Women's T20 World Cup

জেতা ম্যাচ হারিয়ে দিল ভাগ্য! হরমনপ্রীতের ৫২-র পরেও ৫ রানে হেরে বিশ্বকাপে বিদায় ভারতের

স্বপ্নভঙ্গ হল ভারতের। আরও এক বার বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতে ফিরতে হল হরমনপ্রীত কৌরদের। দুরন্ত অর্ধশতরান করেও ভাগ্যের দোষে আউট হলেন হরমনপ্রীত। জয়ের কাছে গিয়েও জিততে পারল না ভারত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৪২
Share:

অধিনায়কের ইনিংস খেললেন হরমনপ্রীত কৌর। অর্ধশতরান করলেন। কিন্তু তাও দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। —ফাইল চিত্র

বিজয়ীর শিরোপা ওঠা উচিত ছিল হরমনপ্রীত কৌরের মাথায়। তার বদলে জুটল কাঁটার মুকুট। খলনায়ক ভাগ্য। জেমাইমা রদ্রিগেজ়ের সঙ্গে তাঁর জুটি দলকে জয়ের আশা দেখিয়েছিল। জেমাইমা আউট হলেও অর্ধশতরান করে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই মাটিতে আটকে গেল তাঁর ব্যাট। কর্ণের রথের চাকা মেদিনী গ্রাস করায় যেমন প্রাণ ত্যাগ করতে হয়েছিল তাঁকে, তেমনই হরমনের ব্যাট মাটিতে আটকে যাওয়ায় রান আউট হলেন তিনি। আর সেই সঙ্গে শেষ হয়ে গেল ভারতের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন। বাকিরা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না। ৫ রানে হারল ভারত। হরমনপ্রীতদের হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল মেগ ল্যানিংয়ের অস্ট্রেলিয়া।

Advertisement

দিনের শুরুটা ভারতের জন্য খারাপ হয়েছিল। সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ টস হেরে যান ভারত অধিনায়ক হরমনপ্রীত। বল করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং ভারতীয় বোলারদের। যে রেণুকা ঠাকুরের উপর দায়িত্ব ছিল পাওয়ার প্লে-তে ভারতকে ভাল শুরু দেওয়ার সেই রেণুকা প্রথম বলটাই ফুলটস করলেন। অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ইয়ান হিলি ও বেথ মুনি সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন। পাওয়ার প্লে-তে কোনও উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া।

৫২ রানের মাথায় অস্ট্রেলিাকে প্রথম ধাক্কা দেন রাধা যাদব। ২৫ রানের মাথায় অ্যালিসা হিলিকে আউট করেন তিনি। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ভাল স্টাম্প করেন বাংলার রিচা ঘোষ। কিন্তু তার পরেই পর পর দু’ওভারে দু’টি ক্যাচ ফস্কায় ভারত। প্রথমে ১ রানের ম্যাথায় ল্যানিংয়ের ক্যাচ ফস্কান রিচা। পরের ওভারে ৩২ রানের মাথায় বেথ মুনির ক্যাচ ফস্কান রাধা। তার খেসারত দিতে হয় ভারতকে।

Advertisement

অর্ধশতরান করেন মুনি। ৫৪ রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন শিখা পাণ্ডে। দুই ওপেনার ফেরার পরে রানের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। ১৪ ওভারে ৯৯ রান হয়। দেখে মনে হচ্ছিল, ১৫০-র মধ্যে আটকে রাখা যাবে অস্ট্রেলিয়াকে।

কিন্তু শেষ ৬ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার মতো খেলল অস্ট্রেলিয়া। প্রতি ওভারে বড় শট মারতে থাকেন ল্যানিং ও অ্যাশলি গার্ডনার। ল্যানিংয়ের একটি স্টাম্প ফস্কান রিচা। ফিল্ডিংয়েও ভুল করতে থাকে ভারত। ফলে দ্রুত রান ওঠে। শেষ ওভারে রেণুকা দেন ১৮ রান। ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।

জবাবে ভারতীয় ইনিংসের শুরুটা খুব খারাপ হয়। মাত্র ৪ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় তারা। প্রথমে মেগান শুটের বলে এলবিডব্লিউ হন শেফালি বর্মা। ৯ রান করেন তিনি। পরের ওভারেই স্মৃতি মন্ধানাকে ২ রানের মাথায় সাজঘরে পাঠান গার্ডনার। ৪ রান করে রান আউট হয়ে যান যস্তিকা ভাটিয়া।

দেখে মনে হচ্ছিল, লজ্জার হার হবে ভারতের। কিন্তু সেখান থেকে অধিনায়ক হরমনপ্রীতের সঙ্গে জুটি বাঁঝেন জেমাইমা। দু’জনে প্রতিআক্রমণ শুরু করেন। ভারতীয় ব্যাটারদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কিছুটা অবাক হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়াও। প্রতি ওভারে বড় শট মারছিলেন ভারতের দুই ব্যাটার। জরুরি রানরেট সাধ্যের মধ্যেই ছিল। ৫০ রানের জুটি বাঁধেন তাঁরা। শেষ ১০ ওভারে ভারতের জিততে দরকার ছিল ৮০ রান। ক্রিজে ছিলেন হরমন-জেমাইমা। ঠিক যখন মনে হচ্ছিল, এই জুটি ভারতকে জয়ে নিয়ে যাবে ঠিক তখনই ছন্দপতন। ২৪ বলে ৪৩ রান করে ডার্সি ব্রাউনের বাউন্সারে আউট হলেন জেমাইমা। যে ২৪টি বল তিনি খেলেছেন তার মধ্যে ২২টি বলে রান নিয়েছেন।

জেমাইমা আউট হওয়ার পরে হরমনের সঙ্গে মিলে দলের রানকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল রিচার কাঁধে। সেটা খুব ভাল ভাবে করছিলেন তিনি। সময় যত গড়াল তত ম্যাচের দখল নিজেদের হাতে নিচ্ছিল ভারত। মাত্র ৩২ বলে নিজের অর্ধশতরান করলেন হরমন। অধিনায়কের ইনিংস খেললেন তিনি। অথচ ম্যাচের আগের দিন তাঁর খেলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। তিনি শুধু ভাল খেললেন না, দলকে জয়ের কাছে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন।

৫২ রানের মাথায় রান আউট হলেন হরমনপ্রীত। ভাগ্য সঙ্গ দিল না তাঁর। দ্বিতীয় রান পূর্ণ করার সময় তাঁর ব্যাট ক্রিজে আটকে যায়। সাজঘরে ফেরার সময় রাগে ব্যাট ছুড়ে ফেলেন ভারত অধিনায়ক। হারতে থাকা ম্যাচ জেতার একটা সুযোগ পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৪ রান করে আউট হন রিচা। দীপ্তি শর্মা ২০ রানে অপরাজিত থাকলেও দলকে জেতাতে পারেননি। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় ভারতকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement