প্রথম এক দিনের ম্যাচে সহজ জয় ভারতের। ছবি: টুইটার।
বুম বুম বুমরা। ওভালে যশপ্রীত বুমরার সুইংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারল না বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বুমরার পাশাপাশি বল হাতে ইংরেজদের অস্বস্তিতে রাখলেন মহম্মদ শামিও। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রথম এক দিনের ম্যাচে ১০ উইকেটে জয় পেল ভারত। মাত্র ১৮.৪ ওভারেই ভারত ১১৪ রান তুলে নিল কোনও উইকেট না হারিয়ে।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভুবনেশ্বর কুমারের সুইং নাজেহাল করেছিল জস বাটলারদের। প্রথম এক দিনের ম্যাচেই তাঁদের হাল বেহাল করল বুমরা-শামি জুটি। আদর্শ পরিবেশ পেলে তাঁরা কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন, তা মঙ্গলবার দেখিয়ে দিলেন ওভালে। ওভালের ২২ গজে ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের স্বস্তিতে দাঁড়াতেই দিলেন না তাঁরা। ঘরের মাঠে, পরিচিত পরিবেশেও ব্যাটে-বলে ঠিকমতো হল না বাটলারদের।
রোহিত শর্মা টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। মেঘলা আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে বাকি কাজটা সারলেন ভারতের বোলাররাই। মাত্র ২৫.২ ওভারেই শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইনিংস। তাঁদের চার জন ব্যাটার সাজঘরে ফিরলেন কোনও রান না করেই। মাত্র ২৬ রানেই ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। বুমরা-শামি জুটির সামনে জেসন রয়, জো রুট, বেন স্টোকস এবং লিয়াম সিভিংস্টোনদের একরকম শিক্ষানবিশ দেখাল।
ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করলেন বাটলার। ৬টি চারের সাহায্যে ৩২ বলে তাঁর ৩০ রানই আয়োজকদের ইনিংসে শিবরাত্রির সলতে। তিনি ছাড়া শেষ দিকে ডেভিড উইলি করলেন ২৬ বলে ২১ রান। এ ছাড়া ব্রিডন কার্স ১৫ এবং মঈন আলি ১৪ রান যোগ করেন। ইংল্যান্ডের আর কোনও ব্যাটারই দুই অঙ্কের রান করতে পারলেন না। ভারতের বিরুদ্ধে এক দিনের ক্রিকেটে এটাই ইংল্যান্ডের সব থেকে কম রানের ইনিংস। এর আগে ২০০৬ সালে জয়পুরে ১২৫ রানে অল আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। এত দিন পর্যন্ত সেটাই ছিল ভারতের বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন রানের ইনিংস।
মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিলেন বুমরা। ইংল্যান্ডের মাটিতে বুমরাই প্রথম ভারতীয় বোলার হিসাবে এক দিনের ক্রিকেটে ৬ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন। নজির গড়লেন শামিও। ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন বাংলার জোরে বোলার। পাশাপাশি ৮০টি এক দিনের ম্যাচ খেলে ১৫০টি উইকেট নিলেন তিনি। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তিনিই দ্রুততম। ২৬ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
ওভালের পরিবেশ এ দিন ব্যাট করার জন্য অনুকূল ছিল না। ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের পরিণতি দেখেই সতর্ক হয়ে যান রোহিতরা। তাই মাত্র ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেও শিখর ধবনকে নিয়ে সাবধানে শুরু করলেন রোহিত। মারার বল পেলে তবেই মেরেছেন। ভাল বলকে যোগ্য সম্মান দেখিয়েছেন। ফলে উইলি, রিসি টোপলেদের বোলিংয়ের সামনে তেমন অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি তাঁদের।
ভারতের দুই ওপেনারের মধ্যে বেশি আগ্রাসী ছিলেন অধিনায়কই। বেশ কিছু দিন ধরে রান না পাওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছিল রোহিতের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম এক দিনের ম্যাচে তাঁর ইনিংস আপাতত সমালোচকদের মুখ বন্ধ করাতে পারে। পাঁচ মাস পর ভারতীয় দলে ফেরা ধবন ছিলেন কিছুটা সংযত। তিনি মূলত উইকেটের একটি প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করলেন। দুই ওপেনার ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন। রোহিত ৭৬ রান এবং ধবন ৩১ রানে অপরাজিত থাকলেন শেষ পর্যন্ত। মাত্র ১৮.৪ ওভারেই ভারতকে জয় এনে দিল ওপেনিং জুটি। ভারত অধিনায়ক ৫৮ বলে ৭৬ রানের ইনিংসটি সাজালেন ৭টি চার এবং ৫টি ছয় দিয়ে। ধবনের ব্যাট থেকে এল ৪টি চার।
ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে উইলি এবং টপলে শুরুতে কিছুটা সমীহ করার মতো বোলিং করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রোহিত বা ধবনকে তেমন সমস্যায় ফেলতে পারেননি কেউই। পরের দিকে ওভারটন এবং কার্সকে বল হাতে থিতু হওয়ার সুযোগই দিলেন না রোহিতরা। প্রত্যাশা মতোই সহজ জয় পেয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। দু’দলের পরের ম্যাচ বৃহস্পতিবার।