কেএল রাহুল। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশ ম্যাচে মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যাচ নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন কেএল রাহুল। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর ক্যাচ গোটা বিশ্বের প্রশংসা কেড়ে নিয়েছে। তবে পরে রবীন্দ্র জাডেজা তার থেকেও একটি ভাল ক্যাচ নিয়ে ভারতের সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার পান ঠিকই, কিন্তু রাহুলের ক্যাচ নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। তবে ঘনিষ্ঠেরা জানেন রাহুলের এই ক্যাচের পিছনে কতটা অধ্যবসায় রয়েছে।
ছোটবেলায় একটি ক্রিকেট ক্যাম্পে হাজির হয়ে নিজেকে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন রাহুল। তখন দারুণ কিপিং করতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে ব্যাটিং তাঁর উইকেটকিপিং দক্ষতাকে ছাপিয়ে যায়। একটা সময় কিছু দিনের জন্যে কিপিং ছেড়েও দেন। বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে রাহুলের উইকেটকিপিং সমালোচিত হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে নিজেকে শুধরে এতটাই নিখুঁত করেছেন রাহুল, যা তাঁকে আবার শিরোনামে এনে দিয়েছে।
রাহুলের মূলত দু’টি দুর্বলতা ছিল। দুই পাশে নড়াচড়া করার সময় তাঁর হাত অনেকটা নীচে থাকত। অনিয়মিত কিপারদের মতোই হাত অনেকটা তুলে নড়াচড়া করতেন। এ ছাড়া, রানের সময় স্টাম্প পর্যন্ত দৌড়ে আসার ক্ষেত্রে তাঁর দুর্বলতা ছিল। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে একটি রান আউট মিস্ করেছিলেন। অনেকগুলি থ্রো ধরতে পারেননি। তাঁকে নিয়ে প্রচুর মিম্ পর্যন্ত তৈরি হয়েছে।
সেই সিরিজ়ের পরেই রাহুলকে নিয়ে পড়েন ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ। সামনে একটি বিরাট টায়ার রেখেছিলেন, যেন সেটি এক জন ব্যাটার। দু’টি ছোট ছোট স্টাম্প পোঁতা হয়েছিল টায়ারের ডান দিকে। তার উপর আড়াআড়ি রাখা ছিল একটি ব্যাট। দিলীপ বল ছুড়তেন, সেটি টায়ারের লেগ সাইড দিয়ে স্পিন করত। পিছনে থাকা রাহুল ঝাঁপিয়ে সেই বল ধরতেন। কখনও-সখনও বল ব্যাটে লাগত। সে ক্ষেত্রে রাহুলকে বাড়তি পরিশ্রম করে বল ধরতে হত। সেই অনুশীলনের সময়ে মাঝেমাঝেই দিলীপ এসে দেখিয়ে দিতেন কী ভাবে বল ধরতে হবে। তাঁকে বলতে ঝাঁপানোর সময় হাত নীচে রাখতে হবে।
উইকেটকিপিংয়ের সময় সাধারণত কিপারদের হাতের দিকে অনেক নজর থাকে। কিন্তু রাহুলের পায়ের নড়াচড়ার দিকেও আলাদা করে নজর দিয়েছিলেন দিলীপ। মেহেদির আউটের ক্ষেত্রে বোঝা গিয়েছে কী ভাবে রাহুল সেই বিভাগেও উন্নতি করেছেন। সম্প্রতি রাহুল সম্পর্কে দিলীপ বলেছিলেন, “ও কিন্তু গত কাল থেকে কিপিং করছে না। ছোটবেলা থেকে করছে। তাই দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। শুধু ছোটখাটো ব্যাপারগুলোয় উন্নতি করার ছিল। সেটাই করেছি।”