বার বার ব্যর্থ বিরাট। —ফাইল চিত্র
ক্রিকেটের ধরন বদলে যায়, বলের রং বদলে যায়, বিরাট কোহলীর ব্যাটে রানের খরা কাটে না। ২০১৯ সালে ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান। এর পর বহু ম্যাচ হয়েছে। বিরাট খেলেছেন, বিশ্রাম নিয়েছেন, সমুদ্রের ধারে একা সময় কাটিয়েছেন, ফের মাঠে ফিরেছেন, কিন্তু রান আসেনি। এ বার কী তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে?
এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে বিরাট একটি ইনিংসে করেন ১১ রান, অন্যটিতে ২০ রান। সেই এজবাস্টনেই ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে নামলেন এবং ব্যর্থ হলেন। মাত্র এক রান করে আউট হন তিনি। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রিচার্ড গ্লিসনের বলের লাইনে না পৌঁছেই খেলতে গেলেন লং অনের উপর দিয়ে। কিন্তু ব্যাটে বল ঠিক মতো লাগেনি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দুরন্ত ক্যাচ নেন দাউইদ মালান। বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী বললেন, “টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারত যদি মনে করে উইকেট পড়লেও আক্রমণাত্মক খেলবে, তা হলে বিরাট ঠিকই খেলেছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই ও রানের বাইরে। ক্রিকেটে দলই আগে। সেখানে পরের ম্যাচে রানে না থাকা বিরাটের জায়গায় অন্য কাউকে খেলানো হতেই পারে।”
ভারতের জার্সিতে ১০২টি টেস্ট, ২৬০টি এক দিনের ম্যাচ, ৯৮টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিরাট রানে ফিরতে পারছেন না কেন? রোহিত শর্মার ছোটবেলার কোচ দীনেশ লাড মনে করেন এর পিছনে কোনও টেকনিকাল কারণ নেই। তিনি বললেন, “পুরোটাই মানসিক ব্যাপার। একটা ইনিংসে রান পেয়ে গেলেই ছন্দে ফিরে আসবে বিরাট। বার বার ব্যর্থতা সেই সঙ্গে সমালোচনার বোঝা নিয়ে মাঠে নামতে হচ্ছে। প্রতিটা ম্যাচেই চাপ রয়েছে বিরাটের উপর।” বিরাট মানেই তো ব্যাট হাতে ভারতীয় ক্রিকেট ভরসা। তিনি রান পেলে যেমন তাঁকে রাজার আসনে বসানো হয়, রান না পেলে তেমন সমালোচনাও হয়। সেই চাপ নিতে পারছেন না বিরাট? পরের ম্যাচে কি তা হলে বসিয়ে দেওয়া উচিত তাঁকে? মানতে নারাজ দীনেশ। তিনি বললেন, “বিরাটের মতো ব্যাটারকে কখনও বসানো উচিত নয়। এক বার রান পেয়ে গেলে ফের সেরা ছন্দে পাওয়া যাবে বিরাটকে। সেটা ভারতের জন্যই ভাল। আশা করব ওকে বসিয়ে দেওয়া হবে না।” অরুণ লাল বললেন, “বিরাট বড় ক্রিকেটার। কিন্তু যখন রান হচ্ছে না, তখন যে কোনও কাউকেই বসিয়ে দেওয়া হতে পারে। বিরাট বলে তাকে খেলাতেই হবে এটা হতে পারে না। এতে কোনও অসম্মানও নেই। রান না করলে তো বসতেই হবে।”
রান তাড়া করার জন্য যে বিরাটকে সেরা মনে করা হত, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাঁর ব্যাট থেকে ৭০টি শতরান এসেছে, তাঁর কী শেষের সময় শুরু হয়েছে? ৩৩ বছরের বিরাট সম্পর্কে সৌরাশিস বললেন, “এমন ভাবনা আসা খুব কঠিন না। বয়সের সঙ্গে শরীরের কথাও ভাবতে হয়। কোন ম্যাচ খেলব, কোন ম্যাচ খেলব না, সেটা এক জন ক্রিকেটারকেই বুঝতে হবে। কোনও বিশেষ ধরনের ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে যদি ব্যাটে রান আসে তা হলে সেটা করা যেতেই পারে।” অরুণ লাল বললেন, “অবসর একে বারেই এক জন ক্রিকেটারের নিজস্ব ব্যাপার। এটা নিয়ে কিছু বলা যায় না।”