ইডেনের বাইরে ভিড় সমর্থকদের। ছবি: পিটিআই
বিশ্বকাপের শুরু থেকে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই দেখা যাচ্ছিল, মাঠের বেশ কিছু আসন ফাঁকা থাকছে। ভারত বাদে অন্য দলের খেলায় তা আরও বেশি দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু রবিবাসরীয় ইডেন সব কিছু ছাপিয়ে গেল। টসের আগেই ভরে গেল মাঠ। সেটা যে হতে চলেছে তা বুঝিয়ে দিয়েছে ম্যাচের আগের কয়েক ঘণ্টা।
রবিবার বেলা গড়াতেই মেট্রোতে বেড়েছে ভিড়। অন্য দিন ছুটির দিনে একটু ফাঁকা আসে মেট্রো। কিন্তু রবিবার দাঁড়ানোর জন্যও কসরত করতে হচ্ছিল। চারদিকে শুধুই নীল জার্সি। বেশির ভাগই ভারতের নতুন জার্সি পরেছেন। কেউ কেউ অবশ্য পুরনো জার্সি পরেও এসেছেন। আর যাঁরা জার্সি পাননি তাঁরা নীল রঙের জামা পরে নিয়েছেন। দক্ষিণেশ্বর থেকে চাঁদনি চক পর্যন্ত সময় লাগে মেরেকেটে ৩০ মিনিট। সেই রাস্তা আসতে সময় লেগে গেল প্রায় ৪৫ মিনিট। প্রতিটি স্টেশনে ভিড়ের চাপে মেট্রোর দরজা বন্ধ করতে সময় লাগছে। বাঁশি বাজিয়েই চলেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। একটা সময়ে তো প্রতিটা কামরায় নিরাপত্তাকর্মীরা উঠে পড়লেন। বেশির ভাগ ভিড়টা নামল এসপ্ল্যানেডে। কিছুটা আবার তার আগের স্টেশন চাঁদনি চকেও। সেখান থেকেই দল বেঁধে হাঁটা লাগালেন তাঁরা। গন্তব্য ইডেন।
ম্যাচের দিন বাইকেও ভিড়। তবে বেশির ভাগ বাইকচালক বা আরোহী কারও মাথায় হেলমেট নেই। মাঠের বাইরে বাইক রাখার জায়গা থাকলেও হেলমেট রাখার নেই। আর সেই হেলমেট সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ঢুকতেও পারবেন না। সেই কারণেই হেলমেট নেই। তবে ট্রাফিক পুলিশও তাঁদের ধরলেন না। খেলার দিনে হয়তো সবেতেই ছাড়।
মেট্রোর মতো ভিড় দেখা গিয়েছে বাসেও। ধর্মতলাগামী সব বাসেই ভিড় করেছেন সমর্থকেরা। প্রত্যেকেরই আশা, আগে মাঠে ঢুকতে হবে। মেট্রো বা বাসের বাইরে দেখা গিয়েছে, হেঁটেই অনেকে মাঠের দিকে যাচ্ছেন। চাঁদনি চক বা ধর্মতলা তো বটেই, সেই মৌলালি থেকেই অনেকে হাঁটছেন মাঠের উদ্দেশে। তাঁরা বেশির ভাগই লোকাল ট্রেনে শিয়ালদহে নেমে তার পর দল বেঁধে মাঠের দিকে যাচ্ছেন। হাওড় স্টেশনে নেমেও অনেকে হেঁটেই মাঠের দিকে গিয়েছেন।
ইডেনে ম্যাচের কয়েক দিন আগে থেকেই কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। টিকিট না পেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। বাংলার ক্রিকেট সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে থানাতেও অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু ম্যাচের দিন কলকাতা দেখাল উন্মাদনা। যে ভাবে টসের আগেই ইডেন কানায় কানায় ভরে গেল তাতে বোঝা যাচ্ছে, খেলা নিয়ে শহরের উন্মাদনা একেবারেই কমেনি। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ভারতের একটি ম্যাচই পেয়েছে ইডেন। সেমিফাইনালে ভারত-পাকিস্তান না হলে এ বার রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের খেলা এক বারই দেখা যাবে। সেই ক্রিকেটের স্বাদ চেটেপুটে নিতে চাইছেন শহরবাসী। রবিবার সেটাই দেখা গেল।