শেষ দিকে নেমে ঝোড়ো ইনিংস খেললেন রিচা ঘোষ। —ফাইল চিত্র
খারাপ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের জেরে ম্যাচ আর একটু হলেই হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। রান তাড়া করতে নেমে অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর আউট হয়ে গেলে আরও চাপে পড়ে যায় ভারত। মনে হচ্ছিল, হেরেই শুরু করতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু সেটা হতে দিলেন না রিচা ঘোষ ও শেফালি বর্মা। তাঁদের জুটিতে মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারাল ভারত।
দুরন্ত ইনিংস খেললেন রিচা। শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক বড় শট খেললেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে কেন তিনি ভারতের অন্যতম ভরসার জায়গা তা আরও এক বার দেখালেন শিলিগুড়ির মেয়ে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন জেমাইমা। চাপের ম্যাচে অর্ধশতরান করলেন তিনি।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বিসমা। শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার জাভেরিয়া খান আউট হন। উইকেট নেন দীপ্তি শর্মা। রান পাননি অপর ওপেনার মুনিবা আলিও। শূন্য রান করে সাজঘরে যান অভিজ্ঞ নিদা দার। ৪৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের।
এক দিকে ভাল খেলছিলেন অধিনায়ক বিসমা। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন আয়েশা। দু’জনে মিলে শেষ দিকে পাকিস্তানের রানকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। রেণুকা ঠাকুরের এক ওভারে বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন আয়েশা। সেখান থেকেই খেলার গতি বদলে যায়। শেষ ৯ ওভারে ৯০ রান দেন ভারতীয় বোলাররা।
পাকিস্তানের রানের গতি বাড়ায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। ফিল্ডিংয়ে ভুল করতে থাকেন হরমনপ্রীতরা। আয়েশার ক্যাচ ফস্কান রাধা। ৪৫ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন বিসমা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪৯ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। বিসমা ৬৮ ও আয়েশা ৪৩ রান করেন অপরাজিত থাকেন।
আঙুলের চোটে স্মৃতি মন্ধানা দলে না থাকলেও ভারতকে শুরুটা ভাল দেন শেফালি ও যস্তিকা। প্রথম বল থেকে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলা শুরু করেন তাঁরা। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুলছিলেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ১৭ রান করে আউট হন যস্তিকা।
অন্য দিকে শেফালি নিজের পরিচিত ঢঙে খেলছিলেন। সুযোগ পেলেই বড় শট মারার চেষ্টা করছিলেন ভারতের ডান হাতি ওপেনার। মাঝে কিছু ওভারে রান কম ওঠায় রানের গতি বাড়াতে যান শেফালি। কিন্তু তাতে সফল হননি তিনি। ৩৩ রান করে আউট হন শেফালি। ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাউন্ডারিতে তাঁর ভাল ক্যাচ ধরেন আমিন।
শেফালি আউট হওয়ায় কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। হরমনপ্রীত প্রথম থেকেই বড় শট মারার চেষ্টা করছিলেন। মাঠে নামার পরে রানের গতি বাড়ান তিনি। বড় শট খেলা শুরু করেন জেমাইমাও। কিন্তু ১৬ রানের মাথায় হরমন আউট হয়ে গেলে চাপে পড়ে যায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তুললেন জেমাইমা-রিচা জুটি। জেমাইমার অনেক ক্ষণ ধরে খেললেও রিচা সাজঘর থেকে তৈরি হয়ে এসেছিলেন। পাকিস্তানের বোলারদের নিয়ে শেষ দিকে ছেলেখেলা করলেন দুই ব্যাটার। এক দিকে রিচা অনায়াসে বাউন্ডারি পার করাচ্ছিলেন, অন্য দিকে জেমাইমা ফিল্ডারদের ফাঁক ফোকর দেখে রান করছিলেন। চাপের মধ্যে শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ে ভুল করে পাকিস্তানও। শেষ পর্যন্ত এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
ভারতের জয়সূচক রান করেন জেমাইমা। তার সঙ্গেই অর্ধশতরান পূর্ণ হয় তাঁর। ৩৮ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্য দিকে ২০ বলে ৩১ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রিচা।