যখন ফেরালেন মাইকেল ব্রেসওয়েলকে, তখন শুভমনের মুখেও ফিরল হাসি। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে বললেন, “মাঠে নামার জন্যে আমি মুখিয়ে ছিলাম। যেটা করতে চেয়েছিলাম, সেটা পেরেছি। চাইছিলাম আরও আগে থেকে আক্রমণ করতে। কিন্তু এক দিকে একের পর এক উইকেট পড়ছিল। তাই সেটা সম্ভব হয়নি। বোলাররা ছন্দে থাকার সময় ওদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করাটাই ভাল। তাতে আউট হওয়া বা ডট হল হওয়ার সম্ভাবনা কমে। তাই নিয়মিত খুচরো রান নেওয়ার এবং বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করে গিয়েছি।”
শুভমনের সংযোজন, “দু’শো করার কোনও পরিকল্পনা নিয়ে নামিনি। কিন্তু ৪৬তম এবং ৪৭তম ওভারে ওই ছয়গুলো মারার সময়ে মনে হল, দু’শো হলেও হতে পারে। তার পর দু’শোর করার দিকেই মন দিই। এমন নয় যে বিরাট খুশি হয়েছি। কিন্তু যখন আপনি যে শট খেলতে চান সেটাই মারতে পারেন, তখন খুব ভাল একটা অনুভূতি হয়। আলাদা তৃপ্তি হচ্ছে।”
কিছু দিন আগেই বাংলাদেশে গিয়ে দু’শো করে এসেছেন ঈশান কিশন। তাঁর জায়গায় খেলা শুভমনও এ বার দু’শো করে ফেললেন। সেই প্রসঙ্গে শুভমনের মন্তব্য, “যে দিন ও দু’শো করে সে দিন আমিও মাঠে ছিলাম। তখনই বুঝেছি এর একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে।”
বুধবারটা ছিল শুধুই শুভমনের। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়লেই পরের কয়েকটি বলে বড় শট মেরে রানের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। ফলে উইকেট পড়লেও বড় রানের দিকে এগোচ্ছিল ভারত। শুভমনকে কিছুটা সঙ্গ দেন সূর্যকুমার যাদব ও হার্দিক পাণ্ড্য। সূর্য ৩১ ও হার্দিক ২৮ রান করেন। হার্দিকের আউট হওয়ার পিছনে রয়েছে আম্পায়ারের ভুল। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, বল উইকেটে লাগেনি। উল্টে কিউয়ি উইকেটরক্ষক টম লাথামের গ্লাভসে লেগে বেল পড়ে যায়। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। বিরক্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন হার্দিক।
শুভমন নিজের তৃতীয় শতরান পূর্ণ করেন। ১৯টি ইনিংসে তৃতীয় শতরান হল তাঁর। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। অন্য দিকে উইকেট পড়তে থাকায় রানের গতি বাড়ান তিনি। ১৫০ রান পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে একটা সময় মনে হচ্ছিল, দ্বিশতরান বুঝি আর হল না। কারণ, কয়েকটি ওভারে রানের গতি কমে গিয়েছিল। কিন্তু ৪৯তম ওভারকে নিশানা করলেন শুভমন। লকি ফার্গুসনকে পর পর তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরে ২০০ রান পূর্ণ করেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম বলে আবার ছক্কা মারেন তিনি। দ্বিতীয় বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান শুভমন।