নজরে: পাকিস্তানের অন্যতম অস্ত্র শাহিন আফ্রিদি। ফাইল চিত্র
আবার সেই ম্যাচ। বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত দ্বৈরথ। ভারত বনাম পাকিস্তান।
তবে আজ, রবিবার সবার চোখ নিশ্চয়ই আকাশের দিকে থাকবে। মেলবোর্নে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। মেলবোর্নের বৃষ্টি মাঝে মাঝেই কিছু সময় হয়ে তার পরে থেমে যায়। আবার কখনও কখনও অনেক ক্ষণ ধরে চলে। ১৯৮৫-’৮৬ মরসুমে যার মূল্য চোকাতে হয়েছিল ভারতীয় দলকে। চা বিরতির পরে টেস্ট ম্যাচের শেষ দিন বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যায়। ওই সময় জিততে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৬০ রান মতো। হাতে সাত উইকেট। এর আগে অবশ্য আম্পায়ারও তার ভূমিকা পালন করেছিল। স্লিপে ক্যাচ দেওয়ার পরেও অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যাটসম্যানকে আউট দেওয়া হয়নি। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসটা একটু বেশি সময় ধরে চলে।
যাই হোক, বর্তমানের কথায় ফিরে আসি। এখন তো নিরপেক্ষ আম্পায়ার এবং ডিআরএস পদ্ধতি চালু হওয়ার কারণে ভুলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাসম্ভব হয়েছে।
বছর খানেক আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে বড় জয় পাওয়ার পরে এই ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী থাকবে পাকিস্তান। পাশাপাশি ওই জয়টা কিন্তু পাকিস্তানের উপরে চাপও বাড়িয়ে রাখবে। কারণ, এখন সবাই আশা করবে, ভারতকে হারাতে পারবে বাবর আজ়মের দল।
ভারতের উপরে আবার জয়ের ধারাটা বজায় রাখার কোনও চাপ নেই। যেটা বোঝা যাচ্ছে, ঐচ্ছিক অনুশীলনে বেশির ভাগ ক্রিকেটারকে আসতে না দেখে। ঐচ্ছিক অনুশীলনের এই ব্যাপারটা চালু হয়েছিল বছর কুড়ি আগে। যখন টানা খেলা চলছে, তখন এই ধরনের ঐচ্ছিক অনুশীলনের ব্যাপারটা বোঝা যায়। ক্লান্ত শরীর আর মনকে বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজন আছে। কিন্তু যেখানে বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকটা দিন খেলাই হয়নি, সেখানে কেন ক্রিকেটারেরা নেট থেকে নিজেদের দূরে রাখবে, এটা বোঝা কঠিন। তা-ও যেখানে প্রতিযোগিতা শুরুই হয়নি।
আশা করব, শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচেই নয়, বাকি চারটে ম্যাচেও সমান তীব্রতার সঙ্গে ঝাঁপাতে পারবে ভারতীয় দল। কারণ, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে বিপক্ষের একটা ভাল ওভারই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।
ভারতের একটা চিন্তা হতে পারে, প্রথম এগারো কী হবে, তা নিয়ে। ওদের একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। ম্যাচটা ২০ ওভারের শুরু হলেও কিন্তু বৃষ্টির জন্য ওভার সংখ্যা কমে যেতে পারে। এই রকম পরিস্থিতিতে কি দু’জন স্পিনার নিয়ে খেলা উচিত? আর খেললে কোন দুই স্পিনার? অস্ট্রেলিয়ার বড় মাঠে দেখা গিয়েছে, স্পিনারদের মারতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়ছে। ভারত কি মহম্মদ শামিকে খেলাবে? ঋষভ পন্থের ভাগ্যেই বা কী আছে? তবে ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা কম। কারণ বড় নামেরা সবাই ভাল ছন্দে আছে। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদিকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ওকে দেখে মনে হয়েছে, পুরো ফিট হয়ে গিয়েছে। বল সুইং করাতে পারছে। পিচে পড়ে দ্রুতগতিতে যাচ্ছে আফ্রিদির ডেলিভারি।
পাকিস্তান জানে, ওদের ব্যাটিংটা নির্ভর করে আছে দুই ওপেনারের উপরে— বাবর আজ়ম এবং মহম্মদ রিজ়ওয়ান। ওদের মাঝের সারির ব্যাটসম্যানরা সে রকম ছন্দে নেই। তাই চাপে পড়ে যেতে পারে। টস জেতা অধিনায়ক আবহাওয়ার অবস্থা দেখে নিজের পছন্দ মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
সব কিছু তৈরি। এ বার যদি বৃষ্টি মেলবোর্ন থেকে দূরে থাকে, তা হলে আমরা আরও একবার দেখতে পাব, কেন এই ম্যাচ প্রতিযোগিতার সবচেয়ে আলোচিত দ্বৈরথ। (টিসিএম)