কড়া শাস্তি হল ব্রেন্ডন টেলরের। ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে তাঁকে সাড়ে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত করল আইসিসি। জিম্বাবোয়ের এই ক্রিকেটার আইসিসি-র আচরণবিধির মোট চারটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন।
কিছু দিন আগেই এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার স্বীকার করেছিলেন, তিনি এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। পাশাপাশি এটিও জানিয়েছিলেন, তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে তঞ্চকতা করেননি।
কিন্তু আইসিসি-র তদন্তে টেলর দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। আইসিসি জানিয়েছে, টেলর অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন এবং শাস্তি মেনে নিয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি টেলর টুইটারে লিখেছিলেন, ‘গত দু’ বছর ধরে একটা বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি। পরিস্থিতি আমাকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়েছে এবং মানসিক ভাবে অত্যন্ত প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি আমি গোটা ব্যাপারটা বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারকে জানাই এবং তাদের ভালবাসা ও সমর্থনে আজ সবাইকে এই ঘটনাটা জানাতে চাই।’
ব্রেন্ডন নির্বাসিত।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে টেলর লিখেছিলেন, ‘২০১৯-এর অক্টোবরের শেষের দিকে ভারতের এক ব্যবসায়ী আমাকে স্পনসরশিপ এবং জিম্বাবোয়েতে চালু হতে চলা একটি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার ব্যাপারে কথা বলতে সে দেশে যেতে বলেন। আমাকে মোটা টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়। একটু ভীত ছিলাম। কিন্তু গত ছ’ মাস ধরে জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট আমাদের একটাও টাকা না দেওয়ায় এটাও মাথায় আসছিল যে, আদৌ জিম্বাবোয়ে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে পারবে কি না।’
এর পর তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি ভারতে যাই। ওদের সঙ্গে আলোচনা হয় এবং ফিরে আসার আগে শেষ রাতে হোটেলে আমার জন্য ওই ব্যবসায়ী এবং তাঁর সহকর্মীরা একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন। মদ্যপানের পর ওঁরা সরাসরি আমাকে কোকেন নেওয়ার প্রস্তাব দেন এবং নিজেরাও কোকেন নিতে থাকেন। আমি বোকার মতো কোকেন নিয়ে ফেলেছিলাম। অন্তত লক্ষ বার এই ঘটনাটা নিয়ে ভেবেছি এবং কী ভাবে আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছি।’
টেলরের দাবি ছিল, তাঁর কোকেন নেওয়ার ছবি তুলে রাখা হয় এবং ব্ল্যাকমেল করে ম্যাচ গড়াপেটায় যুক্ত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তবে টেলর এটাও জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও দিন ম্যাচ গড়াপেটা করেননি এবং ঘটনার কিছু দিন পরেই আইসিসি-কে গোটা ব্যাপারটি জানিয়েছিলেন। টেলরের এই দাবি ধোপে টেকেনি। আইসিসি-কে দেরি করে জানানোর অপরাধে তাঁকে নির্বাসনের শাস্তি দিয়েছে আইসিসি।
টেলর বলেছিলেন, ‘আমি প্রতারক নই। ক্রিকেট ভালবাসি। তাই আইসিসি-কে ঘটনার কথা জানানোর পর আমি বহু সাক্ষাৎকার দিয়েছি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। কারণ আমি সৎ এবং স্বচ্ছ ছিলাম এবং ওদের তদন্তে সব রকম সাহায্য করতে তৈরি ছিলাম।’