শ্রেয়সকে আউট করে প্রোটিয়া বোলারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।
চা-বিরতির পর একটা সময় ভারতের রান ছিল ১৫৩-৪। তার পরে মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে ভারতের বাকি ৬টি উইকেট পড়ল। বুধবার কেপ টাউনে এ রকমই নাটক দেখা গেল। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দাপটে শেষ কয়েক মিনিটে যে ভাবে এতগুলি উইকেট পড়ল তাতে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে গুটিয়ে গেল ভারতের ইনিংস। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল রোহিতদের ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম ইনিংসটা খারাপ শুরু হয়নি। যশস্বী জয়সওয়াল আবার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত শর্মা এবং শুভমন গিল খেলাটা ধরে নেন। রোহিত শুরু করেছিলেন আগ্রাসী ভঙ্গিতে। দেখে মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপের রোহিত ফিরে এসেছেন, যিনি প্রথম বল থেকে আগ্রাসন করতে শুরু করেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের কোনও মতেই মাথার উপরে উঠতে দেননি ভারতের অধিনায়ক।
কিন্তু রোহিতের ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অর্ধশতরানের কাছাকাছি এসে আরও এক বার ফিরে যান তিনি। নান্দ্রে বার্গার আসতেই তাঁর বলে মার্কো জানসেনের হাতে ক্যাচ দেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে শুভমনের জুটি জমে উঠবে উঠবে করছিল। কিন্তু শুভমনও নিজের ইনিংস বেশি দূর টানতে পারলেন না। বার্গারের বলে একই ভাবে জানসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন শুভমন।
তার পরের ওভারেই আউট শ্রেয়স। ঘাতক সেই বার্গার। উইকেটকিপার কাইল ভেরেনের হাতে ক্যাচ দেন শ্রেয়স। খাতাই খুলতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ত্রাতার ভূমিকায় নামতে হল রাহুলকে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোরে বোলারদের সামলে কোহলির সঙ্গে জুটি বেধে বেশ খেলছিলেন। কিন্তু চা-বিরতির কিছু ক্ষণ পরে যে কী এমন হল তা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না।
ধ্বংসের শুরুটা হল ৩৪তম ওভার থেকে। লুনগি এনগিডির প্রথম বলেই আউট হলেন রাহুল (৮)। এর পর ভারতীয় ব্যাটারদের স্রেফ আসা-যাওয়ার পালা। একই ওভারে কোনও রান না করে ফিরে গেলেন রবীন্দ্র জাডেজা এবং যশপ্রীত বুমরা। ১৫৩-৪ থেকে ১৫৩-৭ হয়ে গেল ভারত।
পরের ওভারে বাকি কাজটা সেরে দিলেন কাগিসো রাবাডা। দ্বিতীয় বলে ফেরালেন কোহলিকে। চতুর্থ বলে রান আউট সিরাজ। পঞ্চম বলে আউট প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ১১ বলে ৬টি উইকেট হারাল ভারত।
তার আগে, টেস্টের প্রথম দিনে ৬ উইকেট তুলে নেন মহম্মদ সিরাজ। এই নিয়ে তিন বার টেস্টে এক ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট তুলে নিলেন তিনি। দিনের শুরু থেকেই উইকেট নেয় ভারত। এডেন মার্করামকে ফিরিয়ে শুরুটা করেছিলেন সিরাজই। এর পর ডিন এলগার, টোনি ডি জর্জি, ডেভিড বেডিংহ্যাম, কাইল ভেরেইন এবং মার্কো জানসেনকে আউট করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে সিরাজ ৯ ওভারে ১৫ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট।
সিরাজ ছাড়াও উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা এবং মুকেশ কুমার। দু'টি করে উইকেট নেন তাঁরা। শার্দূল ঠাকুরকে বসিয়ে এই ম্যাচে মুকেশকে দলে নেয় ভারত। সেই ম্যাচে কোনও রান না দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন বাংলার পেসার।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সব থেকে বেশি রান উইকেটরক্ষক ভেরেনের। ১৫ রান করেন তিনি। ভেরেন এবং বেডিংহ্যাম ছাড়া আর কোনও ব্যাটার দু'অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেননি। শূন্য রানে আউট হন একমাত্র জানসেন।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৫৫ রান আউট হওয়ায় বেশ সুবিধা হল ভারতের। প্রথম টেস্টে ভারত হেরেছিল। দ্বিতীয় টেস্টে শুরুটা ভাল করেছে তারা। সেই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেওয়াই লক্ষ্য ভারতের।